চালু হওয়ার এক সপ্তাহের মাথায় ভেঙে পড়েছে বিশ্বম্ভরপুর ও তাহিরপুরের মধ্যবর্তী এলাকায় বিএডিসির তৈরি করা বোরো ধান চাষাবাদের সেচ প্রকল্পের পানির ট্যাংকটি।
এতে হাওরপাড়ের ১২টি গ্রামের কৃষকদের বোরো চাষাবাদ অনিশ্চিত হয়ে পড়েছে। মঙ্গলবার বিকেলে বিশ্বম্ভরপুর ও তাহিরপুর উপজেলার আঙ্গারুলি হাওর সেচ প্রকল্পের পানির ট্যাংকটির দেয়াল ভেঙে পড়ায় এ অনিশ্চয়তা দেখা দিয়েছে। এ ঘটনায় ঠিকাদারের দায়িত্বে অবহেলা ও নিম্নমানের কাজকেই দায়ী করেছেন এলাকাবাসী।
প্রকল্প বাস্তবায়নকারী বিএডিসি কর্মকর্তারা বলেছেন, এই প্রকল্প বাংলাদেশে প্রথম। পরীক্ষামূলকভাবে চালু করা হয়। এটির কারণে সেচ কার্যক্রম বন্ধ থাকবে না। সংশ্লিষ্ট কৃষকদের দুশ্চিন্তার কিছু নেই।
জানা গেছে, ২৪ লাখ টাকা ব্যয়ে আঙ্গারুলি হাওরের বোরো জমিতে পানি সেচ দেওয়ার জন্য বাংলাদেশ অ্যাগ্রিকালচার ডেভেলপমেন্ট করপোরেশন (বিএডিসি) নতুন পদ্ধতিতে সেচ প্রকল্পের কাজ শুরু করে। এ কাজ করে সুনামগঞ্জের ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান আকিল এন্টারপ্রাইজ।
নির্মিত সেচ প্রকল্পের পানির ট্যাংকটির মাধ্যমে আঙ্গারুলি হাওরের পশ্চিম পাড়ে বালিজুরি এলাকায় সেচ কাজ শুরু হয়েছিল এক সপ্তাহ আগে। প্রকল্পটির মাধ্যমে বিশ্বম্ভরপুর উপজেলা ও তাহিরপুর উপজেলার বারোটি গ্রামের কৃষকদের বোরো ধান চাষাবাদের আওতায় আনতে উদ্যোগ নেওয়া হয়। কিন্তু সেচ প্রকল্পের পানির ট্যাংকটির দেয়াল মঙ্গলবার ভেঙে পড়ায় বিপাকে পড়েছেন কৃষকরা। এলাকার কৃষকরা প্রায় এক হাজার একর জমি চাষাবাদ নিয়ে চিন্তিত হয়ে পড়েছেন।
স্থানীয় কৃষক ফেরদৌস আলম জানান, কাজের শুরুতেই এলাকাবাসী ঠিকাদারের অবহেলা ও নিম্নমানের কাজ হচ্ছে বলে অভিযোগ করে আসছিলেন। কিন্তু কর্তৃপক্ষ তা আমলে নেননি। চালু হওয়ার এক সপ্তাহ যেতে না যেতেই এটি ভেঙে পড়েছে।
সুনামগঞ্জ বিএডিসির উপসহকারী প্রকৌশলী হাছান মাহমুদ মঙ্গলবার বিকেলে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন। এ সময় তিনি বলেন, ট্যাংকটির কোনো রড হুক করা না থাকায় এই দুর্ঘটনা ঘটেছে। এ ব্যাপারে কর্তৃপক্ষকে অবহিত করা হয়েছে।
সুনামগঞ্জ বিএডিসির সহকারী প্রকৌশলী খালেদুজ্জামান বললেন, কাজে কোনো অনিয়ম হয়নি। এই ধরনের সেচ প্রকল্প বাংলাদেশে এটাই প্রথম। পরীক্ষামূলকভাবে এক সপ্তাহ আগে এটি চালু করা হয়েছে। এখনো এর আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন হয়নি। পানির চাপ কেমন হবে সেটি বোঝা যায়নি, সে জন্য এমন হয়েছে। পরের সেচ প্রকল্পগুলোতে এ ধরনের দুর্ঘটনা ঘটবে না। এ ঘটনার জন্য সেচ কার্যক্রম বন্ধ থাকবে না। আমরা একাধিক মোটরের ব্যবস্থা করে কৃষকদের চাষাবাদের ব্যবস্থা করে দেব। দ্রুত ভেঙে যাওয়া প্রকল্পটিও মেরামত করা হবে।
নদী বন্দর / পিকে