চলতি আমন মৌসুমে ধান ও চালের দাম সহনীয় রাখতে বাজার মনিটরিং (তদারকি) জোরদারের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
সংশ্লিষ্ট সংস্থাকে প্রয়োজনীয় নির্দেশনা দেওয়ার জন্য সম্প্রতি খাদ্য মন্ত্রণালয় থেকে খাদ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালকের কাছে চিঠি পাঠানো হয়েছে। আমন মৌসুম চললেও ধান-চালের দাম কিছুটা ঊর্ধ্বমুখী। সেই প্রেক্ষাপটে মন্ত্রণালয় এ নির্দেশনা দিলো।
মন্ত্রণালয়ের চিঠিতে বলা হয়, বিগত বছরের ধারাবাহিকতায় এ বছরও আমন মৌসুমে ধানের বাম্পার ফলন হয়েছে এবং বর্তমানে ধান কাটা চলছে। দেশে খাদ্যশস্যের কোনো সংকট নেই। কৃষকের উৎপাদিত ধানের ন্যায্যমূল্য প্রাপ্তি নিশ্চিত করার পাশাপাশি ভোক্তা সাধারণের জন্য চালের বাজারমূল্য সহনীয় রাখা বাঞ্ছনীয়। এ পরিপ্রেক্ষিতে কোনো মজুতদার যাতে অতিরিক্ত ধান বা চাল মজুত করে বাজারে কৃত্রিম সংকট সৃষ্টি করতে না পারে এবং দাম যাতে সাধারণ ভোক্তার অনুকূলে থাকে সেজন্য বাজার মনিটরিং জোরদার করা অত্যাবশ্যক।
এমতাবস্থায় যৌক্তিক মূল্যে ধান-চাল ক্রয়-বিক্রয় হচ্ছে কি না তা যথাযথভাবে মনিটরিং করার জন্য এবং সংশ্লিষ্ট সংস্থাকে প্রয়োজনীয় নির্দেশনা দেওয়ার জন্য খাদ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালককে অনুরোধ জানিয়েছে খাদ্য মন্ত্রণালয়।
আমন সংগ্রহে অগ্রগতি পরিদর্শনে কর্মকর্তাদের দায়িত্ব
চলতি আমন মৌসুমে সরকার খোলা বাজার থেকে ২৭ টাকা কেজি দরে ৩ লাখ মেট্রিক টন ধান ও ৪০ টাকা কেজি দরে ৫ লাখ টন সিদ্ধ চাল কেনার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। গত ৩১ অক্টোবর খাদ্য পরিকল্পনা ও পরিধারণ কমিটির সভায় এ সিদ্ধান্ত হয়।
গত ৭ নভেম্বর থেকে আমন ধান ও চাল কেনা শুরু হয়েছে, চলবে ২৮ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত।
সারাদেশে আমন সংগ্রহ অগ্রগতি মাঠ পর্যায়ে পরিদর্শনের জন্য ৩৯ কর্মকর্তাকে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। একই সঙ্গে পরিদর্শন কার্যক্রম তদারকির জন্য ৮ বিভাগে ৮ জন অতিরিক্ত সচিব দায়িত্ব পেয়েছেন। এ বিষয়ে গত ২ ডিসেম্বর সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের কাছে চিঠি পাঠানো হয়েছে।
চিঠিতে বলা হয়, ভ্রমণকালে কঠোরভাবে স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলতে হবে। বর্ডার এলাকার জেলা ভ্রমণের ক্ষেত্রে অধিকতর সতর্কতা অবলম্বন করতে হবে। সংগ্রহ কার্যক্রম পরিদর্শনের সময় গুদাম ব্যবস্থাপনা, সংরক্ষিত খাদ্যশস্যের মান, ‘খাদ্যশস্য ও খাদ্যদ্রব্যের চলাচল সূচি প্রণয়ন নীতিমালা, ২০০৮’ অনুযায়ী পরিকল্পিত উপায়ে খামার গঠনপূর্বক গুদামের সর্বোচ্চ ধারণক্ষমতার ব্যবহারসহ মন্ত্রণালয় কর্তৃক সময়ে সময়ে জারিকৃত নির্দেশনা সঠিকভাবে পালিত হচ্ছে কি না তা পরিদর্শনপূর্বক যাচাই করতে হবে।
বেসরকারি পর্যায়ে মজুত পরিস্থিতি, ফুড গ্রেইন লাইসেন্স ছাড়া অবৈধভাবে এবং এসআরও-তে উল্লিখিত পরিমাণের বেশি কোনো আড়তদার, মিলার বা ফড়িয়া খাদ্যশস্য মজুত করছেন কি না সেটা বস্তুনিষ্ঠভাবে অনুসন্ধান করতে হবে। চুক্তিবদ্ধ মিলারদের দ্রুত খাদ্যশস্য সরবরাহের জন্য উৎসাহিত করতে হবে বলেও চিঠিতে উল্লেখ করা হয়।
এতে আরও বলা হয়, দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তারা দায়িত্বপ্রাপ্ত জেলার উপজেলা মাঠপর্যায়ের কার্যক্রম সরেজমিনে পরিদর্শন করে জেলা ও উপজেলার আলাদা সুপারিশসহ প্রতিবেদন ভ্রমণ শেষ হওয়ার সাত কর্মদিবসের মধ্যে মন্ত্রণালয়ের ওয়েবসাইটের‘পরিদর্শন প্রতিবেদন ব্যবস্থাপনা’ নামক লিংকে আবশ্যিকভাবে আপলোড করবেন। আপলোডে কোনো সমস্যার সম্মুখীন হলে আইসিটি শাখার সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তার সঙ্গে যোগাযোগ করা যেতে পারে।
পরিদর্শনটি সংগ্রহ কার্যক্রম ত্বরান্বিত সম্পর্কিত বলে পরিদর্শনের পর দাখিল করা সুপারিশে গুদাম/ভবন সংস্কার ও মেরামত সম্পর্কিত সুপারিশ প্রদান করা যাবে না। আগামী ৩১ জানুয়ারির মধ্যে পরিদর্শন সম্পন্ন করতে হবে বলেও চিঠিতে উল্লেখ করা হয়েছে।
ধান সংগ্রহ কার্যক্রম ত্বরান্বিত করার জন্য সর্বাত্মক ব্যবস্থা নিতে হবে। এছাড়া খাদ্যমন্ত্রী বা সচিবের একান্ত সচিবরা মাঠপর্যায় পরিদর্শনের সময়ে যেকোনো উপজেলা, জেলা ও বিভাগ পরিদর্শন করতে পারবেন বললেও মন্ত্রণালয়ের চিঠিতে জানানো হয়েছে।
নদী বন্দর / বিএফ