1. badsha.dru@gmail.com : admi2017 :
  2. nadibandar2020@gmail.com : Nadi Bandar : Nadi Bandar
নার্সারিতে মাসে লাখ টাকা আয় গোপালের - Nadibandar.com
বুধবার, ৩০ অক্টোবর ২০২৪, ০১:৩৫ অপরাহ্ন
নদী বন্দর প্রতিনিধি:
  • আপডেট টাইম : বৃহস্পতিবার, ২ সেপ্টেম্বর, ২০২১
  • ১৩০ বার পঠিত

গোপাল সরকার। জন্ম গাইবান্ধার সুন্দরগঞ্জ উপজেলার ছাইতান তলায়। বাবা ধীরেন চন্দ্র সরকার সাংসারিক কাজ করেন। মা বাসন্তী রাণী বালা, গৃহিনী। চার ভাই দুই বোনের মধ্যে গোপাল মেঝো। অভাব-অনটনের সংসারে বেশি দূর লেখাপড়া করতে পারেনি তিনি।

প্রাথমিকের গণ্ডি পার না হতেই, ইতি হয়ে যায় শিক্ষা জীবনের। কিন্তু হাল ছাড়েননি গোপাল চন্দ্র সরকার। ২০০৪ সালে ১৬ বছর বয়সে মাত্র ১০ হাজার টাকা পুঁজি নিয়ে গোপাল শুরু করেন নার্সারি। সেই নার্সারিই পাল্টে দেন গোপালের ভাগ্য।

 

বাজার থেকে মাঠ পার হয়ে সোজা উত্তর দিকে আাকাঁ-বাকাঁ পথ ধরে আধা কিলোমিটার দূরেই গোপালের বাসন্তী নার্সারি। প্রচণ্ড অধ্যবসায় এবং একাগ্রতা দিয়ে যেকোনো অবস্থা থেকে উন্নতি করা সম্ভব আর তাই করে দেখিয়েছেন গোপাল চন্দ্র সরকার। নার্সারি ও বাগান করে নিজের ভাগ্য ফেরানোর পাশাপাশি অন্যের জন্য এখন তিনি অনুকরণীয়।

এলাকাবাসী জানান, মাত্র ১৬ বছর বয়সে ২০০৪ সালে ছাগল বিক্রি করে ১০ হাজার টাকা পুঁজি নিয়ে সামান্য ৫ শতক জমিতে নার্সারি শুরু করেন গোপাল। পুঁজি কম থাকায় নার্সারির শুরুতে অন্যের বাড়ির আশপাশ থেকে আমের আঁটি সংগ্রহ করে আমের চারা ফলন করে নার্সারি জীবনের যাত্রা শুরু হয় গোপালের।

 

কখনো বৃষ্টিতে ভিজে, কখনো রোদে পুড়ে আবার কখনো মাথার ঘাম পায়ে ফেললেও প্রথমে লাভের মুখ না দেখলেও ধৈর্য এবং লেগে থাকা তাকে দিয়েছে সফলতা। নার্সারি ও বাগান করে নিজের ভাগ্য ফেরানোর পাশাপাশি অনেকের কর্মসংস্থান করে এলাকাবাসীর কাছে প্রশংসায় ভাসছেন গোপাল।

গোপাল চন্দ্র সরকার বলেন, ‘অভাবের কারনে বেশি দূর লেখাপড়া করতে পারিনি। ইচ্ছা ছিলো নিজে কিছু একটা করার। তাই পালিত ছাগল বিক্রি করে মাত্র ১০ হাজার টাকা দিয়ে পাঁচ শতাংশ জমিতে নার্সারি শুরু করি। অনেক কষ্ট করে আজ আমার নার্সারি এ পর্যায়ে এনেছি। বর্তমানে ৪০ বিঘা জুড়ে আমার তিনটি নার্সারি। আমার মায়ের নামে নার্সারির নাম রেখেছি বাসন্তী। আমার বাবাও আমার নার্সারিতে এখন নিয়মিত সময় দেন। এর পাশাপাশি আমার নার্সারিতে প্রতিদিন প্রয়োজন অনুসারে ৩০-৩৫ জন পুরুষ ও নারী কাজ করেন। এ ছাড়াও নিয়মিত কাজ করেন ৩ জন মালী’।

 

দেশি প্রজাতির চারা ছাড়াও গোপালের নার্সারিতে রয়েছে বিভিন্ন প্রজাতির বিদেশি চারা। এর মধ্যে উল্লেখ্যযোগ্য হলো- লেট ভাড়াটি আম, রামবুটান, ডুরিয়ান, এবাকোটো, আজুয়া খেজুর, ভিয়াতনামী কাঠাল, ত্বীন ফল, কটবেল, থাই জাম্বুরা, মিষ্টি তেঁতুল, এলোভেরা, ড্রাগন ফল, শরিফা, আপেল, বারি ওয়ান মাল্টাসহ বর্তমানে ৪০ বিঘা জমিতে আছে বিভন্ন রকমের প্রায় সাত লাখ চারা। এরমধ্যে চার লাখ দেশি ফলের চারা ও তিন লাখ বিদেশি ফলের চারা।

গোপাল সরকার আরও বলেন, ‘একেকটা আজোয়া খেজুরের চারা বিক্রি হয় ৩৫ হাজার টাকা করে। এ ছাড়াও ত্বীন ফল ২৫ হাজার, রামবুটা ৩ হাজার করে। এগুলোই আমার নার্সারির সবচেয়ে দামি চারা। এগুলো আমি দেশের বড় বড় নার্সারি থেকে সংগ্রহ করেছি’।

 

সারাদেশের অনেক দূর-দূরান্ত থেকে পছন্দের চারা সংগ্রহ করতে গোপালের নার্সারিতে আসে অনেকেই। নার্সারি থেকে আগে গোপালের মাসে চারা বিক্রি হতো ১০-১৫ লাখ টাকা। কিন্তু করোনার কারণে তা কমে গেছে। করোনাকালে মাসে প্রায় ২ লাখ টাকার মতো চারা বিক্রি হয়।

গাইবান্ধার সুন্দরগঞ্জ উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ কর্মকর্তা এ, কে, এম, ফরিদুল হক মুঠোফোনে বলেন, ‘বৃক্ষপ্রেমি গোপালের নার্সারি আমরা পরিদর্শন করেছি। আনুমানিক ৮০ থেকে ৯০ লাখ টাকার চারাগাছ আছে নার্সারিতে।

 

গত বৃক্ষমেলায় সুন্দরগঞ্জ উপজেলায় গোপালের নার্সারি পুরস্কারে ভূষিত হয়। এ ধারা অব্যাহত থাকলে এবার গাইবান্ধা জেলায় নার্সারিটি প্রথম স্থান দখল করবে বলে আমি আশাবাদী। গোপাল চন্দ্রের মতো নার্সারি চাষিদের হাত ধরে একদিন গড়ে উঠবে বেকারমুক্ত সফল বাংলাদেশ। এমনটাই প্রত্যাশা করেন সুন্দরগঞ্জ কৃষি বিভাগ’।

নদী বন্দর / বিএফ

নিউজটি শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এ জাতীয় আরো খবর..
© All rights reserved © 2020 Nadibandar.Com
Theme Developed BY ThemesBazar.Com