ময়মনসিংহের ব্রহ্মপুত্র নদে ড্রেজিং মেশিন বসিয়ে অবাধে চলছে বালু উত্তোলন। স্থানীয়দের অভিযোগ, ড্রেজার দিয়ে বালু উত্তোলনের ফলে অনেকের ঘরবাড়ি নদীতে বিলীন হয়ে গেছে। ভাঙ্গনের আশংকায় বহু ঘরবাড়ি। প্রশাসনের কর্মকর্তারা বলছেন, বালু উত্তোলনকারীদের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে।
ব্রহ্মপুত্র নদে ড্রেজার মেশিন বসিয়ে বালু উত্তোলনের ফলে ময়মনসিংহ সদরের কিসমত গ্রামের গৃহবধূ রেনুয়ারা বেগমের বাড়িঘর গত বর্ষায় নদীতে বিলীন হয়ে যায়। পরে ঋণ করে আবারও রাস্তার পাশে ঘর তুলে বসবাস করছেন। ড্রেজার মেশিনের কারণে নতুন করে ঘরের পাশে আবারও ভাঙ্গন দেখা দিয়েছে।
গৃহবধূ রেনুয়ারার বেগম জানান, আগে থেকেই ভাঙছে, এখন তো আমরা অসহায়-গরীব মানুষ ঘর-দরজা ঠিক মতো তুলতে পারছি না। এর ব্যবস্থা কেউই নিচ্ছে না।
শুধু কিসমতের রেনুয়ারা নন, সদরের তারাগাই, কল্যালপুর, বেগুনবাড়িসহ প্রায় ১০টি গ্রামের সাধারণ মানুষ ড্রেজার মেশিনে বালু উত্তোলনের কারণে বিপাকে আছেন। এমনকি বালু উত্তোলনকারীরা জোর করে বাড়ির ভেতর দিয়ে পাইপ লাইন করে মেশিনে বালু তুলছেন। প্রশাসনের হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন তারা।
স্থানীয়রা জানান, কবরস্থান ভেঙ্গে যাচ্ছে বাড়ি-ঘরও চলে যাচ্ছে নদীতে। এই সমস্যা এখন প্রকট আকার ধারণ করেছে। ড্রেজার দিয়ে নদী থেকে বালু তুলছে এর ফলে বাড়িঘর সব ভেঙ্গে যাচ্ছে। একটা মানুষ মারা গেলে যে মাটি দিব, তার জায়গাও নাই। আমাদের অন্য কোন সম্পদ নাই যে, অন্য কোন জায়গায় গিয়ে বাড়িগর বানিয়ে থাকবো।
প্রভাবশালীরা অবৈধভাবে ড্রেজার দিয়ে বালু উত্তোলন করছেন। অনুমোদন ছাড়াই এ কাজ করছেন বলে স্বীকার করেছেন অভিযুক্তরা।
ড্রেজার মালিক জুলহাস মিয়া বলেন, আমাদের কোন সরকারি অনুমোদন নেই।
এদিকে স্থানীয় প্রশাসনের কর্মকর্তারা বলছেন, বালু উত্তোলনের জন্য জেলা প্রশাসন থেকে কাউকে ইজারা দেয়া হয়নি। অবৈধ ড্রেজার মালিকদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়ার আশ্বাস দেন।
ময়মনসিংহ সদর উপজেলা নির্বাহী অফিসার সাইফুল ইসলাম বলেন, যদি কেউ অবৈধভাবে বালু উত্তোলন করে থাকে, আমরা যথাযথ ব্যবস্থা নিবো। মোবাইল কোর্টের আওতায় তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে।
শুধু কথা নয়, প্রশাসনের উদ্যোগ দেখতে চায় ভুক্তভোগী বহ্মপুত্র নদের পাড়ের বাসিন্দারা।
নদী বন্দর / পিকে