আগেরদিন ওয়েস্ট ইন্ডিজের পক্ষে সেরা বোলার ছিলেন জোমেল ওয়ারিকান। দিনের খেলা শেষে তিনি বলেছিলেন, বাংলাদেশকে আটকে রাখতে চান ৩০০ রানের নিচে। সে পথে আজ (বৃহস্পতিবার) দ্বিতীয় দিনের শুরুতেই সেট ব্যাটসম্যান লিটন দাসকে বোল্ড করে পরিষ্কার বার্তা দেন ওয়ারিকান, আড়াইশর আগেই ৬ উইকেট হারিয়ে ফেলে বাংলাদেশ।
তবে এরপর আর ক্যারিবীয়দের চেপে বসতে দেননি সাকিব আল হাসান ও মেহেদি হাসান মিরাজ। ষষ্ঠ উইকেট জুটিতে দুজন মিলে যোগ করেন ইনিংসের সর্বোচ্চ ৬৭ রান। বাংলাদেশ পেরিয়ে যায় তিনশ রানের কোটা, সাকিব তুলে নেন ক্যারিয়ারের ২৫তম টেস্ট ফিফটি। কিন্তু সেশনটা শেষ করতে পারেননি সাকিব। আউট হয়েছেন সম্ভাবনাময় সেঞ্চুরির অপমৃত্যু ঘটিয়ে।
দ্বিতীয় দিনের মধ্যাহ্ন বিরতি পর্যন্ত বাংলাদেশ দলের সংগ্রহ ৭ উইকেটে ৩২৮ রান। দারুণ নিয়ন্ত্রিত এক ইনিংস খেলে অনিয়ন্ত্রিত শটে সাকিব আউট হয়েছেন ৬৮ রান করে। অষ্টম উইকেট জুটিতে তাইজুল ইসলামকে নিয়ে প্রথম সেশনের বাকি সময়টা পার করেছেন ৪৬ রানে অপরাজিত থাকা মিরাজ। তিনিও খেলছেন সাবলীলভাবে।
ম্যাচের প্রথম দিনের শেষ ঘণ্টায় দারুণ ব্যাটিং করেছিলেন সাকিব ও লিটন। দলীয় দুইশর আগেই ৪ উইকেট হারানোর পর সাকিব-লিটনের জুটিতেই স্বস্তিতে থেকে দিন শেষ করতে পেরেছিল বাংলাদেশ। পঞ্চম উইকেটের অবিচ্ছিন্ন জুটিতে তারা দুজনই ছিলেন ব্যক্তিগত হাফসেঞ্চুরির পথে। কিন্তু এক ভুল শট খেলে নিজের উইকেট হারান ৩৮ রান করা লিটন।
অথচ আজ দিনের শুরুতে সাকিব-লিটনের তাদের কাজ আরও সহজ করে দেন ক্যারিবীয় অধিনায়ক ক্রেইগ ব্রাথওয়েট। প্রথম থেকেই তিনি ফিল্ডিং ছড়িয়ে দেন, ব্যাটের আশপাশে সাজাননি ফিল্ডারদের ছাতা। ছড়ানো ফিল্ড সেটিংয়ে দিনের প্রথম ওভারে অনায়াসেই স্ট্রাইক রোটেট করে খেলেন সাকিব-লিটন। মনে হচ্ছিল, আগের দিনের জুটিটাকে সহজেই আরও বড় করে ফেলবেন তারা।
কিন্তু দিনের তৃতীয় ওভারে স্ট্যাম্পের অনেক কাছের বলে কাট করতে গিয়ে বোল্ড হন লিটন। প্রথমে মনে হচ্ছিল, হয়তো উইকেটরক্ষকের গ্লাভস লেগে ভেঙেছে উইকেট। টিভি রিপ্লে দেখে থার্ড আম্পায়ার জানান বোল্ডের সিদ্ধান্ত। সমাপ্তি ঘটে ৬ চারের মারে খেলা লিটনের ৬৭ বলে ৩৮ রানের ইনিংসের। উইকেটে আসেন মেহেদি মিরাজ।
মাত্র ১২ ওভার খেলা হওয়া বল হাতে অপর প্রান্তে শ্যানন গ্যাব্রিয়েল আক্রমণে থাকায় মনে হচ্ছিল, হয়তো অল্পেই বাকি ৪ উইকেট তুলে নেবে ক্যারিবীয়রা। কিন্তু তাদের সকল প্রচেষ্টা নষ্ট করে দেন সাকিব ও মিরাজ। দুজনই সাবলীল ব্যাটিংয়ে এগিয়ে নেন বাংলাদেশকে। তবে রাহকিম কর্নওয়ালের বলে বাজে শটে আউট হয়ে যান সাকিব। অপমৃত্যু ঘটে তার সম্ভাবনাময় সেঞ্চুরির।
তবে এর আগেই দীর্ঘ ১৭ মাস পর টেস্ট খেলতে নেমে সাকিব তুলে নেন ক্যারিয়ারের ২৫তম টেস্ট ফিফটি, ১১০ বল খেলে ৫ চারের মারে পঞ্চাশে পৌছান তিনি। পরে আউট হন ব্যক্তিগত ৬৭ রানে। সাকিব ফিরে যাওয়ার পর বিপদ ঘটতে দেননি তাইজুল ও মিরাজ। ব্যাটিংয়ে নামার পর থেকে ইতিবাচক খেলে মিরাজ করে ফেলেছেন ৪৬ রান। তার সামনে এখন তৃতীয় ফিফটির হাতছানি।
নদী বন্দর / পিকে