ঠিক এক বছর আগে বিশ্বে করোনার প্রাদুর্ভাব ঘটে। চীনের হুবেই প্রদেশের উহান শহরে প্রথম প্রাণঘাতী এই ভাইরাসের উপস্থিতি ধরা পড়ে। তারপর থেকে এখন পর্যন্ত সারাবিশ্বে ভয়াবহ তাণ্ডব চালাচ্ছে এই ভাইরাস।
এক বছরে বিশ্বের লাখ লাখ মানুষ করোনায় আক্রান্ত হয়ে মারা গেছে। তবে এখন পর্যন্ত করোনায় সবচেয়ে বেশি বিপর্যস্ত যুক্তরাষ্ট্র। দেশটিতে সংক্রমণ ও মৃত্যুর সংখ্যা অন্যান্য দেশকে ছাড়িয়ে গেছে।
গত ২৪ ঘণ্টায় যুক্তরাষ্ট্রে দৈনিক মৃত্যুর রেকর্ড হয়েছে। একদিনেই প্রাণ হারিয়েছে প্রায় ৪ হাজার মানুষ। জন্স হপকিন্স বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিসংখ্যান অনুযায়ী, যুক্তরাষ্ট্রে একদিনে ৩ হাজার ৯শ’র বেশি মানুষ করোনায় আক্রান্ত হয়ে মারা গেছে।
ওয়ার্ল্ডোমিটারের পরিসংখ্যান বলছে, যুক্তরাষ্ট্রে এখন পর্যন্ত আক্রান্ত হয়েছে ২ কোটি ২ লাখ ১৬ হাজার ৯৯১ জন। এর মধ্যে মারা গেছে ৩ লাখ ৫০ হাজার ৭৭৮ জন। তবে ইতোমধ্যেই সুস্থ হয়ে উঠেছে ১ কোটি ১৯ লাখ ৯৮ হাজার ৭৯৪ জন।
দেশটিতে বর্তমানে করোনার অ্যাক্টিভ কেস ৭৮ লাখ ৬৭ হাজার ৪১৯। এর মধ্যে আশঙ্কাজনক অবস্থায় আছে ২৯ হাজার ৩১২ জন। বছরজুড়ে করোনার হানায় বিশ্বে বিপর্যস্ত অবস্থা তৈরি হলেও সামনের দিনগুলোতে আশার আলো দেখছে মানুষ। কারণ ইতোমধ্যেই বেশ কিছু দেশে টিকার কার্যক্রম শুরু হয়ে গেছে। টিকার মাধ্যমেই এই মহামারি কাটিয়ে ওঠার স্বপ্ন দেখছে সবাই।
ডিসেম্বরে বেশ কিছু উৎসব থাকার কারণে বিশেষজ্ঞরা সতর্ক করেছেন যে, সামনের দিনগুলোতে যুক্তরাষ্ট্রে সংক্রমণ আরও বেড়ে যেতে পারে। চলতি মাসের শেষের দিকে থ্যাঙ্কস গিভিং ডে, বড়দিনসহ বিভিন্ন আয়োজনে লোকজন বন্ধু-বান্ধব, আত্মীয়-স্বজনের সঙ্গে সমবেত হয়েছে। এসব ক্ষেত্রে অনেকেই মাস্ক পরেননি বা সামাজিক দূরত্ব মেনে চলেননি। ফলে গত কয়েক সপ্তাহে সংক্রমণ ও মৃত্যু লাফিয়ে লাফিয়ে বাড়তে দেখা গেছে।
বিভিন্ন দেশে করোনার টিকা আবিষ্কার এবং টিকাদান কর্মসূচির মধ্যেই নতুন এক ধরনের করোনাভাইরাস সারাবিশ্ব ছড়িয়ে পড়ছে। যা মানুষের মনে নতুন করে উদ্বেগ-উৎকণ্ঠার জন্ম দিয়েছে।
যুক্তরাষ্ট্রেও সম্প্রতি করোনার নতুন ধরনের অস্তিত্ব পাওয়া গেছে। দেশটির কলোরাডো রাজ্যে ২০ বছর বয়সী এক ব্যক্তির শরীরে নতুন ধরনের এই করোনা শনাক্ত হয়েছে বলে রাজ্যের স্বাস্থ্য বিভাগের কর্মকর্তারা জানিয়েছেন। সম্প্রতি তার কোনো ভ্রমণ ইতিহাসও নেই। তাকে এখন আইসোলেশনে রাখা হয়েছে।
স্থানীয় সময় বুধবার এক বিবৃতিতে কলোরাডোর গভর্নর জারেড পলিস বলেন, ‘করোনার নতুন ধরনে আক্রান্ত ব্যক্তিকে ডেনভারের কাছে এলবার্টে আইসোলেশনে রাখা হয়েছে। এই ঘটনায় জনস্বাস্থ্য বিভাগ তদন্ত করছে। এখন পর্যন্ত ওই বক্তির সংস্পর্শে আসা কারো শরীরে করোনার নতুন ধরনের উপস্থিতির প্রমাণ পাওয়া যায়নি।’
নদী বন্দর / পিকে