তথ্য ও সম্প্রচারমন্ত্রী এবং আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ড. হাছান মাহমুদ বলেছেন, ‘জামায়াত যেহেতু এখনো নিষিদ্ধ হয়নি, তারা রাজনৈতিক দল হিসেবে সমাবেশের জন্য আবেদন করেছিল, সেজন্য তাদের অনুমতি দেওয়া হয়েছে। তবে গতকাল (শনিবার) জামায়াতের নেতাদের যে বক্তব্য, এটি আসলে বিএনপির বক্তব্য।’
রোববার (১১ জুন) দুপুরে বঙ্গবন্ধুর জুলিও কুরি শান্তি পদকপ্রাপ্তির ৫০ বছরপূর্তি উপলক্ষে বইয়ের মোড়ক উন্মোচন করেন তথ্যমন্ত্রী। এরপর তিনি সাংবাদিকদের সঙ্গে সমসাময়িক বিষয় নিয়ে কথা বলেন। এ সময় ‘জামায়াতকে মাঠে নামার সুযোগ দেওয়া হলো কেন’ সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নের জবাবে মন্ত্রী এ কথা বলেন।
সচিবালয়ে তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়ের সম্মেলনকক্ষে মোড়ক উন্মোচনের আয়োজন করা হয়। এ সময় মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব ফারুক আহমেদ উপস্থিত ছিলেন।
আগামীতেও জামায়াতকে সমাবেশের অনুমতি দেওয়া হবে কি না, জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘যেকোনো রাজনৈতিক দল সমাবেশ করতে পারে। কোনো রাজনৈতিক দল নিষিদ্ধ হলে তাদের সভা-সমাবেশ করার অধিকার থাকে না। যতক্ষণ পর্যন্ত নিষিদ্ধ না হয়, তারা সভা-সমাবেশ করার অধিকার রাখে।’
জামায়াতের সমাবেশে বক্তারা বিএনপির সুরে সুর মিলিয়ে তত্ত্বাবধায়ক সরকার ছাড়া নির্বাচন হবে না বক্তব্য দিয়েছেন- এমন প্রশ্নের জবাবে হাছান মাহমুদ বলেন, ‘জামায়াতের সমাবেশ থেকে যেভাবে আস্ফালন করা হয়েছে। এগুলো আসলে জামায়াতের বক্তব্য নয়, বিএনপির বক্তব্য। তারা নির্বাচন প্রতিহত করার কথা বলেছে। অর্থাৎ ২০১৪ সালে যেভাবে নির্বাচন প্রতিহত করতে গিয়ে শত শত মানুষ পুড়িয়ে হত্যা করেছে। সেটারই ইঙ্গিত তারা গতকালও দিয়েছে। বিএনপির নেতৃত্বাধীন জোটের প্রধান শরিক হচ্ছে জামায়াত। বিএনপি জামায়াতকে দিয়ে এ কথাগুলো বলিয়েছে।’
আওয়ামী লীগের এ যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক বলেন, বাংলাদেশের মানুষ ২০১৩, ২০১৪ ও ২০১৫ সালের পুনরাবৃত্তি করতে দেবে না। তাদের সুযোগ দিলে যে তারা কী করতে পারে, সেটি গতকাল তাদের বক্তব্যে পরিষ্কার হয়েছে। এটি পরিষ্কার করারও প্রয়োজন ছিল।
একটি জাতীয় দৈনিকে প্রতিবেদন এসেছে যে, বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার গুলশান কার্যালয় সাজাতে বলা হয়েছে। বিষয়টিকে কীভাবে দেখছেন- এমন প্রশ্নে মন্ত্রী বলেন, ‘কোন পত্রিকায় কী লেখা হলো, কোন অফিস সাজানোর কথা বলা হলো, সেটার জবাব তো আমি দেবো না। যে পত্রিকায় লিখেছে, তাকে জিজ্ঞেস করুন। কোথায় অফিস সাজানো হচ্ছে। তারাই এটির উত্তর দেবেন।’
হাছান মাহমুদ বলেন, ‘আরও একটি বিষয় হচ্ছে, সামনে নির্বাচন। নির্বাচনে আমরা চাই সব রাজনৈতিক দল অংশগ্রহণ করুক। নির্বাচন মানে নির্বাচনের দিন নির্বাচন নয়। নির্বাচনের প্রক্রিয়া শুরু হয় অনেক আগে থেকে। নির্বাচনের বাকি মাত্র ছয়মাস। এ সময় সব রাজনৈতিক দল সভা-সমাবেশ করবে। নির্বাচনের পরিবেশ তৈরি করবে, এটিই স্বাভাবিক।
সে কারণে বিভিন্ন রাজনৈতিক দল সভা-সমাবেশ করছে। কিন্তু বিএনপি-জামায়াতের উদ্দেশ্য কিন্তু তা নয়। আমরা অতীত যদি পর্যালোচনা করি, তাদের সাম্প্রতিক বক্তব্য যদি ব্যাখা করি, তাহলে দেখতে পাবো- তারা অতীতের পুনরাবৃত্তি করার চেষ্টা চালাচ্ছে। তবে এদেশের মানুষ এটা হতে দেবে না।’
নদী বন্দর/এসএস