1. badsha.dru@gmail.com : admi2017 :
  2. nadibandar2020@gmail.com : Nadi Bandar : Nadi Bandar
বিএসবির খায়রুল বাশার ১০ দিনের রিমান্ডে - Nadibandar.com
বুধবার, ১৬ জুলাই ২০২৫, ০৩:৩৪ অপরাহ্ন
নদীবন্দর, ঢাকা
  • আপডেট টাইম : মঙ্গলবার, ১৫ জুলাই, ২০২৫
  • ৩ বার পঠিত

মানি লন্ডারিংয়ের অভিযোগে গুলশান থানার মামলায় বিএসবি গ্লোবাল নেটওয়ার্কের চেয়ারম্যান খায়রুল বাশারের ১০ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন আদালত। তার আগে বাশারকে আদালত অঙ্গনেই কিল, ঘুষি ও লাথি মারেন ভুক্তভোগীরা। এ সময় তার ওপর ডিমও নিক্ষেপ করেন তারা।

মঙ্গলবার (১৫ জুলাই) ঢাকার চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালত প্রাঙ্গণে এ ঘটনা ঘটে।

তার আগে গুলশান থানার মামলায় খায়রুল বাশারকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য ১০ দিনের রিমান্ড চেয়ে আবেদন করেন মামলার তদন্ত কর্মকর্তা সিআইডির উপ-পরিদর্শক খালিদ সাইফুল্লাহ।

দুপুর ১টার দিকে খায়রুল বাশারকে আদালতে হাজির করা হয়। প্রথমে তাকে ঢাকার সিএমএম আদালতের হাজতখানায় রাখা হয়।

এ সময় বাশারের কাছে প্রতারিত হওয়া শতাধিক শিক্ষার্থী ও তাদের অভিভাবকরা আদালতে হাজির হন। তারা বাশারের বিচারের দাবিতে বিভিন্ন স্লোগান দিতে থাকেন।

ভুক্তভোগীদের চাপে বাশারকে আদালতে তুলতে বেগ পেতে হয় পুলিশকে। এ সময় সেখানে অতিরিক্ত পুলিশ সদস্য মোতায়েন করা হয়। বাড়ানো হয় নিরাপত্তা।

দুপুর ৩টা ২০ মিনিটের দিকে হাজতখানা থেকে এজলাসে তোলার জন্য বের করা হয় বাশারকে। এ সময় তার হাতে হাতকড়া, পরনে বুলেটপ্রুফ জ্যাকেট ও মাথায় হেলমেট ছিল।

সিএমএম আদালতের গেটে পৌঁছামাত্রই তার ওপর ডিম নিক্ষেপ শুরু হয়। পরে তাকে দ্রুত সিএমএম আদালতের তৃতীয় তলায় অতিরিক্ত চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট মো. ছানাউল্যাহর আদালতে নেওয়া হয়। পথে সিঁড়িতে দাঁড়িয়ে থাকা ভুক্তভোগীরা তাকে কিল, ঘুষি ও লাথি মারেন। আদালতকক্ষে ঢোকার সময়ও তার ওপর হামলা চালানো হয়, অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করা হয়।

এ সময় আইনজীবী ও ভুক্তভোগীদের উপস্থিতিতে কানায় কানায় পরিপূর্ণ হয়ে যায় আদালত প্রাঙ্গণ। বেশকিছুক্ষণ চলে হৈচৈ হট্টগোল। পরে আদালতের হস্তক্ষেপে কিছুটা নীরব হয় পরিবেশ।

এরপর রিমান্ডের বিষয়ে শুনানি শুরু হয়। বাদীপক্ষে অ্যাডভোকেট জামাল উদ্দিন খন্দকার ১০ দিনের রিমান্ড মঞ্জুরের পক্ষে শুনানি করেন।

তিনি বলেন, বাশার ক্যামব্রিয়ান স্কুল অ্যান্ড কলেজের চেয়ারম্যান। লন্ডন, আমেরিকা, কানাডাসহ ইউরোপের বিভিন্ন দেশে পাঠানোর প্রলোভন দেখিয়ে কোটি কোটি টাকা আত্মসাৎ করেছেন তিনি। ক্যামব্রিয়ানের অনেক শিক্ষার্থীর জীবন শেষ করে দিয়েছেন তিনি। ফ্যাসিস্ট সরকারের মতো কাজ করেছেন। বর্তমান যুগের নমরুদ তিনি। প্রায় দুই হাজার শিক্ষার্থীর কাছ থেকে কোটি কোটি টাকা আত্মসাৎ করেছেন। ৫ কোটি টাকা খরচ করে ‘বাশার বাহিনী’ গঠন করেছেন। যারা টাকার জন্য যেত তাদের ওপর নির্যাতন চালাতো ওই বাহিনী।

আইনজীবী আরও বলেন, তার কারণে অনেক স্টুডেন্টদের শিক্ষা জীবন শেষ হয়ে গেছে। অভিভাবকরা পথে পথে ঘুরছেন দেউলিয়া হয়ে। তার কারণে বাবা ছেলেকে হারিয়েছেন, আবার ছেলে বাবাকে হারিয়েছেন। এখন সময় এসেছে, তাকে ধরতে পেরেছি। ন্যায়বিচারের স্বার্থে তার ১০ দিন না, সর্বোচ্চ রিমান্ড প্রার্থনা করছি। যেন এটা নজীর হয়ে থাকে।

রাষ্ট্রপক্ষে অ্যাডভোকেট মুহাম্মদ শামছুদ্দোহা সুমন রিমান্ড মঞ্জুরের পক্ষে শুনানি করেন। তিনি বলেন, আসামি রাষ্ট্রকে ব্যবহার করে শিক্ষাকে ব্যবসা হিসেবে ব্যবহার করেছেন। জানা গেছে, চার হাজার কোটি টাকা আত্মসাৎ করেছেন তিনি। তার সর্বোচ্চ রিমান্ড মঞ্জুরের প্রার্থনা করছি।

এরপর বিচারক খায়রুল বাশারকে প্রশ্ন করেন, এই কাজগুলো (শিক্ষার্থীদের কাজ থেকে টাকা আত্মসাৎ) কেন করলেন? তখন তিনি নিশ্চুপ ছিলেন। ফের বিচারক বলেন, কোনো কারণে যদি তাদের বিদেশ পাঠাতে ব্যর্থ হন বা অপরাগ হন তাহলে কেন টাকা ফেরত দেননি? তখনও তিনি কোনো কিছুর উত্তর দেননি।

এরপর বিচারক বলেন, আপনার বিরুদ্ধে কতটা মামলা হয়েছে জানেন? তখন বলেন, আনুমানিক ৭০টা হয়েছে। তখন বিচারক বলেন, যত মামলা হয়েছে, মোকাবিলা করতে গেলে তো সারা জীবন কারাগারে কেটে যাবে। তখন বিচারক জিজ্ঞাসা করেন, টাকাগুলো যে আত্মসাৎ করলেন আপনার মানবিক সত্তা জাগ্রত হয়নি? কয়টা বিয়ে করেছেন? উত্তরে তিনি জানান, দুইটা। তখন আরেক প্রশ্ন করেন, আপনার সন্তান কয়জন? তখন তিনি বলেন, ছয়জন। বিচারক বলেন, টাকা নিয়ে এসব শিক্ষার্থীদের জীবন কেন হুমকির মুখে ফেলে দিলেন? একবারও কি আপনার সন্তানদের কথা মনে পড়েনি?

পরে তার আইনজীবী কাজী আনিসুর রহমান রিমান্ড নামঞ্জুর চেয়ে জামিন শুনানি করতে চান। তখন আদালতে উপস্থিত কয়েকজন ভুক্তভোগী ওই আইনজীবীকে বলতে থাকেন, আপনার লজ্জা নাই, নির্লজ্জ! পরে তিনি আর শুনানি করেননি। এরপর আদালত তার ১০ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করে আদেশ দেন।

এর আগে সোমবার দুপুর ১টার দিকে খায়রুল বাশারকে ঢাকার ধানমন্ডি থেকে গ্রেপ্তার করে সিআইডি পুলিশ।

গত ৪ মে সিআইডির উপ-পরিদর্শক রুহুল আমিন বাদী হয়ে মামলা দায়ের করেন।

মামলায় অভিযোগ করা হয়, আসামি বাশার, তার স্ত্রী খন্দকার সেলিমা রওশন ও ছেলে আরশ ইবনে বাশার চটকদার বিজ্ঞাপনের ফাঁদে ফেলে সাধারণ ছাত্র-ছাত্রীদের কাছ থেকে বিপুল অর্থ হাতিয়ে নিয়েছেন। উচ্চশিক্ষার জন্য ১৪১ শিক্ষার্থীকে বিদেশে পাঠানোর কথা বলে ১৮ কোটি ২৯ লাখ ৫৭ হাজার ৬৮০ টাকা হাতিয়ে নিয়েছেন তারা।

নদীবন্দর/জেএস

নিউজটি শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এ জাতীয় আরো খবর..
© All rights reserved © 2020 Nadibandar.Com
Theme Developed BY ThemesBazar.Com