নড়াইলের কালিয়া উপজেলার নড়াগাতী থানাধীন সরসপুর ও পহরডাঙ্গা গ্রামের শতবর্ষী ঈদগাহ ও কবরস্থান। মধুমতি নদীর ক্রমাগত ভাঙনে এই ঐতিহাসিক ধর্মীয় স্থাপনাগুলো প্রায় বিলীন হওয়ার পথে। অথচ এখনো পর্যন্ত নদীভাঙন রোধে পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবি) কার্যকর কোনো উদ্যোগ চোখে পড়েনি।
জানা যায়, ঐতিহ্যবাহী এই দুই গ্রামের হাজারো মানুষ যুগের পর যুগ ঈদুল ফিতর ও ঈদুল আজহার নামাজ একত্রে আদায় করে আসছেন এই ঈদগাহে। পাশাপাশি কবরস্থানে শায়িত রয়েছেন বহু পূর্বপুরুষ। কিন্তু দিন দিন জনসংখ্যা বৃদ্ধির সঙ্গে সঙ্গে নদীভাঙনের ভয়াবহতা এমন পর্যায়ে পৌঁছেছে যে, ঈদের জামাত একত্রে আদায় করাও কঠিন হয়ে পড়েছে।
ঈদগাহ ও কবরস্থানের দক্ষিণ পাশে রয়েছে চাপাইল-কালিয়া প্রধান সড়ক, আর উত্তরে প্রবাহিত হচ্ছে ভাঙনপ্রবণ মধুমতি নদী। নদীর প্রবল তোড়ে ইতোমধ্যেই ঈদগাহ ও কবরস্থানের একাধিক অংশ নদীগর্ভে চলে গেছে।
এলাকাবাসীর দাবি, ঈদগাহ ও কবরস্থান রক্ষায় দ্রুত স্থায়ী বাঁধ নির্মাণসহ নদীভাঙন প্রতিরোধে কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণ করা হোক, যেন ভবিষ্যৎ প্রজন্ম এই ঐতিহ্য থেকে বঞ্চিত না হয়।
ঈদগাহ ও কবরস্থান পরিচালনা কমিটির সভাপতি শিকদার আহসান আলী (লাবু) বলেন, বছরের পর বছর এলাকাবাসী স্বেচ্ছাশ্রমে নদীতীরে গাছ লাগিয়ে ভাঙন প্রতিরোধের চেষ্টা করেও কার্যকর ফল পায়নি। আবার ভাঙন শুরু হয়েছে, এবার হয়তো স্থায়ীভাবে সবকিছু নদীতে হারিয়ে যাবে।
স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান মল্লিক মাহমুদুল ইসলাম বলেন, ভাঙন এখন চরম আকার ধারণ করেছে। আমরা দ্রুত পাউবি নড়াইল অফিসে লিখিত আবেদন করব। প্রয়োজনে এলাকাবাসীকে সঙ্গে নিয়ে মানববন্ধনও করব।
স্থানীয়দের অভিযোগ, পানি উন্নয়ন বোর্ড নিরব দর্শকের ভূমিকা পালন করছে। অথচ এটি শুধু ধর্মীয় স্থাপনা নয়, শত বছরের ইতিহাস ও সংস্কৃতির স্মারক-যা সংরক্ষণ করা রাষ্ট্রীয় দায়িত্বের মধ্যেই পড়ে।
এ বিষয়ে নড়াইল জেলা পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী অভিজিৎ কুমার সাহা বলেন, ওই এলাকাটি তিনি পরিদর্শন করেছেন এবং সংরক্ষণের জন্য বরাদ্দ চেয়ে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের নিকট তালিকা পাঠিয়েছেন। বরাদ্দ আসলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে জানান এ কর্মকর্তা।
নদীবন্দর/ইপিটি