আকস্মিক বন্যায় চলনবিলের নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হওয়ায় নাবিজাতের বোরো ধান ডুবে গেছে। এতে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন এই এলাকার অনেক কৃষক। ঈদে মৌসুমি শ্রমিকেরা বাড়ি চলে যাওয়ার পরপরই আকস্মিক পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় চলনবিলের তাড়াশ, উল্লাপাড়া, শাহজাদপুর, নাটোরের সিংড়া ও গুরুদাসপুর উপজেলার বিস্তীর্ণ অঞ্চল তলিয়ে যায়।
ধান ডুবে যাওয়ায় ধান কাটার শ্রমিক না পেয়ে হারভেস্টার মেশিন দিয়ে ধান কাটার চেষ্টা চালায় কৃষকরা। কিন্তু পানি অব্যাহত বৃদ্ধি পাওয়ায় অনেকটা বিপাকে পড়েছেন তারা। ঈদের আনন্দ ফেলেই নৌকা নিয়ে ডুবে যাওয়া ধান কেটে নিচ্ছেন।
তবে কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর বলছে, এ অঞ্চলে প্রায় ৯০ ভাগ ধান কাটা সম্পন্ন হয়েছে। চলনবিল অঞ্চলের নিম্নাঞ্চলের জমিগুলোতে পানি উঠে পড়ায় কিছু জমির ধান তলিয়ে গেছে। তবে কৃষকরা সে ধান কেটে নিচ্ছে।
পানি উন্নয়ন বোর্ডের সূত্র জানায়, স্থানীয়ভাবে ভারি বৃষ্টিপাতের কারণে চলনবিল অঞ্চলে এ বন্যা দেখা দিয়েছে। চলনবিলের মাঝ দিয়ে প্রবাহিত ১৬টি নদ-নদীর মধ্যে আত্রাই ও ভদ্রাবতী নদী দিয়ে উজানের ঢলের পানি নিম্নধারা যমুনায় গিয়ে মিশে যায়। কিন্তু বন্যা পূর্বাভাস ও সতর্কীকরণ কেন্দ্রের পাঠানো এক বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, আগামী ৫ দিন যমুনার পানি বিপৎসীমার নীচ দিয়ে প্রবাহিত হবে।
সরেজমিনে নাটোরের সিংড়া উপজেলার বিয়াস, গুরুদাসপুর উপজেলার রুহাই, সিরাজগঞ্জের তাড়াশ উপজেলার মাগুড়াবিনোদ, উল্লাপাড়া উপজেলার রহিমপর ও শাহজাদপুর এলাকার পোতাজিয়া পয়েন্টে খোঁজ নিয়ে জানা যায়, হারভেস্টার মেশিন দিয়ে ধান কাটতে নেয়া হচ্ছে বিঘা প্রতি ৬ হাজার টাকা। কিন্তু পানি বৃদ্ধির সঙ্গে সঙ্গে মেশিন ডুবে যাওয়ায় তা দিয়েও আর ধান কাটা সম্ভব হচ্ছে না।
রাউতারা বাঁধের কারণে কিছু রক্ষা হলেও বৃষ্টি অব্যাহত থাকায় পানি বৃদ্ধি পেয়ে ফসল তলিয়ে যাচ্ছে। তাড়াশ উপজেলার মাগুড়া মুকন্দ গ্রামে গিয়ে দেখা যায়, গলা পানিতে নেমে কৃষক ধান কাটার চেষ্টা করছেন।
সিংড়া-তাড়াশ সংযোগস্থলের রানী ভবানী ব্রিজের উজানে গিয়ে দেখা যায়, ভদ্রাবতী নদীর উপর নির্মিত জলকপাট উপচে পানি প্রবাহিত হচ্ছে।
তাড়াশ কৃষি আবহাওয়া পর্যবেক্ষণাগারের সূত্র বলছে, আগামী ৫ দিন এ অঞ্চলে বৃষ্টিপাতের প্রবণতা বৃদ্ধি পেতে পারে।
নদীবন্দর/জেএস