কলকারখানা ও প্রতিষ্ঠান অধিদপ্তরের দায়ের করা মামলায় ৬ মাসের সাজা পাওয়া নবেল বিজয়ী ড. মুহাম্মদ ইউনূসকে ৩০ দিনের মধ্যে আপিল করার শর্তে জামিন দিয়েছেন আদালত। একই মামলায় সাজা পাওয়া অপর তিন আসামি হলেন- গ্রামীণ টেলিকমের এমডি মো. আশরাফুল হাসান, পরিচালক নুরজাহান বেগম ও মো. শাহজাহান।
আজ সোমবার (১ জানুয়ারি) বিচারক বেগম শেখ মেরিনা সুলতানার আদালত এ রায় দেন। রায়ের বিপরীতে জামিনের আবেদন করা হলে আদালত আসামীদের জামিন মঞ্জুর করেন।
আদালতে ড. ইউনূসের পক্ষে রয়েছেন ব্যারিস্টার আব্দুল্লাহ আল মামুন, সারা হোসেন ও খাজা তানভীর আহমেদ । অপরদিকে কলকারখানার পক্ষে রয়েছেন এডভোকেট খুরশীদ আলম খান।
রায়ের পর ড. ইউনূসসহ চার জনের জামিন আবেদন করা হয়। আদালত ৫ হাজার টাকা মুচলেকায় তাদের জামিনের আদেশ দেন।
এর আগে রায় শুনতে দুপুর ১টা ৩৫ মিনিটের দিকে আদালতে হাজির হন ড. ইউনূস। ২টা ১২ মিনিটে ৮৪ পৃষ্ঠার রায় পড়া শুরু হয়।
গত ২৪ ডিসেম্বর মামলার যুক্তিতর্ক উপস্থাপন শেষে আদালত রায়ের এ তারিখ ঠিক করেন।
২০২১ সালের ৯ সেপ্টেম্বর ঢাকার তৃতীয় শ্রম আদালতে কলকারখানা ও প্রতিষ্ঠান অধিদপ্তরের শ্রম পরিদর্শক আরিফুজ্জামান বাদী হয়ে ড. ইউনূসসহ চার জনের বিরুদ্ধে এ মামলা করেন।
মামলায় শ্রমিক কল্যাণ ফাউন্ডেশনে নির্দিষ্ট লভ্যাংশ জমা না দেওয়া, শ্রমিকদের চাকরি স্থায়ী না করা, গণছুটি নগদায়ন না করায় শ্রম আইনের ৪-এর ৭, ৮, ১১৭ ও ২৩৪ ধারায় অভিযোগ আনা হয়। গত ৬ জুন ড. মুহাম্মদ ইউনূসসহ ৪ জনের বিরুদ্ধে মামলায় চার্জ গঠন করা হয়।
উল্লেখ্য, বিশিষ্ট ব্যাংকার ও অর্থনীতিবিদ অধ্যাপক ডঃ মুহাম্মদ ইউনূস নোবেল পুরস্কারসহ দেশীয় ও আন্তর্জাতিক অঙ্গনে বিভিন্ন পুরস্কার ও সম্মাননা পেয়েছেন। চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের এক সময়কার অর্থনীতি বিভাগের শিক্ষক-অধ্যাপক ড. ইউনুস বিংশ শতাব্দীর শেষভাগে আধুনিক বিশ্বে ক্ষুদ্রঋণ ধারণার প্রবর্তন করেন এবং গ্রামীণ ব্যাংক প্রতিষ্ঠার মাধ্যমে প্রমাণ করেন যে ক্ষুদ্র ঋণ দিয়ে সমাজের দরিদ্র জনগোষ্ঠীকে দারিদ্রের ফাঁদ থেকে স্থায়ীভাবে উদ্ধার করা যায়।
অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস তার প্রতিষ্ঠিত গ্রামীণ ব্যাংক সহ যৌথভাবে ২০০৬ সালে নোবেল শান্তি পুরস্কার লাভ করেন। তিনি প্রথম বাংলাদেশী হিসেবে এই পুরস্কার লাভ করেন। ১৯৭৮ থেকে অধ্যাপক ইউনূস নানা জাতীয় ও আন্তর্জাতিক পুরস্কারে ভূষিত হয়েছেন। ২০২১ সাল পর্যন্ত ড. ইউনূস প্রায় ১৪৫টি পুরস্কার অর্জন করেছেন। এ যাবৎ সারা পৃথিবীর ৪৮ বিশ্ববিদ্যালয় তাকে সম্মানসূচক ডক্টরেট ডিগ্রী প্রদান করেছে।
নদী বন্দর/এসএইচবি