ঘরের মাঠে সফরকারী আফগানিস্তানকে নিয়ে রীতিমত ছেলেখেলা করেছে বাংলাদেশ দল। নাজমুল হোসেন শান্তর সেঞ্চুরিতে নিজেদের প্রথম ইনিংসে ৩৮২ রান সংগ্রহ করেছিল টাইগাররা। এরপর আফগানরা ব্যাটিংয়ে নামার পর টাইগারদের বোলিং তোপে মাত্র ১৪৬ রানে অলআউট হয়ে গেছে। ফলে ২৩৬ রানের বিশাল লিড নিয়ে দ্বিতীয় ইনিংসে আবারও ব্যাটিংয়ে নামছে লিটন দাসের দল।
বৃহস্পতিবার (১৫ জুন) মিরপুরের ‘হোম অব ক্রিকেট’ শের-ই বাংলা জাতীয় ক্রিকেট স্টেডিয়ামে আগের দিনের ৫ উইকেটে ৩৬২ রান নিয়ে দ্বিতীয় দিনের খেলা শুরু করেছিল বাংলাদেশ। তবে এদিন মাত্র সাত ওভার ব্যাটিং করে ২০ রান যোগ করতেই অলআউট হয়ে যায় টাইগাররা।
বোলিংয়ে আফগানিস্তানের হয়ে অভিষিক্ত পেসার নিজাত মাসুদ ৭৯ রানে ৫ উইকেট পান। ইয়ামিন আহমাদজাই ২ টি উইকেট পান। এছাড়া রহমত শাহ, জহির খান ও আমির হামজার শিকার একটি করে।
এরপর নিজেদের প্রথম ইনিংসে ব্যাট করতে নেমে ইনিংসের ষষ্ঠ ওভারে শরিফুলের করা দ্বিতীয় বলে ডিফেন্স করতে গিয়ে উইকেটের পেছনে লিটন দাসের হাতে ধরা পড়েন ইব্রাহিম। সাজঘরে ফেরার আগে ১৭ বলে ৬ রান করেন আফগান এই ওপেনার।
ইব্রাহিমের বিদায়ের পর আর বেশিক্ষণ টিকতে পারেননি আরেক ওপেনার আব্দুল মালিক। এবাদতের করা ইনিংসের ৭তম ওভারের পঞ্চম বলে তৃতীয় স্লিপে জাকির হাসানের তালুবন্দি হয়ে সাজঘরে ফেরেন এই ওপেনার। বিদায়ের আগে ১৭ রান করেন এই ব্যাটার।
নতুন বল হাতে ভয়ংকর হয়ে ওঠা এবাদত আরও একবার আঘাত হানেন আফগান শিবিরে। ১১তম ওভারের চতুর্থ বলটি শর্ট লেন্থে করে ব্যাটার রহমত শাহকে পরাস্ত করেন তিনি। রহমতের ব্যাটের কানায় লেগে ওপরে উঠে গেলে মিডউইকেটে সহজ ক্যাচ নেন তাসকিন। ফলে ৯ রানেই বিদায় নেন এই ব্যাটার।
এরপরই লাঞ্চ বিরতির ঘোষণা দেন আম্পায়াররা। তবে বিরতি থেকে ফিরেও জুটি গড়তে পারেননি সফরকারীরা। দলীয় ৫১ রানের মাথায় আফগান অধিনায়ক হাসমতউল্লাহ শহীদিকে মিরাজের ক্যাচে পরিনত করেন পেসার শরিফুল ইসলাম। বিদায়ের আগে তিনিও করেন ১৬ বলে এক বাউন্ডারিতে ৯ রান।
তবে পঞ্চম উইকেটে নাসির জামাল ও আফসার জাজাই মিলে পাল্টা আক্রমণ চালিয়ে প্রতিরোধ গড়ার চেষ্টা করেন। পঞ্চম উইকেট জুটিতে তারা দুজনে মিলে ৬৫ রানের জুটিও গড়ে ফেলেছিলেন। যার ফলে আর কোনো বিপর্যয় না ঘটিয়েই দলের সংগ্রহ এক শো ছাড়িয়ে নিয়ে যান তারা।
বিপজ্জনক হয়ে ওঠা এই জুটি ভেঙে বাংলাদেশকে ব্রেক থ্রু এনে দেন স্পিনার মেহেদি হাসান মিরাজ। দলীয় ১১৬ রানের মাঠয় মিরাজের অফস্পিন বল ব্যাটে লাগাতে ব্যর্থ হন নাসির। ফলে বল গিয়ে সোজা লাগে তা প্যাডে। মিরাজের আবেদনে সাড়া দিয়ে আম্পায়ার আঙুল তুলে দেন। রিভিঊ নিয়েও নিজেকে রক্ষা করতে পারেননি নাসির, ৪৩ বলে ৬ বাউন্ডারিতে ৩৫ রান করেন তিনি।
মিরাজের পরের ওভারেই আফসার জাজাইকে বিদায় করেন এবাদত। বিদায়ের আগে ৩৬ রান করেন এই উইকেটকিপার ব্যাটার। এরপর অবশ্য দ্রত ফিরে যান ইয়ামিন আহমেদাজাই এবং আমির হামজা। ফলে দলীয় ১২৮ রানের মধ্যেই ৮ উইকেট হারিয়ে ফলো-অনের শঙ্কায় পড়ে সফরকারীরা।
শেষ দিকে অভিষিক্ত অলরাউন্ডার করিম জানাত একাই লড়ে যাচ্ছিলেন। তবে যোগ্য সঙ্গী পাচ্ছিলেন না তিনি। ফলে নবম উইকেট হিসেবে ১৬ বলে ০ রানে ফেরেন আরেক অভিষিক্ত নিজাত মাসুদ। অবশ্য শেষ রক্ষাও হয়নি জানাতের, ফিরে যান ২৩ রান করেই মিরাজের বলে আউট হয়ে।
আফগানদের ফলো অন এড়াতে প্রয়োজন ছিল ১৮২ রান। তবে সেটা করতে পারেনি দলটির ব্যাটাররা, ১৪৬ রানেই অলআউট হয়ে যায় তারা। কিন্তু সফরকারীদের ফলোঅনে না পাঠিয়ে ফের ব্যাট করতে নামার সিদ্ধান্ত নেয় বাংলাদেশ দল। লিড আরও বড় করে ইনিংস ঘোষণা করে দিতে পারে টাইগাররা।
নদী বন্দর/এসএস