বগুড়ার শেরপুরে ব্রিজ নির্মাণে অনিয়মের অভিযোগ উঠেছে। ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের অবহেলা ও স্থানীয় প্রশাসনের দায়িত্বহীনতার কারণে খামারকান্দি ইউনিয়নের ঝাঁজর গ্রামের হাজার হাজার মানুষ গৃহবন্দি হয়ে পড়েছে। মোটা অংকের অর্থ আত্মসাতের উদ্দেশে বিকল্প রাস্তা নির্মাণ না করে পুরনো ব্রিজ ভেঙে ফেলায় এই দুর্ভোগের সৃষ্টি হয়েছে।ব
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, শেরপুর থেকে পার্শ্ববর্তী উপজেলা ধুনটের সঙ্গে যোগাযোগের উন্নতির লক্ষ্যে ঝাঁজরের চেঙ্গামারী খালের ওপর নির্মিত হচ্ছে ৬০.০৫ মিটার আরসিসি গার্ডার ব্রিজ। স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তরের অধীনে গ্রামীণ সেতুর জন্য সহায়তা কার্যক্রম প্রকল্পের আওতায় ছয় কোটি ৮৮ লক্ষ ৪২ হাজার ৫৮ টাকা ব্যয়ে নির্মিত ব্রিজটি গত ২২ ফেব্রুয়ারি শুরু হয়ে আগামী বছরের ৮ আগস্টে শেষ হওয়ার কথা।
টেন্ডার চুক্তি অনুযায়ী নির্মাণকালে জনগণের চলাচল নির্বিঘ্নে করতে আট লাখ টাকা ব্যয়ে বিকল্প রাস্তা নির্মাণ করার কথা। কিন্তু স্থানীয়দের অনুরোধ সত্ত্বেও কর্ণপাত করেনি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান। ফলে গত কয়েক দিনের বৃষ্টিতেই জলাশয়ে পরিণত হয়েছে নির্মাণাধীন স্থানটি। গত দুই সপ্তাহের বেশি সময় ধরে উপজেলা সদর থেকে বিছিন্ন হয়েছেন ঝাজর গ্রামের হাজার হাজার মানুষ।
কয়েকজন এলাকাবাসী বলেন, কাজ শুরু করার সময় আমরা ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানকে বিকল্প সড়ক তৈরির জন্য বার বার অনুরোধ করেছি। কিন্তু তারা করে নাই। শুষ্ক মৌসুমে ব্রিজের পাশের জমি দিয়ে চলাচল করতে পারলেও ঈদের দুইদিন আগে থেকে আমরা গৃহবন্দি হয়ে আছি। রাস্তা না থাকার কারণে জমির ধান ঘরে তুলতে পারছেন না বলে জানালেন স্থানীয় কৃষকরা।
তারা বলেন, দুদিন আগে জমির ধান কেটে রেখেছি। সেই ধান বাড়ি আনার জন্য প্রায় ৯ কিলোমিটার রাস্তা ঘুরতে হবে। পরিবহণ খরচ দ্বিগুণেরও বেশি হবে। তাই জমিতে রেখেই পাহারা দিচ্ছি।
এ বিষয়ে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান মেসার্স মাসুমা বেগমের স্বত্বধিকারীর সঙ্গে ফোনে যোগাযোগ করা হলে তারা কোন মন্তব্য করেননি।
জনগণের ভোগান্তির কারণ জানতে চাইলে উপজেলা প্রকৌশলী মো. লিয়াকত হোসেন বলেন, এই কাজের টেন্ডার জেলা নির্বাহী প্রকৌশলীর দপ্তর থেকে দেওয়া হয়েছে। তাই সেটার সব দায়িত্ব তাদের। এ বিষয়ে আমি কিছুই বলতে পারব না।
এ প্রসঙ্গে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. ময়নুল ইসলাম বলেন, ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান ও সংশ্লিষ্ট অফিসের সঙ্গে আলোচনা করে দ্রুত সময়ের মধ্যে সমস্যার সমাধান করা হবে।
নদী বন্দর/এসএফ