নরসিংদীর রায়পুরায় ধানক্ষেত থেকে রুনা আক্তার নামে এক গৃহবধূর চোখ উপড়ানো মরদেহ উদ্ধারের ঘটনায় দুইজনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি)। গ্রেফতাররা হলেন- একই এলাকার বাসিন্দা খোরশেদ মিয়া ও আব্দুর রাজ্জাক।
রোববার (২ জানুয়ারি) সিআইডির অ্যাডিশনাল ইন্সপেক্টর জেনারেলের কার্যালয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে বিশেষ পুলিশ সুপার (এসএসপি) মুক্তাধর এসব তথ্য জানান।
তিনি বলেন, গত ১৩ ডিসেম্বর নরসিংদীর রায়পুরার চরমরজালের একটি ধানক্ষেত থেকে রুনা আক্তার নামে এক গৃহবধূর চোখ উপড়ানো মরদেহ উদ্ধার করা হয়। ভুক্তভোগী রুনা আক্তারের স্বামী আবুল কালাম মিয়া সৌদিপ্রবাসী। তাদের তিন সন্তান রয়েছে। কালাম মিয়া সৌদি আরব যাওয়ার সময় বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান থেকে সাড়ে তিন লাখ টাকা ঋণ নেন।
কিন্তু যাওয়ার পর পরিবারের কোনো খরচ না দিয়ে উল্টো রুনা আক্তারকে বাবার বাড়ি থেকে টাকা এনে ধার-দেনা পরিশোধ করার জন্য চাপ দেন কালাম মিয়া। পরিবারের সদস্যরাও তার ওপর টাকা পরিশোধের জন্য নির্যাতন চালালে রুনা আক্তার থানায় নারী নির্যাতন মামলা করেন। পরিবার থেকে মামলা উঠিয়ে নেওয়ার চাপ দেওয়া হলে তিনি (রুনা) তার মামার বাসায় চলে যান। সেখানে দিনমজুরের কাজ করে সন্তানের ভরণ পোষণের ব্যবস্থা করেন তিনি।
এরপর ১২ ডিসেম্বর সন্ধ্যায় রুনা বাবার বাড়ি থেকে মামার বাড়ি যাওয়ার কথা বলে বাড়ি থেকে বের হন। এরপর থেকে আর তার কোনো খোঁজ পাওয়া যাচ্ছিল না। রাত ৮টার দিকে পরিবারের সদস্যরা তার মুঠোফোনে যোগাযোগের চেষ্টা করলে তার নম্বর বন্ধ পান। ১৩ ডিসেম্বর সকালে স্থানীয় লোকজন গ্রামের ধানক্ষেতে রুনার মরদেহ পড়ে থাকতে দেখে।
বিশেষ এই পুলিশ সুপার জানান, এই ঘটনায় পিতা মোসলেহ উদ্দিন ভূঁইয়া অজ্ঞাতনামা আসামিদের বিরুদ্ধে মামলা করেন। ঘটনায় সিআইডি তদন্ত করলে জানতে পারে একই এলাকার রাজ্জাক, স্থানীয় খোরশেদ আলমের সঙ্গে রুনা আক্তারকে বিয়ের ব্যবস্থা ও বিভিন্ন খরচের কথা বলে খোরশেদ আলমের থেকে ৯০ হাজার টাকা নেন রাজ্জাক। বিয়েতে রুনা আক্তার সম্মতি না দেওয়ায় খোরশেদ আলম রাজ্জাককে তার টাকা ফেরত দিতে বলেন।
তিনি আরও বলেন, ১২ ডিসেম্বর রুনা আক্তার বের হলে প্রথমে রাজ্জাক ও খোরশেদ আলমের সঙ্গে দেখা হয়। এসময় তিনজনের মাঝে বাকবিতণ্ডার একপর্যায়ে রুনা আক্তারের গলার ওড়না দিয়ে পেঁচিয়ে তাকে হত্যা করা হয়। এরপর ঘটনা ভিন্ন খাতে পরিবর্তন করার জন্য ভিক্টিমের একটি চোখ বাঁশ দিয়ে থেঁতলে দেন তারা।
মুক্তাধর আরও জানান, এই ঘটনার সঙ্গে আরও যারা জড়িত তাদের দ্রুত গ্রেফতার করা হবে।
নদী বন্দর / পিকে