মিয়ানমারের ইয়াঙ্গুনে অভ্যুত্থানবিরোধী বিক্ষোভে দেশটির নিরাপত্তা বাহিনী গাড়ি উঠিয়ে দিয়েছে। এতে নিহত হয়েছেন পাঁচজন ও আহত হয়েছেন আরও বেশ কয়েকজন। এছাড়া ১৫ বিক্ষোভকারীকে গ্রেফতার করা হয়েছে। রোববার (৫ ডিসেম্বর) প্রত্যক্ষদর্শী ও স্থানীয় গণমাধ্যমগুলো এ তথ্য জানিয়েছে।
মিয়ানমারের বৃহত্তম শহর ইয়াঙ্গুনে কমপক্ষে তিনটি বিক্ষোভ অনুষ্ঠিত হয়েছে। তাছাড়া দেশটির বিভিন্ন অংশে একই ধরনের বিক্ষোভ হয়েছে। দেশটির ক্ষমতাচ্যুত বেসামরিক সরকারের প্রধান অং সান সু চির বিরুদ্ধে কয়েকটি ফৌজদারি মামলার প্রথমটিতে প্রত্যাশিত রায়ের আগেই এ ঘটনা ঘটলো।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানিয়েছেন, মিয়ানমারের বৃহত্তম শহর ইয়াঙ্গুনে বিক্ষোভ শুরু হওয়ার কয়েক মিনিট পরেই তাণ্ডব চালায় সেনাবাহিনী।
এক বিক্ষোভকারী বলেন, আমি ধাক্কা খেয়ে একটি ট্রাকের সামনে পড়ে যাই। এরপর এক সৈনিক তার রাইফেল দিয়ে আমাকে পেটায়। তবে আমি তাকে ধাক্কা দিয়ে নিজেকে রক্ষা করার চেষ্টা করি। তারপর সে আমাকে লক্ষ্য করে গুলি চালায়। সৌভাগ্যবশত আমি পালিয়ে আসতে সক্ষম হয়েছি।
এদিকে বিরোধীদের ছায়া সরকার বলছে, শান্তিপূর্ণ বিক্ষোভকারীদের পিষ্ট ও গুলি করে হত্যা করা দেখে কষ্ট পেয়েছি। হামলার পর জান্তাবিরোধী দেশটির জাতীয় ঐক্য সরকারের প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে এক বিবৃতিতে জানায়, আমরা সন্ত্রাসী সামরিক বাহিনীকে কঠোর জবাব দেবো। তারা নিরস্ত্র শান্তিপূর্ণ বিক্ষোভকারীদের নৃশংস ও অমানবিকভাবে হত্যা করছে।
গত ১ ফেব্রুয়ারি মিয়ানমারে অভ্যুত্থানের মাধ্যমে অং সান সু চির এনএলডি (ন্যাশনাল লি ফর ডেমোক্র্যাসি) সরকারকে হটিয়ে ক্ষমতা দখল করে দেশটির সামরিক বাহিনী। এর পরপরই জান্তাবিরোধী বিক্ষোভে উত্তাল হয়ে ওঠে মিয়ানমার। বিক্ষোভ দমনে চড়াও হয় সামরিক সরকার। এতে এখন পর্যন্ত এক হাজার তিনশ জনের বেশি মানুষ প্রাণ হারিয়েছেন। তারপরও দেশটিতে সামরিক বিরোধী বিক্ষোভ অব্যাহত রয়েছে।
এর আগে জান্তাকে অবৈধ ঘোষণা দিয়ে একটি ছায়া সরকার গড়ে তোলেন মিয়ানমারের রাজনীতিবিদরা, যার বেশিরভাগ সদস্যই এনএলডির। জাতীয় ঐক্য সরকার (এনইউজি) নাম দিয়ে একে মিয়ানমারের বৈধ সরকার বলেও দাবি করেন তারা। অবশ্য মিয়ানমার জান্তা এনইউজি’কে ‘সন্ত্রাসী’ বলে ঘোষণা দিয়েছে। যার অর্থ, তাদের সঙ্গে যে কেউ আলাপ করলে বা যোগাযোগ রাখলেই বন্দি হতে পারেন।
সূত্র: রয়টার্স, আল-জাজিরা
নদী বন্দর / সিএফ