দেশের শীর্ষ লিগে অভিষেক হওয়ার পর টানা তিনবার শিরোপা জিতে ঘরোয়া ফুটবলে নতুন ইতিহাস গড়লো বসুন্ধরা কিংস। সোমবার মুন্সিগঞ্জের বীরশ্রেষ্ঠ মতিউর রহমান স্টেডিয়ামে সাইফ স্পোর্টিং ক্লাবকে ২-০ গোলে হারিয়ে দুই ম্যাচ হাতে রেখেই বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগে হ্যাটট্রিক শিরোপা জিতেছে লাল জার্সিধারীরা।
চ্যাম্পিয়ন নিশ্চিত হওয়া ম্যাচে কিংসের গোলদাতা মতিন মিয়া ও বিপলু আহমেদ। ২০ ম্যাচে ৫১ পয়েন্ট নিয়ে কিংস দুই ম্যাচ হাতে রেখে শিরোপা নিশ্চিত করেছে।
বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগের প্রথম তিন আসরের শিরোপা জিতে হ্যাটট্রিকের ইতিহাস গড়েছিলো আবাহনী। আকাশী-নীলদের সেই ইতিহাসে ভাগ বসালো ঘরোয়া ফুটবলে নতুন পরাশক্তি বসুন্ধরা কিংস।
এই ম্যাচ জিতলেই চ্যাম্পিয়ন-সেই হিসাব করেই বসুন্ধরা কিংস উৎসবের প্রস্তুতি নিয়ে গিয়েছিল মুন্সিগঞ্জ। তাদের প্রস্তুতি বৃথা যায়নি। ম্যাচ শেষ হওয়ার পরই উৎসবে নেমে পড়ে কিংস। চ্যাম্পিয়ন লেখা টি-শার্ট গায়ে জড়িয়ে উল্লাস করেন বসুন্ধরা কিংসের খেলোয়াড়-কর্মকর্তারা।
২৯ মিনিটে মতিন মিয়া দুর্দান্ত যে গোলটি করেন, সেটা চ্যাম্পিয়ন হওয়ার পথটা তৈরি করেছিল। পরে ৮১ মিনিটে বিপলু আহমেদ করেন দ্বিতীয় গোল। ৩৭ মিনিটে দ্বিতীয় হলুদ কার্ড পেয়ে মাঠ ছাড়েন কিংসের ডিফেন্ডার ইয়াছিন আরাফাত। যে কারণে দাঁতে দাঁত চেপে বাকি সময় গোল ধরে রেখে জয় নিয়ে মাঠ ছাড়ে অস্কার ব্রুজনের দল।
ব্রাজিলিয়ান মিগুয়েলের বল ধরে দারুণ দক্ষতায় জায়গা বুঝে বল জালে পাঠিয়ে নিজের যোগ্যতার প্রমাণ দেন মতিন। ইনজুরির কারণে এ ম্যাচে ছিলেন না কিংসের ব্রাজিলিয়ান সুপার স্টার রবসন রবিনহো। তার অনুপস্থিতি বুঝতে দেননি মতিন মিয়ারা। বদলী বিপলুর গোলটিও ছিল দুর্দান্ত। নুহা মারংয়ের কাছ থেকে বল পেয়ে নিঁখুত শটে গোল করেছেন।
দুই ম্যাচ হাতে রেখে শিরোপা নিশ্চিত করা বসুন্ধরা কিংসের লিগটা কিন্তু শুরু হয়েছিল হার দিয়ে। প্রথম ম্যাচেই তারা হেরে গিয়েছিল নবাগত স্বাধীনতা ক্রীড়া সংঘের কাছে। তার পর আর পেছনে ফিরে তাকায়নি কিংস।
টানা ৮ ম্যাচ জয়ের পর কিংস আটকে গিয়েছিল আবাহনীতে। ২-২ গোলে ড্র হয়েছিল ওই ম্যাচ। প্রথম পর্বের শেষটাও ভাল ছিল না কিংসের। শেখ জামালের বিপক্ষে ড্র করেছিল ৩-৩ গোলে। ওই ম্যাচটা হারতেই যাচ্ছিল তারা। কিন্তু শেষ দিকে দারুণভাবে হার এরিয়ে ম্যাচ ড্র করেছে কিংস।
দ্বিতীয় পর্বের ৭ তম ম্যাচে বসুন্ধরা কিংস ১-১ গোলে ড্র করেছিল মোহামেডানের বিপক্ষে। ওই ড্রয়ে আবাহনীর জন্য একটা সুযোগ এসেছিল লিগ শিরোপা লড়াইয়ে ফিরে আসার। কিন্তু আবাহনী সে সুযোগটা ধরে রাখতে পারেনি।
এই ম্যাচের ঠিক আগের ম্যাচটিতে বসুন্ধরা কিংস ১-০ গোলে হারিয়েছিল চট্টগ্রাম আবাহনীকে। কিন্তু লিগের প্রথম পর্বে চট্টলার দলটিকে কিংস হারিয়েছিল ৫-০ গোলে। যে জয়টি এবারের লিগে কিংসের সবচেয়ে বেশি গোলের।
২০ ম্যাচে ৫১ পয়েন্ট বসুন্ধরা কিংসের। যা নিশ্চিত করেছে শিরোপা। পেছনে থাকা আবাহনীর পয়েন্ট ১৯ ম্যাচে ৪১। বাকি তিন ম্যাচ জিতলে আবাহনীর হবে ৫০ পয়েন্ট। পরের ম্যাচেই আবাহনীর মুখোমুখি হবে বসুন্ধরা কিংস।
নদী বন্দর/এসএফ