ভারতের আসাম এবং মিজোরাম সীমান্তে সংঘর্ষের ঘটনায় আসামের পাঁচ পুলিশ কর্মকর্তা নিহত হয়েছেন। আসামের মুখ্যমন্ত্রী হিমন্ত শর্মা এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন। ওই দুই রাজ্যের সীমান্তে দীর্ঘদিন ধরেই অস্থিরতা বিরাজ করছে। এদিকে সংঘর্ষের ঘটনায় দুই রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে আলাপ করেছেন ভারতের কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ। এনডিটিভির এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
এদিকে, আসামের রাজ্য সরকার বলছে, সংঘর্ষের ঘটনায় পাঁচ পুলিশ সদস্য নিহত হয়েছে এবং আরও অর্ধ শতাধিক মানুষ আহত হয়েছে। আসামের চাচর জেলা ও মিজোরামের কোলাসিব জেলার সীমানায় বিবাদ নিয়ে সোমবার দুপুর থেকেই পরিস্থিতি উত্তপ্ত হয়ে ওঠে।
অভিযোগ উঠেছে, সোমবার লায়লাপুর সীমানার কাছে মিজোরামের দিক থেকে সীমানা পেরিয়ে আসামের দিকে আসছিলেন পুলিশ সদস্যরা। তাদের দিকে হঠাৎ ইট, পাথর ছুড়তে শুরু করে স্থানীয় জনতা। সঙ্গে সঙ্গে সীমানায় বিশাল পুলিশ বাহিনী মোতায়েন করে আসাম সরকার। এ নিয়ে টুইট করেন দুই রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীও। দু’জনেই বিষয়টি নিয়ে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহর দৃষ্টি আকর্ষণ করেন।
মিজোরামের মুখ্যমন্ত্রী জোরামথাঙ্গা অমিত শাহকে উদ্দেশ করে লেখেন, দয়া করে বিষয়টি দেখবেন। এসব এখনই বন্ধ করা দরকার। অন্যদিকে সরকার এভাবে সরকার চালাবেন কী করে? এই প্রশ্ন তুলে অমিত শাহকে ট্যাগ করে একটি টুইট করেন হিমন্ত শর্মা। পাশাপাশি তারা দু’জনেই ঘটনার একটি ভিডিও শেয়ার করেন। সেখানে সংঘর্ষের বিষয়টি স্পষ্ট। তবে এবারই প্রথম নয়, গত জুনেও সীমানা নিয়ে বিবাদে জড়িয়েছিল ওই দুই রাজ্য। সে সময়ও উত্তপ্ত পরিস্থিতি তৈরি হয়েছিল।
এক বিবৃতিতে আসাম সরকারের পক্ষ থেকে অভিযোগ তোলা হয়েছে যে, মিজোরাম ওই রাজ্যের লায়লাপুরে রিজার্ভ ফরেস্ট ধ্বং করে রাস্তাএবং সামরিক ক্যাম্প নির্মাণ করছে। তাদের অভিযোগ, আসামের পুলিশ বাহিনীর ওপর হামলা চালিয়েছে দুর্বৃত্তরা।
অপরদিকে মিজোরাম বলছে, আসামের পুলিশ সদস্যরা সীমান্ত অতিক্রম করছিল এবং কোলাসিবের একটি পুলিশ পোস্টে দিয়ে যাওয়ার সময় জাতীয় সড়কের অনেক যানবাহনের ক্ষতি সাধন করেছে। তারা মিজোরামের ওই পুলিশ স্টেশনে আগুন ধরিয়ে দিয়েছে বলেও অভিযোগ আনা হয়েছে।
মিজোরামের তিন জেলা আইজাওল, কোলাসিব এবং মামিতের সঙ্গে ১৬৪ দশমিক ৬ কিলোমিটার এলাকাজুড়ে আসামের চাচার, হায়লাকান্দি এবং করিমগঞ্জ জেলার সঙ্গে অভ্যন্তরীণ সীমানা রয়েছে। কয়েক দশক ধরেই এসব অঞ্চলের মধ্যে সংঘাত চলছে। এসব সংঘাতের জন্য স্থানীয় বাসিন্দা এমনকি নিরাপত্তা বাহিনীও বিভিন্ন সময় একে অন্যের ওপর দোষারোপ করে আসছে।