ফরিদপুর সদরের নর্থ চ্যানেল ইউনিয়নের ৩৮ দাগ এলাকায় জলিল মোল্লার ডাঙ্গী গ্রামের ফালুর খালে বিরল প্রজাতির মিঠা পানির একটি কুমির আস্তানা গেড়েছে। সেটি উদ্ধারে চালানো অভিযান বার বার ভেস্তে গেছে। কয়েক দফা চেষ্টার পরও উদ্ধার অভিযান ভেস্তে যাওয়ায় সেখানে সতর্কতা জারি করা হয়েছে। ফলে কুমির আতঙ্কে দিন কাটছে সালাম খার ডাঙ্গী গ্রামবাসীর।
বার বার অভিযান ব্যর্থ হওয়ার পর সাময়িকভাবে সতর্কতা জারি করা হয়েছে জলাধারটির আশপাশে। পাশাপাশি মোতায়েন করা হয়েছে গ্রাম পুলিশ। তবে কুমির উদ্ধার করে নিরাপদ স্থানে ছেড়ে দেয়া হবে বলে জানান জেলা প্রশাসক।
এলাকাবাসী জানায়, গোসল, কাপড় ধোয়াসহ নিত্যপ্রয়োজনীয় কোনো কাজ করা যাচ্ছে না। বাচ্চারাও ভয়ে পানিতে নামছে না। এছাড়া কুমিরের খবর ছড়িয়ে পড়ায় আশপাশের এলাকা থেকে প্রতিদিন অনেক মানুষ ভিড় করছেন।
কুমির দেখতে আসা ইমরান সিকদার নামের এক দর্শনার্থী জানান, সবাই বলছে কুমির আইছে, তাই দেখতে এসেছি। অন্যদিকে, টোকন মোল্লা দুই ঘণ্টা অপেক্ষা করেও কুমির দেখতে না পেয়ে হতাশ হয়ে ফিরে গেছেন। যদিও স্থানীয়দের আপাতত জলাধারের আশপাশে যেতে নিষেধ করা হয়েছে। এলাকাবাসী-দর্শনার্থীদের নিরাপত্তায় মোতায়েন রয়েছে গ্রাম পুলিশ।
শুক্রবার (৩০ জুলাই) কুমিরটি উদ্ধারে দ্বিতীয় দফায় অভিযান চালনো হয়। বেলা পৌনে ১২টা থেকে সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত দীর্ঘ সময় ধরে অভিযান চালানো হলেও ধরা সম্ভব হয়নি কুমিরটিকে। তিন দফা জালে আটকা পড়লেও প্রতিবারই জাল ছিড়ে বের হয়ে গেছে কুমিরটি। অবশেষে সন্ধ্যা ৬টায় অভিযান সমাপ্ত ঘোষণা করা হয়।
এর আগে গত শনিবার (২৪ জুলাই) সকালে কুমিরটিকে চর এলাকার একটি জলাধারে প্রথম দেখেন এলাকাবাসী। এরপর আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে এলাকায়। ওই এলাকায় মাইকিং করে জলাশয়ে না নামার পরামর্শ দেয়া হয়। ধারণা করা হচ্ছে, মাছ তাড়া করতে করতে কুমিরটি এই খালে ঢুকে পড়েছে।
নর্থ চ্যানেল ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মোস্তাকুজ্জামান জানান, জলাধারে ও স্থানীয় খেয়াঘাটে সতর্ক বার্তা দিয়ে দিয়েছে যেন মানুষ এদিকে চলাচল না করে।
বন্যপ্রাণী সম্প্রসারণ ও প্রকৃতি সংরক্ষণ বিভাগের খুলনা অঞ্চলের বিভাগীয় কর্মকর্তা ও উদ্ধার অভিযানের প্রধান নির্মল কুমার পাল জানান, কুমিরটি বিরল প্রজাতির মিঠাপানির। এটি দেশ থেকে বিলুপ্তের পথে। দ্বিতীয় দফায় সফল না হওয়ায় আপাতত উদ্ধার অভিযান বন্ধ রাখা হয়েছে। পনি কমলে আবারও অভিযান চালানো হবে।
তিনি আরও বলেন, বর্ষার ওই ক্যানেল তলিয়ে গেলে কুমিরটি স্বেচ্ছায় যদি নদীতে যায় তাহলে আর অভিযানের প্রয়োজন হবে না। গ্রামবাসীকে কুমিরটিকে বিরক্ত করতে না বলা হয়েছে।
ফরিদপুর জেলা প্রশাসক অতুল সরকার জানান, কুমিরটি উদ্ধারে ইতোমধ্যে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের সঙ্গে যোগাযোগ করেছি। কঠোর লকডাউন শেষ হলে তারা আবারও অভিযান চালাবে।
নদী বন্দর / এমকে