বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া তার দল ও পরিবারের তত্ত্বাবধানে চিকিৎসা নিচ্ছেন জানিয়ে তথ্যমন্ত্রী হাছান মাহমুদ বলেছেন, খালেদা জিয়ার স্বাস্থ্যহানি হলে তার জন্য বিএনপি নেতারাই আসামি হবেন।
বৃহস্পতিবার (৬ জানুয়ারি) সচিবালয়ে তথ্য মন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে সমসাময়িক বিষয় নিয়ে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের বক্তব্যের প্রসঙ্গে টেনে এ কথা বলেন মন্ত্রী।
এর আগে বুধবার (৫ জানুয়ারি) জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে এক সমাবেশে বিএনপি মহাসচিব বলেন, সরকার খালেদা জিয়াকে রাজনীতি থেকে সরিয়ে দিতে চায়। রাজনৈতিক প্রতিহিংসা থেকে তাকে হত্যার ষড়যন্ত্র করছে সরকার। খালেদা জিয়ার কিছু হলে সবাইকে হত্যার আসামি করে বিচার করা হবে।
সাংবাদিকদের পক্ষ থেকে বিএনপি মহাসচিবের বক্তব্যের বিষয়টি তথ্যমন্ত্রীর কাছে তুলে ধরা হলে হাছান মাহমুদ বলেন, খালেদা জিয়া বিএনপি ও তার পরিবারের তত্ত্বাবধানে চিকিৎসা নিচ্ছেন। তার স্বাস্থ্যের হানি হলে বিএনপি নেতারাই আসামি হবেন।
বিএনপির পক্ষ থেকে বলা হয়েছে তারা রাষ্ট্রপতির সংলাপে অংশ নেবে না, বিষয়টি সরকার কীভাবে দেখছে? এমন প্রশ্নের উত্তরে হাছান মাহমুদ বলেন, রাষ্ট্রপতির সংলাপের জন্য বিএনপিকে যে আমন্ত্রণ জানিয়ে চিঠি দেওয়া হয়েছে সেটা তারা গ্রহণ করেছে। চিঠিটি তারা গ্রহণ করেছেন সেটি ভালো দিক। আমি আশা করবো, বিএনপি সংলাপে অংশ নেবে। সংলাপে অংশ নিয়ে সংলাপ প্রক্রিয়া নিয়ে তাদের যে প্রশ্ন সেগুলো সেখানে বলে আসতে পারেন। তাহলেই সেটি একটি গণতান্ত্রিক দলের আচরণ হবে।
আর এক প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন, বিএনপি ২০১৪ সালের ৫ জানুয়ারি গণতন্ত্র হত্যা করতে চেয়েছিল। কারণ তারা ভোট কেন্দ্রে আগুন জ্বালিয়েছিল, পাচঁশ ভোট কেন্দ্র জ্বালিয়ে দিয়েছিল। কোমলমতি শিশুদের বিনামূল্যে বই বিতরণের জন্য যে বই সংরক্ষিত ছিল তা জ্বালিয়ে দিয়েছিল।
‘আসলে ওইদিন তারা গণতন্ত্র হত্যা করতে চেয়েছিল, যাতে নির্বাচন না হয়। নির্বাচন না হওয়ার মাধ্যমে দেশে একটি গণতন্ত্রহীন পরিবেশ সৃষ্টি হয় বা অন্য কিছু ঘটে। সেই চেষ্টা করেছিল বিএনপি, কিন্তু তারা সফল হয়নি’ বলেন তথ্যমন্ত্রী।
তিনি বলেন, আসলে বিএনপি হচ্ছে গণতন্ত্র হত্যাকারী হিসেবে চিহ্নিত। জিয়াউর রহমান বন্দুকের নল উঁচিয়ে মানুষের মরদেহের ওপর দিয়ে ক্ষমতা দখল করেছিল। মানুষের মরদেহের ওপর দিয়ে ক্ষমতায় টিকে ছিল।
সমাবেশে মহাসচিবের সামনে বিএনপি নেতাকর্মীদের মারামারি বিষয়ে তিনি বলেন, লজ্জা কর বিষয় যে মহাসচিবের সামনে মারামারি হয়। তাদের মহাসচিবের সামনে মারামারি হয় এবং বাগবিতণ্ডা হয়। সেই বাগবিতণ্ডা থামানোর জন্য মহাসচিবকে আবার চিল্লাচিল্লি করতে হয়। এটি বিএনপির জন্য সত্যিই লজ্জাকর।
‘যারা নিজেদের শৃঙ্খলা রাখতে পারে না, একটি সমাবেশের শৃঙ্খলা রাখতে পারে না, সমাবেশ করতে গিয়ে নিজের নিজেরা মারামারি করে, তারা দেশটা কীভাবে চালাবে সরকারে গেলে সেটি বিবেচ্য বিষয়’ বলেন তথ্যমন্ত্রী।
স্থানীয় সরকার নির্বাচনের সহিংসতার বিষয়ে তিনি বলেন, আওয়ামী লীগের বাইরেও বিভিন্ন দলীয় ঘরনার সঙ্গে যুক্ত লোকজন ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে অংশ নিয়েছে। অবশ্যই নির্বাচনে হানাহানি সেটা দুঃখজনক, কিন্তু স্থানীয় সরকার নির্বাচনে বাংলাদেশে সবসময় এ ধরনের হানাহানি হয়ে এসেছে। পার্শ্ববর্তী দেশ ভারতে পশ্চিম বাংলায় যখন স্থানীয় সরকার নির্বাচন হয় তখনও ব্যাপক হানাহানি হয়। তবে কোনো হানাহানিই কাম্য নয়।
নদী বন্দর / পিকে