মাদারীপুরের কালকিনিতে মো. নাজিমউদ্দিন কাজী (২৫) নামের এক যুবকের ‘অস্বাভাবিক মৃত্যুর’ রহস্য উদ্ঘাটন হয়েছে। ঘটনার ৪১ দিন পর স্বামী হত্যার দায় স্বীকার করেছেন নিহতের স্ত্রী রুবি বেগম (২৩)।
সোমবার (২ আগস্ট) দুপুরে আদালতের মাধ্যমে তাকে কারাগারে পাঠানো হয়েছে।
নিহতের পরিবার সূত্রে জানা গেছে, কালকিনি উপজেলার পূর্ব এনায়েতনগর এলাকার পূর্ব আলীপুর গ্রামের মান্নান কাজীর ছেলে নাজিমউদ্দিন কাজীর সঙ্গে একই এলাকার কামাল সিকদারের মেয়ে রুবি বেগমের পারিবারিকভাবে প্রায় চার বছর আগে বিয়ে হয়। কিন্তু ২১ জুন রাতে স্বামী নাজিমউদ্দিন স্ট্রোক করে মারা যান বলে এলাকায় প্রচার করেন স্ত্রী রুবি বেগম। পরে তার মরদেহ স্বাভাবিক মৃত্যু হিসেবে দাফন করা হয়।
নাজিমউদ্দিনের বাবা-মা নেই। অন্য স্বজনদের মধ্যে তার মৃত্যু নিয়ে সন্দেহ হয়। তাদের ধারণা, পরকীয়ার জেরেই তাকে হত্যা করা হয়েছে। ৪১ দিন পর ১ আগস্ট বিকেলে স্থানীয় এলাকাবাসীর তোপের মুখে স্বামী হত্যার দায় স্বীকার করেন রুবি বেগম।
বিষয়টি স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান রেহানা নেয়ামুলের স্বামী নেয়ামুল আকন কালকিনি থানা পুলিশকে অবহিত করেন। খবর পেয়ে পুলিশ সন্ধ্যার পর ঘটনাস্থলে গিয়ে রুবি বেগমকে থানায় নিয়ে যায়। পরে নিহতের ভাই নাঈম কাজী বাদী হয়ে রুবিকে আসামি করে কালকিনি থানায় একটি হত্যা মামলা করেন।
অভিযুক্ত রুবি বেগম স্বীকারোক্তিতে জানান, আলীপুর মোল্লারহাট বাজারের ওষুধের দোকানের চিকিৎসক আব্দুল আলীর কাছ থেকে ঘুমের ওষুধ এনে দুধের সঙ্গে মিশিয়ে নাজিমউদ্দিনকে খাইয়ে অচেতন করে হত্যা করা হয়।
নিহতের ভাই নাঈম বলেন, ‘আমাদের আগেই সন্দেহ হয়েছিল নাজিমউদ্দিন মারা যায়নি, তাকে হত্যা করা হয়েছে। রোববার সন্ধ্যায় এলাকার লোকজন নিয়ে রুবিকে জিজ্ঞাসাবাদ করলে সে ঘুমের ওষুধ খাইয়ে আমার ভাইকে হত্যা করেছে বলে স্বীকার করে। তাই তার বিরুদ্ধে আমি হত্যা মামলা করেছি।’
এ ব্যাপারে কালকিনি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) ইশতিয়াক আশফাক রাসেল বলেন, ‘ভুক্তভোগী পরিবার থানায় হত্যা মামলা করেছে। জিজ্ঞাসাবাদে স্বামীকে হত্যার কথা স্বীকার করেছে রুবি বেগম। পরে তাকে গ্রেফতার দেখিয়ে আদালতের মাধ্যমে জেলহাজতে পাঠানো হয়।’
নদী বন্দর / বিএফ