‘আঘাত করো না, প্রতিঘাত খুব ভয়ংকর হবে, আমরা আমাদের অধিকার ছিনিয়ে নিতে জানি।’ এভাবেই ফ্যাসিবাদের বিরুদ্ধে হুঙ্কার দিয়েছিলেন ২০২৪ সালের জুলাই অভ্যুত্থানের প্রথম শহীদ আবু সাঈদ। শহীদ হওয়ার পূর্ব পর্যন্ত তিনি যেমন মাঠে সক্রিয় থেকে আন্দোলনে নেতৃত্ব দিয়েছিলেন তেমনি লেখনির মাধ্যমে সক্রিয় ছিলেন সামাজিক মাধ্যমে।
শহীদ হওয়ার আগে ফেসবুকে দেওয়া কিছু পোস্ট উল্লেখ করা হলো—
২০২৪ সালেন ১৫ জুলাই ফেসবুকে আবু সাঈদ লিখেন, উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে সরকারের একের পর এক মন্ত্রীরা বিভিন্ন সামাজিক মাধ্যমে এইসব পোস্ট করে যাচ্ছেন।
যেখানে তাদের উচিৎ ছিল সাধারণ শিক্ষার্থীদের অযথা যে ভাষায় আক্রমণ করা হয়েছে তার প্রতিবাদ করা। অথচ তারা সম্মিলিতভাবে সাধারণ শিক্ষার্থীদের বিরুদ্ধে বিষোদগার করে চলেছেন।
তাদের সাহস কি করে হয় সাধারণ শিক্ষার্থীদের স্বাধীনতা বিরোধীদের সাথে তুলনা করার? স্বাধীনতার পক্ষ শক্তি বিপক্ষ শক্তির সার্টিফিকেট দেওয়ার অধিকার আপনাদের কে দিয়েছে? আপনাদের মতের সাথে না মিললেই সে রাজাকার এই অপকৌশল এখন আর চলবে না।
আপনারা ভিন্নমত সহ্য করতে পারেন না এটাই প্রতীয়মান হচ্ছে আপনাদের আচরণে। সাধারণ শিক্ষার্থীদের উপর হামলার অধিকার আপনাদের ছাত্রসংগঠনকে কে দিয়েছে?
দেশের মালিক জনগণ, কাজেই জনগণের ইচ্ছা কে প্রাধান্য দিন। সরকার যা চাইবে তাহাই হইবে এটা কোনো গণতান্ত্রিক দেশের চিত্র হতে পারে না।
তার আগে ১৩ জুলাই ফেসবুকে লিখেছিলেন- সবথেকে যেটা বেশি গুরুত্বপূর্ণ, সেটা হলো আপনি ন্যায়ের পক্ষে না অন্যায়ের পক্ষে। অন্যায়ে পক্ষে থেকে ১০০ বছর বাঁচার থেকে ন্যায়ের পক্ষে থেকে মরা অধিক উত্তম, সম্মানের, শ্রেয়।
তারও আগে ১১ জুলাই তিনি ফেসবুকে লিখেছিলেন- ছাত্রদের আন্দোলনের কারণে ৫২ এর ভাষা আন্দোলন, ৫৪ এর যুক্তফ্রন্ট, ৬২ এর শিক্ষা আন্দোলন, ৬৬ এর ছয় দফা আন্দোলন, ৬৯ এর গন অভ্যুত্থান, ৭০ এর নির্বাচন, ৭১ এর স্বাধীনতা অর্জন হয়েছিল। অতএব আঘাত করো না, প্রতিঘাত খুব ভয়ংকর হবে, আমরা আমাদের অধিকার ছিনিয়ে নিতে জানি।
নদীবন্দর/এএস