পূর্ব সুন্দরবনের চাঁদপাই রেঞ্জের কলমতেজী ও ধানসাগর ক্যাম্পের মাঝামাঝি এলাকার বনের অভ্যন্তরে আগুন লাগার খবর পাওয়া গিয়েছে।এঘটনায় ৩ সদস্যের ১টি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে ।
সোমবার দুপুরে ধানসাগর ক্যাম্প সংলগ্ন এলাকায় বনের ভেতর দিয়ে ধোঁয়া উড়তে দেখতে পেয়ে স্থানীয় বাসিন্দারা বন বিভাগকে খবর দেয়। এরপর দুপুর ১ টার দিকে ধানসাগর ক্যাম্পের ষ্টাফরা সেখানে যান।
বন বিভাগের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা স্থানীয় লোকজন ও স্বেচ্ছাসেবীদের নিয়ে আগুন নেভানোর চেষ্টা শুরু করেন। ইতিমধ্যে আগুন নেভানোর জন্য আগুন লাগার এলাকার চারপাশে ফায়ার লাইন কেটেছে বন বিভাগ।
খবর পেয়ে বিকেল সোয়া ৪টার দিকে শরণখোলা ফায়ার সার্ভিসের টিম ঘটনাস্থলে পৌঁছায়। সকলে মিলে আগুন নেভানোর চেষ্টা করছেন বলে জানিয়েছে বন বিভাগ। তবে বন বিভাগ বলছে আগুন তাদের নিয়ন্ত্রণে রয়েছে।
পূর্ব সুন্দরবনের ধানসাগর ক্যাম্পের ওসি মো. বেল্লাল হোসেন বলেন, দুপুর ১টার দিকে তারা বনে আগুন লাগার খবর পান। তারপর তারা সেখানে গিয়ে স্থানীয়দের সহায়তায় আগুন নেভানোর কাজ শুরু করেন। এখন আগুন নিয়ন্ত্রণে রয়েছে বলে দাবি করেন তিনি।তবে কখন কীভাবে এ অগ্নিকান্ডর ঘটনা ঘটেছে তা ব্যস্ততার কারণে নিশ্চিত করে জানাতে পারেননি তিনি।আগুনে বনের ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ ও ঝুঁকি বিষয়ে নিশ্চিত করে কিছু জানা যায়নি।
ধানসাগর স্টেশন কর্মকর্তা ফরিদুল ইসলাম বলেন, দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে সিপিজে সদস্য সোলায়মান হোসেন বনের মধ্যে ধোয়ার কুন্ডলী দেখে আমাকে ফোন করেন। পরে আমি সিপিজি সদস্য, স্থানীয় লোক ও বনরক্ষীদের নিয়ে ঘটনাস্থলে যাই। সেখানে স্থানীয়ভাবে আগুন নেভানোর চেষ্টা করি। ফায়ার সার্ভিসকে খবর দেই। তারা এসে পানি দিয়ে আগুন নিয়ন্ত্রণে এনেছে।তবে এতক্ষনে ধানসাগর স্টেশনের টহল ফাঁড়ির এক কিলোমিটার ভিতরে প্রায় তিন শতাংশ বনভূমি পুড়ে গেছে। তবে বড় ধরণের কোন গাছ পুড়েনি।
আগুন লাগার কারণ জানতে চাইলে তিনি বলেন, প্রাথমিকভাবে ধারণা করছি বিড়ি সিগারেটের অব্যবহৃত অংশ থেকে আগুন লাগতে পারে। আগুন লাগার কিছু আগে অল্প বয়সী কয়েকটি ছেলে বনের মধ্য থেকে বের হয়েছে এমন তথ্য পেয়েছি স্থানীয়দের কাছ থেকে।বিষয়টি আমরা খতিয়ে দেখছি।
শরণখোলা ফায়ার সার্ভিস স্টেশনের ষ্টেশন কর্মকর্তা এসএম আব্দুল ওয়াদুদ বলেন, বনবিভাগের মাধ্যমে খবর পেয়ে আমরা ঘটনাস্থলে এসেছি। প্রায় দুই ঘন্টার চেষ্টায় আমরা আগুন নিয়ন্ত্রণে এনেছি। আগুন নিয়ন্ত্রণে আসলে সম্পূর্ণ নেভানো সম্ভব হয়নি।বনের গাছের পাতা পড়ে মাটি প্রায় দেড় দুই ফুট উঁচু পাতার স্তর তৈরি হয়েছে।
যার ফলে মাঝে মাঝে আগুন জ্বলে উঠছে।ঝুটের কারখানায় আগুন লাগলে যেমন পরিস্থিতি সৃষ্টি হয় তেমন পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়েছে।
স্থানীয়দের বরাত দিয়ে ষ্টেশন কর্মকর্তা এসএম আব্দুল ওয়াদুদ আরও বলেন, দুপুরের দিকে কিছু উশৃঙ্খল ছেলে মেয়ে বনের মধ্যে প্রবেশ করেছিল। ধারণা করছি তাদের কাছ থেকে আগুনের সূত্রপাত হয়েছে।
পূর্ব সূন্দরবন বিভাগের বিভাগীয় বন কর্মকর্তা(ডিএফও)মোহাম্মাদ বেলায়েত হোসেন বলেন, আগুন সম্পূর্ণ নিভে গেছে। এখন আর কোন সমস্যা নেই। তবে ওই এলাকায় বনরক্ষিদের নজরদারি বৃদ্ধি করা হয়েছে বলে জানান তিনি।
উল্লেখ্য, এর আগেও ওই একই এলাকায় আরও কয়েকবার আগুন লাগার ঘটনা ঘটেছিল। সেগুলো ছিল নাশকতামূলক।
নদী বন্দর / পিকে