1. badsha.dru@gmail.com : admi2017 :
  2. nadibandar2020@gmail.com : Nadi Bandar : Nadi Bandar
বরগুনায় বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধে ভাঙন - Nadibandar.com
শুক্রবার, ০১ নভেম্বর ২০২৪, ০৬:২২ পূর্বাহ্ন
বরগুনা প্রতিনিধি:
  • আপডেট টাইম : শনিবার, ১ এপ্রিল, ২০২৩
  • ১০০ বার পঠিত

বরগুনার তালতলী উপজেলার নিশানবাড়িয়া ইউনিয়নের তেঁতুলবাড়িয়া বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধে তীব্র ভাঙন দেখা দিয়েছে। গত এক সপ্তাহে বাঁধটির ৪৬০ মিটার নদী গর্ভে বিলিন হয়েছে। এছাড়াও বাঁধের কয়েকটি স্থানে বড় আকারের ফাটল ধরেছে। 

এদিকে, হঠাৎ বাঁধে ভাঙন দেখা দেওয়ায় দিশেহারা হয়ে পড়েছেন অন্তত ১০ হাজার মানুষ। তাদের দাবি, বসত ভিটা ও ফসলি জমি রক্ষায় দ্রুত টেকসই বাঁধ নির্মাণের। 

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, গত সোমবার রাতে পায়রা নদীর প্রবল স্রোতের কারণে তেঁতুলবাড়িয়া গ্রামের বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধে ভাঙন শুরু হয়। ভাঙনে বাঁধের দুটি অংশের প্রায় ২০০ মিটার পায়রা নদী গর্ভে বিলীন হয়ে গেছে। এরপরে ধীরে ধীরে ২৬০ মিটার বাঁধ ভেঙেছে। ভাঙন দেখা দেওয়ায় তেঁতুলবাড়িয়া, সোবাহানপাড়া, অংকুজানপাড়া ও জয়ালভাঙ্গা গ্রামের ১০ হাজার বাসিন্দা নির্ঘুম রাত কাটাচ্ছেন।

স্থানীয় বাসিন্দা জয়দেব ভদ্র বলেন, প্রায় ২০ বছর ধরে পায়রা নদীর ভাঙনে তেতুঁলবাড়িয়া ও জয়ালভাঙ্গা গ্রামের হাজার হাজার একর ফসলি জমি এবং ঘরবাড়ি নদী গর্ভে বিলিন হয়ে গেছে। সব হারিয়ে অনেকেই এলাকা ছেড়েছেন। 

নিশানবাড়িয়া ইউনিয়ন পরিষদের সদস্য আলম হাওলাদার বলেন, নতুন করে বাঁধে ভাঙন শুরু হওয়ায় তিন গ্রামের ১০ হাজার মানুষের মধ্যে আতঙ্ক দেখা দিয়েছে। ২০০৭ সালের প্রলয়ংকারী ঘুর্ণিঝড় সিডরে তালতলী উপজেলার বঙ্গোপসাগর মোহনায় পায়রা নদী সংলগ্ন তেতুঁলবাড়িয়া এলাকার এক কিলোমিটার বাঁধ ভেঙে নদী গর্ভে বিলীন হয়ে যায়। ওই বন্যায় নিশানবাড়িয়া ইউনিয়নের অন্তত ৪৭ জন মানুষ প্রাণ হারায়। বাঁধ ভাঙার ১৬ বছর পেরিয়ে গেলেও বরগুনা পানি উন্নয়ন বোর্ড টেকসই বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধ নির্মাণ করেনি। 

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, সিডরের ৮ বছর পরে ২০১৫ সালে বিশ্বব্যাংকের অর্থায়নে পরিকল্পনা ছাড়াই তেঁতুলবাড়িয়া ভাঙা বাঁধের ২০০ ফুটে নতুন বাঁধ নির্মাণ করা হয়। এতে অল্প দিনের মধ্যেই পায়রা নদীর গ্রাসে বিলীন হতে থাকে ওই বাঁধটি। ২০১৭ সালে বাঁধের একাংশ ভেঙে যায়। ওই সময় পানি উন্নয়ন বোর্ড জোড়াতালি দিয়ে বাঁধ মেরামত করেছিল।

তালতলীর নিশানবাড়িয়া ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান ড. মো. কামরুজ্জামান বাচ্চু বলেন, ২০২২ সালের ১৫ জুলাই বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধ নতুন করে ভাঙতে শুরু করে। ওই বছর বরগুনা পানি উন্নয়ন বোর্ড তেতুঁলবাড়িয়ায় ২৭০ মিটার বাঁধ সংস্কার করে। ওই বাঁধও নড়বড়ে ছিল।

পানি উন্নয়ন বোর্ড প্রতিবছর দায়সারা ভাবে জরুরী ভিত্তিতে ভাঙা বাঁধ মেরামত করলেও ওই বাঁধ বেশি দিন টিকে না। স্বাভাবিক জোয়ারের চেয়ে পানি বৃদ্ধি পেলেই বাঁধ উপচে অথবা ভেঙে লোকালয়ে পানি প্রবেশ করে এলাকা প্লাবিত হয়। শুকনো মৌসুমে ভালো থাকলেও বর্ষার মৌসুমে ওই এলাকার অন্তত ১০ হাজার মানুষ পরিবার পরিজন নিয়ে জলে ভেসে জীবন যাপন করে। 

তালতলী উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান রেজবি-উল কবির জোমাদ্দার বলেন, সিডরের পর অপরিকল্পিতভাবে বাঁধ নির্মাণ করায় গত ১৬ বছরে সাগর সংলগ্ন নিশানবাড়িয়া ইউনিয়নের তেতুঁলবাড়িয়া ও জয়ালভাঙ্গা গ্রামের অন্তত দের কিলোমিটার জমি নদীতে বিলিন হয়ে গেছে। দ্রুত টেকসই বাঁধ নির্মাণ করা না হলে পুরো নিশানবাড়িয়া ইউনিয়নের তালতলী মানচিত্র থেকে মুছে যাবে। 

তালতলী উপজেলা নির্বাহী অফিসার সিফাত আনোয়ার তুমপা বলেন, ঝুঁকিপূর্ণ বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধ পরিদর্শন করে ঝুঁকিতে থাকা বাড়ির নারী শিশু ও বৃদ্ধদের নিরাপদ আশ্রয়ে যেতে বলা হয়েছে। পানি উন্নয়ন বোর্ডের সঙ্গে কথা বলা হয়েছে। তারা দ্রুত বাঁধের মেরামত কাজ শুরু করবে।

বরগুনা পানি উন্নয়ন বোর্ডের উপ-বিভাগীয় প্রকৌশলী সুদীপ্ত চৌধুরী বলেন, পায়রা নদী সংলগ্ন ভেঙে যাওয়া বাঁধ এলাকা পরিদর্শন করেছেন পানি উন্নয়ন বোর্ডের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা। তাড়াতাড়ি রিং বাঁধের নির্মাণ কাজ শুরু করা হবে। 

বার বার জরুরী মেরামত না করে স্থায়ী বাঁধ কেন নির্মাণ করা যাচ্ছে না, এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, স্থায়ী বাঁধ নির্মাণে অনেক টাকা ব্যয় হয়। তাই সাময়িক নিরাপত্তার স্বার্থে অস্থায়ী বাঁধ নির্মাণ করা হয়েছে। স্থায়ীভাবে বাঁধ নির্মাণের জন্য অপেক্ষা করতে হবে।

নদী বন্দর/এসআরকে

নিউজটি শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এ জাতীয় আরো খবর..
© All rights reserved © 2020 Nadibandar.Com
Theme Developed BY ThemesBazar.Com