করোনাভাইরাসের সংক্রমণরোধে টিকাদান কার্যক্রম দ্রুত এগিয়ে চলেছে। রাজধানীসহ সারাদেশে সরকারিভাবে বিনামূল্যে টিকা দেওয়া হচ্ছে। টিকা দেওয়ার ফল বয়স্ক থেকে শুরু করে কিশোর, তরুণ ও যুবকদের শরীরে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বেড়েছে। ফলে দেশে সংক্রমণ বাড়লেও হাসপাতালে করোনা রোগী ভর্তির চাপ কমেছে।
গত বছরের ২৭ জানুয়ারি দেশে আনুষ্ঠানিকভাবে করোনাভাইরাসের টিকাদান কর্মসূচির উদ্বোধন করে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। রাজধানীর কুর্মিটোলা হাসপাতালে ওইদিন একজন স্বাস্থ্যকর্মীকে অক্সফোর্ড অ্যাস্ট্রাজেনেকার টিকা দেওয়া হয়। সেই হিসাবে টিকাদান কর্মসূচির এক বছর পূর্ণ হচ্ছে আজ বৃহস্পতিবার (২৭ জানুয়ারি)। এই এক বছরে দেশে প্রায় পৌনে ১৬ কোটি মানুষ টিকা পেয়েছেন।
জানা গেছে, বর্তমানে দেশে পাঁচ ধরনের টিকা দেওয়া হয়েছে। ভারতের সিরাম ইনস্টিটিউটে উৎপাদিত অক্সফোর্ড অ্যাস্ট্রাজেনেকার টিকা, ফাইজার, মডার্না, সিনোফার্ম, সিনোভ্যাকের টিকা দেওয়া হচ্ছে।
২০২১ সালের ২৭ জানুয়ারি থেকে ২৬ জানুয়ারি পর্যন্ত দেশে সর্বমোট ১৫ কোটি ৭৩ লাখ ৩২ হাজার ৮৩১ ডোজ টিকা দেওয়া হয়েছে। তার মধ্যে প্রথম ডোজ ৯ কোটি ৫৮ লাখ ৯৫ হাজার ৩০২টি এবং দ্বিতীয় ডোজ ৬ কোটি ৯৯ হাজার ৪১০টি। এছাড়া বুস্টার ডোজ দেওয়া হয়েছে ১৩ লাখ ৩৮ হাজার ১১৯টি।
বুধবার (২৬ জানুয়ারি) স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের পরিচালক (এমআইএস ও লাইন ডিরেক্টর এইচআইএস) অধ্যাপক ডা. মিজানুর রহমানের পাঠানো সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে তথ্য জানানো হয়।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, সর্বশেষ ২৪ ঘণ্টায় দেশে ৯ লাখ ১৬ হাজার ২২৭ ডোজ টিকা দেওয়া হয়েছে। তাদের মধ্যে প্রথম ডোজ নিয়েছেন ৪ লাখ ৫৪ হাজার ৯৮১ জন এবং দ্বিতীয় ডোজ নিয়েছেন ৩ লাখ ৮৭ হাজার ৮৭২ জন। এছাড়া বুস্টার ডোজ নেন ৭৩ হাজার ৩৭ জন।
দেশে এখন পর্যন্ত শিক্ষার্থীদের ১ কোটি ৫৫ লাখ ৯৪ হাজার ৩২২ ডোজ টিকা দেওয়া হয়েছে। তাদের মধ্যে প্রথম ডোজ নিয়েছেন ১ কোটি ৩৭ লাখ ৫৭ হাজার ৫১৭ জন এবং দ্বিতীয় ডোজ পেয়েছেন ১৮ লাখ ৩৬ হাজার ৮০৫ জন শিক্ষার্থী।
তৃণমূল পর্য়ায়ে কমিউনিটি ক্লিনিকে ১ কোটি ৭৯ লাখ ৫৬ হাজার ৫৫১ ডোজ টিকা দেওয়া হয়েছে। তার মধ্যে প্রথম ডোজ নিয়েছেন ১ কোটি ৮০ লাখ ৯ হাজার ২৩১ জন ও দ্বিতীয় ডোজ নিয়েছেন ৯৯ লাখ ৪৭ হাজার ৩২০ জন।
এদিকে, স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেকসহ স্বাস্থ্য ও রোগতত্ত্ব বিশেষজ্ঞরা বলছেন, দেশে করোনার টিকাদানে সুফল মিলেছে। বয়স্কদের বড় একটি অংশ দুই ডোজ টিকা পাওয়ায় হাসপাতালে রোগী ভর্তির চাপ ও মৃত্যু কমেছে। ওমিক্রনের প্রভাবে দেশে রোগী বাড়ছে। তবে সেই হারে হাসপাতালে রোগী ভর্তি কম হচ্ছেন। মৃত্যুর হারও কম।
সম্প্রতি এক সভায় স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক বলেন, করোনার শুরুর দিকে হাসপাতালগুলোতে পর্যাপ্ত চিকিৎসার ব্যবস্থা ছিল না। রোগটি নতুন হওয়ায় চিকিৎসক, নার্সরা চিকিৎসা বিষয়ে অভিজ্ঞ ছিল না। তবে দুই বছরে রোগীদের চিকিৎসা দিতে দিতে চিকিৎসক ও নার্সসহ স্বাস্থ্যকর্মীরা অভিজ্ঞ হয়েছেন। হাসপাতালগুলোতেও সব ধরনের সুযোগসুবিধা নিশ্চিত করা হয়েছে। এখন সরকারি ও বেসরকারি হাসপাতালে চিকিৎসা সুবিধা বেড়েছে।
নদী বন্দর / সিএফ