1. badsha.dru@gmail.com : admi2017 :
  2. nadibandar2020@gmail.com : Nadi Bandar : Nadi Bandar
লৌহজংয়ের মানচিত্রে ফের ছোবল! - Nadibandar.com
শুক্রবার, ০১ নভেম্বর ২০২৪, ১০:২৮ পূর্বাহ্ন
মুন্সিগঞ্জ প্রতিনিধি:
  • আপডেট টাইম : সোমবার, ২৩ মে, ২০২২
  • ২২০ বার পঠিত

বর্ষা মৌসুম শুরুর আগেই উজান থেকে নেমে আসা ঢলের পানির তীব্র স্রোত আর পদ্মায় অপরিকল্পিতভাবে ড্রেজিং ও নদীতে শত শত বাল্কহেড চলাচলে ঢেউয়ের তোড়ে নতুন করে শুরু হয়ে লৌহজংয়ে পদ্মার ভাঙনের খেলা। আবারো র্সবনাশা পদ্মায় ছোবল দিয়েছে মুন্সীগঞ্জের লৌহজংয়ের মানচিত্রে।

প্রতিবছরই আঘাত হানছে আড়াই লাখ জনসংখ্যার বসবাসরত লৌহজং উপজেলার মানচিত্রে। উপজেলার লৌহজং-তেউটিয়া ইউনিয়নের বড় নওপাড়া গ্রামের ৩নং ওয়ার্ডে সপ্তাহখানেক যাবত ভাঙন শুরু হয়েছে।

রোববার সরেজমিন দেখা যায়, বড় নওপাড়া গ্রামের পারুল বেগম দুপুরে রান্নাঘরে রান্না বসিয়েছেন। তার রান্না ঘরটি একাংশ পদ্মাগর্ভে বিলীন হয়ে গেছে শনিবার রাতে। আর কিছু অংশ রয়েছে যে কোনো সময় তাও পদ্মাগর্ভে চলে যেতে পারে- এমন আতঙ্ক নিয়েই তিনি রান্না করছেন।

শুক্রবার দিবাগত গভীর রাতে হোসেন মোল্লার ৪শ বছররে পুরনো ভিটেবাড়ি ভেঙে যায়। পরে তড়িঘড়ি করে ঘরটি ভেঙে অন্য স্থানে সরিয়ে রাখে। এমনি করে একই এলাকার নদীর পাড়ে অবস্থিত রাব্বি শেখ, গাজী রাজ বংশী, মো. রাসেল মাদবর, ইসমাইল শেখ, শুভ্র পাল রাজবংশী ও হাজী মো. হোসেন মোল্লার বাড়িটি নদীগর্ভে বিলীন হয়ে যায়। মিঠু মোল্লার একটি ঘরের আংশিক পদ্মার গর্ভে।

এছাড়া আবু বকর সিদ্দিক মোল্লার বাড়ি, মো. হুমায়ুন মোল্লার বাড়ি, মো. শাহজাহান মোল্লার বাড়ি, মো. সারোয়ার মোল্লার বাড়ি, এই ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান মরহুম আব্দুর রশিদ মোল্লার বাড়ি  ভাঙনের মুখে রয়েছে। সেই সঙ্গে বড় নওপাড়া গ্রামরে প্রায় দুই শতাধিক পরিবারের ভিটেবাড়ি ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থায় রয়েছে। কখন পদ্মায় গিলে খায় সে আতঙ্কে নিঘুম দিন কাটাচ্ছে নদীর পাড়ের মানুষ।

আবু বক্কর সিদ্দিক জানান, প্রায় ২৫ বছর যাবত আমি এই বাসায় থাকি। আমার বাসার এক তলা দালানটি অর্ধেক নদীগর্ভে ইতোমধ্যে বিলীন হয়ে গেছে বাকিটুকু কখন যে নদীতে বিলীন হয়ে যায় সেই চিন্তায় আছি। সামনের বাড়িঘর সব পদ্মায় বিলীন হয়ে গেছে। আমরা এখন কোথায় যাব?

ফরিদ মাঝি বলেন, গত ৩ দশক যাবত দেখছি প্রতি বছর গ্রামের পর গ্রাম পদ্মায় বিলীন হয়ে যাচ্ছে।

ফাতেমা বেগম জানান, ১৭ বছর যাবত বিয়ে হয়েছে। আশপাশে নদী দেখিনি। এখন নদীর প্রতিটি ঢেউ কানে বাজে। আমরা আতঙ্কে দিনরাত কাটাচ্ছি। রাতে ঘুমাতেও পারি না। মনে হয় এই বুঝি পদ্মায় খেয়ে ফেলবে। দ্রুত এ ভাঙনের স্থায়ী সমাধান চাই।

এদিকে ভাঙনের খবর পেয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোহাম্মদ আবদুল আউয়াল ছুটে আসনে ঘটনাস্থলে। তিনি ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন এবং জেলা প্রশাসক ও পানি উন্নয়ন বোর্ডের কর্মকর্তাকে বিষয়টি অবগত করান। তাৎক্ষণিক পানি উন্নয়ন বোর্ডের এক কর্মকর্তা ভাঙন এলাকায় আসনে এবং ভাঙন রোধে জিওব্যাগ ফেলার আশ্বাস প্রদান করেন।

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোহাম্মদ আবদুল আউয়াল জানান, গত বুধবার লৌহজং-টঙ্গীবাড়ি উপজেলায় ৪৪৬ কোটি টাকার স্থানীয় বাঁধ নির্মাণ কাজের উদ্বোধন করেন বাংলাদেশ সরকারের পানিসম্পদ উপমন্ত্রী একেএম এনামুল হক শামীম। সেই পরিপ্রেক্ষিতে প্রথমে জিওব্যাগ ফেলে ফাউন্ডেশন করা হচ্ছে। তারপর পাথর দিয়ে বাঁধ দেওয়া হবে।

আর এখন চলছে বর্ষা মৌসুম সেক্ষেত্রে পদ্মায় স্রোতের তীব্রতা দিন দিন বাড়ছে। আর লৌহজংয়ে নদীর পাড়গুলোতে ঢেউয়ে ভাঙন শুরু হয়েছে। আমি পানি উন্নয়ন বোর্ডকে ডেকেছি এবং দ্রুত ভাঙন রোধে জিওব্যাগ ফেলার জন্য বলেছি। তারা আগামী দুই-এক দিনের মধ্যে এসব এলাকায় ভাঙন রোধে জিওব্যাগ ফেলবে। আশা করছি স্থায়ী বাঁধ হয়ে গেলে এসব সমস্যায় আর পড়বে না লৌহজংবাসী।

নদী বন্দর/এসএফ

নিউজটি শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এ জাতীয় আরো খবর..
© All rights reserved © 2020 Nadibandar.Com
Theme Developed BY ThemesBazar.Com