1. badsha.dru@gmail.com : admi2017 :
  2. nadibandar2020@gmail.com : Nadi Bandar : Nadi Bandar
মাথাচাড়া দিচ্ছে ‘খাদ্য জাতীয়তাবাদ’, দেশে দেশে বন্ধ রপ্তানি - Nadibandar.com
বুধবার, ০৬ নভেম্বর ২০২৪, ১০:৪২ পূর্বাহ্ন
নদী বন্দর প্রতিনিধি:
  • আপডেট টাইম : শনিবার, ২৮ মে, ২০২২
  • ১০০ বার পঠিত

স্থানীয় বাজারে দাম কমানোর কথা বলে কিছুদিন আগে গম রপ্তানি নিষিদ্ধ করেছে ভারত। এর দু’সপ্তাহ যেতে না যেতেই চিনি রপ্তানি সীমিত করার ঘোষণা দিয়েছে দেশটি। বিশ্বের এক নম্বর চিনি উৎপাদনকারী ভারত সিদ্ধান্ত নিয়েছে, এ বছর সর্বোচ্চ এক কোটি টন চিনি রপ্তানি করবে এবং রপ্তানির আগে সরকারের কাছে থেকে ব্যবসায়ীদের অনুমতি নিতে হবে।

ভারতের এই সিদ্ধান্তের পরপরই আন্তর্জাতিক বাজারে চিনির দাম বেড়ে যায় প্রায় এক শতাংশ। এমনিতেই গত জানুয়ারি থেকে আন্তর্জাতিক বাজারে চিনির দাম বেড়েছে ১৩ শতাংশ এবং গত বছরের একই সময়ের তুলনায় বর্তমানে দাম ২৬ শতাংশ বেশি।

এর দুদিন আগে মালয়েশিয়া জানিয়েছে, আগামী জুন মাস থেকে তারা মুরগি ও মুরগির মাংস রপ্তানি কমিয়ে দেবে। কারণ হিসেবে বলা হচ্ছে, অভ্যন্তরীণ বাজারে ঘাটতি দেখা দিয়েছে।

jagonews24

এর আগে পাম অয়েল রপ্তানি নিষিদ্ধ করেছিল ইন্দোনেশিয়া। প্রায় তিন সপ্তাহ পর গত ২৩ মে এ নিষেধাজ্ঞা তুলে নিয়েছে তারা।

একের পর এক দেশে এভাবে খাদ্য রপ্তানিতে এমন সময়ে বিধিনিষেধ আরোপ করা হচ্ছে, যখন ইউক্রেন যুদ্ধের প্রভাবে বিশ্ববাজারে গত কয়েক দশকের মধ্যে সবচেয়ে ভয়াবহ সংকট তৈরি হয়েছে।

এ বিষয়ে সিঙ্গাপুরের এক অর্থনীতিবিদ উদ্বেগ প্রকাশ করে বলেছেন, এশিয়ার অনেক দেশে এক ধরনের ‘খাদ্য জাতীয়তাবাদ’ মাথাচাড়া দিয়েছে। এসব দেশ অভ্যন্তরীণ বাজার নিয়ন্ত্রণে রাখার চিন্তায় বাকি দেশগুলোর প্রয়োজনকে অগ্রাহ্য করছে।

যেমন, মালয়েশিয়ায় গত কয়েক মাসে মুরগির দাম এমনভাবে বেড়েছে যে, ক্রেতাদের মাংস কেনায় সর্বোচ্চ সীমা বেঁধে দেওয়া হয়েছে। দক্ষিণপূর্ব এশিয়ার দেশটি প্রতি মাসে ৩৬ লাখ মুরগি রপ্তানি করে।

jagonews24

গত সোমবার মালয়েশিয়ার প্রধানমন্ত্রী ইসমাইল সাবরি ইয়াকুব বলেছেন, অভ্যন্তরীণ বাজারের দাম ও উৎপাদন স্থিতিশীল না হওয়া পর্যন্ত মুরগি রপ্তানি বন্ধ থাকবে। তিনি স্পষ্ট বলে দিয়েছেন, দেশের মানুষের প্রয়োজন সরকারের এক নম্বর অগ্রাধিকার।

সিঙ্গাপুরে মুরগির চাহিদার এক-তৃতীয়াংশই আমদানি করা হয় মালয়েশিয়া থেকে। ফলে, স্বাভাবিকভাবেই সে দেশে উদ্বেগ দেখা দিয়েছে। গত ২৩ মে মালয়েশিয়ার এ সিদ্ধান্তের পর সিঙ্গাপুরের খাদ্য কর্তৃপক্ষকে বাজারে ‘প্যানিক বায়িং’ ঠেকাতে ব্যবস্থা নিতে হয়েছে। মানুষকে ‘যতটুকু প্রয়োজন’ কেবল ততটুকু কেনার পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে।

ইউক্রেন যুদ্ধের পরিণতি
ইন্দোনেশিয়ার পাম অয়েল, মালয়েশিয়ার মুরগি আর ভারতের গম রপ্তানি নিষিদ্ধকরণ – এগুলো বিশ্বে চলমান খাদ্য সংকটের দু-চারটি নমুনা মাত্র। খাদ্য বাজারের সার্বিক পরিস্থিতি আরও উদ্বেজনক।

সম্প্রতি বিশ্বব্যাংক সতর্ক করেছে, বাজারে যেভাবে খাদ্যের দাম বাড়ছে তাতে সারা বিশ্বের কোটি কোটি মানুষ দারিদ্র্য ও পুষ্টিহীনতার কবলে পড়বে।

jagonews24

বিশ্বের অন্যতম শীর্ষ গম রপ্তানিকারক ইউক্রেন। রাশিয়ার সঙ্গে যুদ্ধের কারণে সেদেশ থেকে গম রপ্তানি প্রায় বন্ধ। তাতে বিশ্ববাজারে গমের বাজারের দাম বেড়েই চলেছে এবং মিসরের মত যেসব দেশ খাদ্যের জন্য ইউক্রেনের ওপর নির্ভরশীল, তাদের মধ্যে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়েছে।

সম্প্রতি ইউক্রেনের উপ-প্রধানমন্ত্রী ইউরিয়া স্ভিরিদেংকো বলেছেন, তার দেশে লাখ লাখ টন শস্য গুদামে পড়ে রয়েছে। আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের উচিত একটি ‘সেফ প্যাসেজ’ তৈরি করে সেগুলো রপ্তানির ব্যবস্থা করা।

রাশিয়া বলছে, তারাই ইউক্রেনের খাদ্যশস্য রপ্তানি নিশ্চিত করবে, যদি তাদের ওপর চাপানো পশ্চিমা নিষেধাজ্ঞগুলো প্রত্যাহার করা হয়। তবে ইউরোপ-আমেরিকার পক্ষ থেকে এ বিষয়ে এখন পর্যন্ত আশানুরূপ কোনো সাড়া পাওয়া যায়নি। ফলে বিশ্ববাজারে ইউক্রেনের গম ও তেলবীজ প্রবেশ এখনো অনিশ্চিত।

মাথাচাড়া দিচ্ছে ‘খাদ্য জাতীয়তাবাদ’
গত ১৩ মে ভারত গম রপ্তানি নিষিদ্ধ করার পর বিশ্ববাজারে এর দাম আবারও বেড়েছে। খরার কারণে উৎপাদন কম ও অভ্যন্তরীণ বাজারে দাম বেড়ে যাওয়ায় এ সিদ্ধান্ত নেয় ভারত সরকার।

jagonews24

ইউক্রেন যুদ্ধের পাশাপাশি অস্বাভাবিক খরা ও বন্যায় অনেক দেশেই ফসল উৎপাদন হুমকিতে পড়েছে। ব্যবসায়ীরা আশা করছিলেন, ইউক্রেন যুদ্ধের ফলে শস্যবাজারে যে ঘাটতি দেখা দিয়েছে, ভারত থেকে বাড়তি গম আমদানি করে তার কিছু অংশ পূরণ করা যাবে। ভারত সরকারের পক্ষ থেকেও প্রথমদিকে এমন আশার বাণী শোনানো হয়েছিল। কিন্তু শেষপর্যন্ত নিজেদের সিদ্ধান্ত বদল করে তারা।

এভাবে বিভিন্ন দেশের সরকার যেভাবে খাদ্যপণ্য রপ্তানি নিষিদ্ধ করছে তাকে ‘খাদ্য জাতীয়তাবাদ’ বলে আখ্যা দিয়েছেন সিঙ্গাপুরের লি কুয়ান ইউ স্কুল অব পাবলিক পলিসির সহকারী অধ্যাপক সোনিয়া আক্তার। তিনি বলেন, সরকার এসব বিধিনিষেধ আরোপের কারণ, তারা মনে করছে, প্রথমে নিজের জনগণকে রক্ষা করতে হবে।

অধ্যাপক সোনিয়া বলেন, ২০০৭-২০০৮ সালের খাদ্য সংকটের অভিজ্ঞতা থেকে বলা যায়, এসব দেশ আবারও এ ধরনের রপ্তানি নিষেধাজ্ঞার পথে যাবে। এর ফলে খাদ্য সংকট বাড়বে এবং বাজারে খাবারের দামও বাড়তে থাকবে।

সূত্র: বিবিসি বাংলা

নদী বন্দর/এসএফ

নিউজটি শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এ জাতীয় আরো খবর..
© All rights reserved © 2020 Nadibandar.Com
Theme Developed BY ThemesBazar.Com