ইসরায়েলের কাছ থেকে সরকার কোনো ইকুইপমেন্ট কেনেনি বলে জানিয়েছেন তথ্যমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ড. হাছান মাহমুদ।
বৃহস্পতিবার (১১ মার্চ) দুপুরে ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির নসরুল হামিদ মিলনায়তনে স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী উপলক্ষে বাংলাদেশ স্বাধীনতা পরিষদ আয়োজিত আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন।
আল জাজিরার একটি প্রতিবেদনের কথা উল্লেখ করে তথ্যমন্ত্রী বলেন, ‘একটি ভুয়া রিপোর্ট করে, একটি মিডিয়া ভাড়া করে ভুয়া রিপোর্ট করানো হয়েছে। এখন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে যখন গুজব রটিয়ে কাজ হচ্ছে না, সরকার ব্যবস্থা গ্রহণ করছে, তখন তারা বিদেশি মিডিয়া ভাড়া করছে। আর মোটা অংকের টাকার বিনিময়ে রিপোর্ট করা হয়েছে। সেই রিপোর্টে কোনো মানসম্পন্ন রিপোর্ট নয়। আমাদের দেশে টেলিভিশন এর চেয়ে ভাল রিপোর্ট করে। সুতরাং এটা কোন ভাল রিপোর্ট না।’
তিনি আরও বলেন, ‘আমাদের দেশের বিভিন্ন অনলাইন টিভি যে রিপোর্ট করে সেগুলোও এরচেয়ে ভালো রিপোর্ট। যে রিপোর্ট তারা করেছে সেটি একটি গাঁজাখুরি রিপোর্ট। বিদেশি মিডিয়া ভাড়া করে করা সেই রিপোর্ট নিয়ে মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর সাহেব কথা বলেন। আসলে ওদের মাথাটা খারাপ হয়ে গেছে।’
বিএনপির ইসরায়েলি প্রীতি হচ্ছে মন্তব্য করে ড. হাছান মাহমুদ বলেন, ‘যখন ১৯৯৬ সালে আমরা সরকারে ছিলাম তখন সেই সময়ে ফিলিস্তিনিদের পর ইসরায়েল নির্বিচারে গুলি করল, শত শত ফিলিস্তিনিকে হত্যা করা হলো। এমনকি ৯৬ সালের আগে ১৯৯১ সাল থেকে ৯৬ এর আগ পর্যন্ত খালেদা জিয়ার সরকার গঠনের পর তারা যখন ক্ষমতায় ছিলেন তখন ফিলিস্তিনের ওপর ইসরায়েলি বাহিনী গুলি করে শত শত ফিলিস্তিনিকে হত্যা করল, তখন আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকে নিন্দা প্রস্তাব আনার জন্য সংসদে পেশ করা হয়েছিল। খালেদা জিয়া সরকার তাতে রাজি হয়নি, ইসরায়েলের বিরুদ্ধে কোনো প্রস্তাব দিতে তখন রাজি হয়নি।’
ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের বিষয়ে তথ্যমন্ত্রী বলেন, ‘ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন একজন সাধারণ মানুষের নিরাপত্তার জন্য, সাংবাদিকের নিরাপত্তার জন্য, লেখককে নিরাপত্তার জন্য, গৃহিণীর নিরাপত্তার জন্য, কৃষকের নিরাপত্তার জন্য, শ্রমিকের জন্য, রিকশাওয়ালা ভাইয়ের নিরাপত্তার জন্য। কেউ যাতে কারো চরিত্র হরণ করতে না পারে। ভুল সংবাদ পরিবেশন করে গুজব ছড়িয়ে মানুষকে বিভ্রান্ত করতে না পারে।’
তিনি আরও বলেন, ‘কিছু মানুষ দাবি জানাচ্ছে ডিজিটাল আইন বাতিল করার। যখন ডিজিটাল বিষয়টি ছিল না, তখন ডিজিটাল নিরাপত্তা দেয়ার বিষয় ছিল না। যখন ডিজিটাল বিষয়টি চলে এসেছে, অনলাইনে মানুষ অভ্যস্ত হয়ে উঠেছে, তখন মানুষকে ডিজিটাল নিরাপত্তা দেয়া রাষ্ট্রের দায়িত্ব। সেজন্যই ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন প্রণয়ন করা।’
ফ্রান্স জার্মানিসহ বিভিন্ন দেশে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের মতো আইন রয়েছে উল্লেখ করে তথ্যমন্ত্রী বলেন, ‘সাম্প্রতিক সময়ে যেভাবে বিভ্রান্ত করা হয়েছে সেগুলো যাতে না হতে পারে, কোনো সাংবাদিকের চরিত্র হনন করতে না পারে, কোনো নারীর চরিত্র যেন হরণ করতে না পারে সেজন্যই ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন। প্রেস ক্লাবের সামনে দাঁড়িয়ে কয়েকজন এই আইন বাতিল করতে বলেন। তারা চায় এ ধরনের গুজব রটানোর অবাধ সুযোগ। প্রকারান্তরে তাদের মূল উদ্দেশ্য হচ্ছে গুজব রটানো। পৃথিবীর কোনো দেশে এমনটি নেই।’
তিনি আরও বলেন, ‘দেশের যখন এতটা উন্নয়ন এবং আজকে দেশ স্বল্প আয়ের দেশ থেকে মধ্যম আয়ের দেশে উন্নীত হয়েছে। এতে তাদের মাথা খারাপ হয়ে গেছে। একটি কথা কি তারা বলেছেন যে দেশে আজ স্বল্প আয়ের দেশ থেকে মধ্যম আয়ের দেশে উন্নীত হয়েছে। এজন্য কি তারা একটি অভিনন্দন দিয়েছে। প্রেস ক্লাবের সামনে দাঁড়িয়ে তারা সরকারের বিরুদ্ধে কথা বলেন, তারা একটি কথা কি বলেছেন আজকে ৫০ বছরের মাথায় বাংলাদেশ স্বল্পোন্নত দেশ থেকে মধ্যম আয়ের দেশে উন্নীত হয়েছে সেটি নিয়ে। সরকারকে ধন্যবাদ দিতে লজ্জা লাগলেও অন্তত ধন্যবাদ দিতে পারেন। আসলে দেশের কোনো উন্নয়ন অগ্রগতি তাদের পছন্দ হয় না।’
নদী বন্দর / এমকে