সীমান্ত দিয়ে ৬৬ জন ভারতের নাগরিককে পুশ-ইন করেছে বিএসএফ। এ ঘটনায় কঠোর হুঁশিয়ারি দিয়েছে জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা ও প্রধান উপদেষ্টার রোহিঙ্গাবিষয়ক হাইরিপ্রেজেনটেটিভ ড. খলিলুর রহমান।
তিনি বলেন, আমরা প্রতিটি কেস আলাদা আলাদাভাবে নিরীক্ষণ করছি। আমাদের সিদ্ধান্ত হচ্ছে, আমাদের দেশের নাগরিক যদি কেউ হয়ে থাকেন, আর সেটা যদি প্রমাণিত হয়, তাহলে তাদের আমরা গ্রহণ করবো। তবে এটা ফরমাল চ্যানেলে হতে হবে। এভাবে পুশ-ইন করাটা সঠিক প্রক্রিয়া নয় বলে সাফ জানিয়ে দেন তিনি।
বুধবার (৭ মে) পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে তিনি এ কথা বলেন।
খাগড়াছড়ি ও কুড়িগ্রাম জেলা সীমান্তে ভারত থেকে সেদেশের নাগরিকসহ লোকজনকে পুশ-ইন করার বিষয়ে জানতে চাইলে ড. খলিলুর রহমান বলেন, আমরা এটা নিয়ে ভারত সরকারের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করছি।
উল্লেখ্য, বুধবার (৭ মে) খাগড়াছড়ি জেলার মাটিরাঙ্গা এবং পানছড়ি সীমান্ত দিয়ে ৬৬ জন ভারতীয় নাগরিককে পুশ-ইন করেছে বিএসএফ। এ ছাড়া কুড়িগ্রাম সীমান্ত দিয়ে আরও ৩৬ জনকে পুশ-ইন করা হয়েছে, যাদের রোহিঙ্গা বলে দাবি করছে বিএসএফ।
স্থানীয়রা জানান, বুধবার (৭ মে) রৌমারী উপজেলার কেন্দ্রীয় শাপলা চত্ত্বরে ভ্যানগাড়িতে করে যাওয়ার সময় গোপন সংবাদের ভিত্তিতে জামালপুর ৩৫ বিজিবির সদস্যরা ২৭ জনকে আটক করে। এ সময় সেখান থেকে পালিয়ে যাওয়ার সময় রৌমারী থানা পুলিশের হাতে দুজন আটক হয়। এরমধ্যে পুরুষ ২২ জন, নারী ৬ জন, শিশু দুজন।
রৌমারী থানার ওসি লুৎফর রহমান বলেন, ভোররাতে রৌমারী বিভিন্ন সীমান্ত দিয়ে ভারত থেকে ৩০ জনকে বাংলাদেশে পুশ-ইন করা হয়েছে। ধারণা করা হচ্ছে, এদের মধ্যে ২২ জন রোহিঙ্গা। আটককৃতদের পরিচয় যাচাই করছে বিজিবি।
এ ছাড়াও ভূরুঙ্গামারী উপজেলার চর ভূরুঙ্গামারী ইউনিয়নের নতুনহাটের নতুন বাজার নামক স্থান থেকে ভোরে ১৪ জনকে আটক করে স্থানীয়রা। পরে স্থানীয় সাবেক চেয়ারম্যান জাহাঙ্গীর আলমের বাড়িতে নিয়ে যাওয়া হয়। পরে কুড়িগ্রাম ২২ বিজিবির ভাওয়ালেরকুড়ি ক্যাম্পের সদস্যদের কাছে তাদেরকে হস্তান্তর করা হয়। এদেরর মধ্যে ৩ জন পুরুষ ও ৩ জন নারী এবং ৮ জন শিশু-কিশোরী রয়েছে।
ভূরুঙ্গামারী উপজেলার চরভূরুঙ্গামারী ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান জাহাঙ্গীর আলম বলেন, ফজরের নামাজের পর নতুন হাটবাজারে ১৪ জনকে ঘোরাফেরা করতে দেখে মুসুল্লিরা। পরে তাদেরকে আমার বাড়িতে নিয়ে আসলে তাদের জিঙ্গাসাবাদ করলে জানান ভারতে থেকে তাদেরকে সীমান্ত দিয়ে পার করে দয়া হয়েছে। তারা আরও জানান কয়েক বছর আগে রোহিঙ্গা ক্যাম্প হতে ভারতে গিয়ে ধরা পড়ে জেল খাটেন তারা। সাজা শেষ হলে তাদেরকে সীমান্ত দিয়ে বাংলাদেশে পাঠানো হয়।
রৌমারী সীমান্ত দিয়ে রোহিঙ্গা ও বাংলাদেশি আসার বিষয়টি নিশ্চিত করে জামালপুর ৩৫ বিজিবির অধিনায়ক লে. কর্নেল হাসানুর রহমান বলেন, আটককৃতদের প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদ করে তথ্য উপাত্ত সংগ্রহ করে পরবর্তী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
এ বিষয়ে কুড়িগ্রাম ২২ বিজিবির অধিনায়ক লে. কর্নেল মোহাম্মদ মাহাবুব-উল হক বলেন, তারা ভারত থেকে না অন্য কোথা থেকে এসেছে তা জিজ্ঞাসাবাদ শেষে বিস্তারিত জানানো হবে।
নদীবন্দর/জেএস