স্পেনের দক্ষিণ-পূর্বাঞ্চলীয় একটি লবণাক্ত হ্রদে টনে টনে মৃত মাছ ভেসে উঠেছে। বিপুল সংখ্যক মাছের মৃত্যুর ঘটনায় হতবাক স্থানীয় বাসিন্দা এবং পরিবেশবিদরা। দক্ষিণ মূর্শিয়ার মের মেনোর নামের ওই হ্রদে এতো মাছের মৃত্যুর জন্য স্থানীয় সরকার গরম আবহাওয়াকে দায়ী করেছে।
তবে বিজ্ঞানীরা বলছেন, স্থানীয় কৃষিকাজের কারণে যে দূষণ তৈরি হচ্ছে তার কারণে পানির মান নষ্ট হচ্ছে। এতে হ্রদে থাকা হাজার হাজার মাছ প্রাণ হারাচ্ছে। এই ঘটনা তদন্ত করছেন প্রসিকিউটররা। অপরদিকে এই ঘটনায় প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি জানিয়ে বিক্ষোভ করছেন স্থানীয় বাসিন্দারা।
স্পেনের স্থানীয় গণমাধ্যমের প্রতিবেদনে জানানো হয়েছে, মার মেনোরকে দূর্যোগ এলাকা বলে ঘোষণা করার বিষয়টি বিবেচনা করা হচ্ছে। আঞ্চলিক সরকার এই অনুরোধ জানিয়েছে। বছরের পর বছর ধরে পরিবেশ দূষণের কারণে ওই হ্রদের অবস্থা বেশ ভয়াবহ। ক্ষতির হাত থেকে হ্রদটি বাঁচাতে আঞ্চলিক সরকারের ওপর চাপ বাড়ছেই।
স্পেনের দক্ষিণ-পূর্ব ভূমধ্যসাগরীয় উপকূলে অবস্থিত এই হ্রদটি একসময় পর্যটকদের বেশ আকৃষ্ট করত। একই সঙ্গে এটি ছিল সামুদ্রিক প্রাণীদের জন্য একটি অভয়ারণ্য। তবে ক্রমেই এই অবস্থার অবনতি ঘটেছে। গত কয়েক বছরে এই হ্রদের পানির অবস্থা খারাপ থেকে আরও খারাপের দিকে যাচ্ছে। ফলে বাস্তূসংস্থানের অবনতি ঘটছে। ২০১৬ থেকে ২০১৯ সালের মধ্যে এই হ্রদে বিপুল সংখ্যক মাছের মৃত্যু হয়েছে।
পরিবেশ বিষয়ক সংগঠন ডব্লিউডব্লিউএফ এসপানা জানিয়েছে, ওই এলাকায় কৃষি জমি থেকে দূষণের কারণেই সর্বশেষ কয়েক টন মাছের মৃত্যু হয়েছে। তারা এই বিপুল সংখ্যক মাছের মৃত্যুর জন্য অক্সিজেনের অভাবকে দায়ী করেছেন।
পরিবেশবিদরা বলছেন, মানুষ বিভিন্ন কাজে অতি মাত্রায় রাসায়নিক পদার্থ ব্যবহার করছে। এসব পদার্থ পানির ওপর এক ধরনের আবরণ তৈরি করছে যা সূর্যের আলোকে বাধা দেয় এবং পানিতে অক্সিজেনের মাত্রা কমিয়ে ফেলে। এতে জলজ প্রাণিদের বেঁচে থাকা কঠিন হয়ে পড়ে।
স্থানীয় বাসিন্দা আনা পিনেদা জানিয়েছেন, তারা দীর্ঘদিন ধরেই এ নিয়ে বিক্ষোভ করে যাচ্ছেন। তিনি বলেন, কয়েক বছর ধরে বীচের পানির অবস্থা এমন যে সেখানে পা রাখাও অসম্ভব হয়ে পড়েছে।
নদী বন্দর / সিএফ