আদালতের নির্দেশে ঢাকার চারপাশের নদীতে পুনরায় সীমানা খুঁটি বসানোর পর তা নিয়েও বিতর্ক শুরু হয়েছে। আবারও সীমানা খুঁটি ভুল স্থানে বসানো হয়েছে বলে অভিযোগ পর্যবেক্ষকদের। বুড়িগঙ্গা ও তুরাগ নদীর প্রায় অর্ধেক খুঁটি ভুল জায়গায় বলে জানায় রিভার অ্যান্ড ডেল্টা রিসার্চ সেন্টার-আরডিআরসি। তবে বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌপরিবহণ কর্তৃপক্ষ-বিআইডব্লিউটিএর দাবি, খুঁটি নির্ভুলভাবে বসানো হয়েছে।
নদী দখল ঠেকাতে বুড়িগঙ্গা, শীতলক্ষ্যা, তুরাগ ও বালু নদী দখল ঠেকাতে ২০১১ সালে সীমানা খুঁটি বসানোর কাজ শুরু করে বিআইডব্লিউটিএ। ৬ হাজার ৮৪৩টি খুঁটির মধ্যে ৪ হাজার ৬৩টি বসানোর পর দেখা যায়, বসানো খুঁটির মধ্যে হাজার খানেক সঠিক স্থানে বসানো হয়নি। ফলে ঐ কাজগুলো স্থগিত করা হয়।
অন্যদিকে হাইকোর্টের আদেশে পুনরায় কাজ শুরু হলে এখন তা নিয়েও প্রশ্ন উঠেছে। রিভার অ্যান্ড ডেল্টা রিসার্চ সেন্টার-আরডিআরসি বুড়িগঙ্গা ও তুরাগ নদীতে জরিপ চালিয়ে দেখতে পায়, দুই নদীতে বসানো ৩ হাজার ৮৪টি খুঁটির মধ্যে ১৪২৩টি খুঁটি নদীর মধ্যে বসানো হয়েছে।
রিভার অ্যান্ড ডেল্টা রিসার্চ সেন্টার-আরডিআরসির চেয়ারম্যান মোহাম্মদ এজাজ বলেন, আমরা যখন পর্যবেক্ষণ করতে মাঠে যাই তখন বর্ষার সময় ছিল। আর সে সময় যে পিলারগুলো পেয়েছি তা আমরা গণনায় ধরেছি। আর বর্ষার সময় গেলে দেখা যাবে পিলারগুলো পানির নিচে।
সরেজমিনে দেখা যায়, কোথাও বেড়িবাঁধের ওপরে বসেছে খুঁটি। আবার কোথাও বাঁধ থেকে ২০ থেকে ৩০ ফুট নদীর মধ্যে খুঁটির অবস্থান। প্রকল্প বাস্তবায়নে দুর্নীতি হয়েছে বলে মনে করে আরডিআরসি।
এই সমস্যা নিয়ে বিআইডব্লিউটিএ’র যুগ্ম-পরিচালক গুলজার আলী বলেন, বিআইডব্লিউটিএ’র একা কিছু করার নেই। এখানে সকল সংস্থাকে একসাথে কাজ করতে হবে।
নদী দখল বিষয়ে বাংলাদেশ পরিবেশ আন্দোলন-বাপার সাধারণ সম্পাদক শরীফ জামিল বলেন, সরকারের তদন্ত কমিটির রিপোর্টে দেখা গেছে, ঢাকার তুরাগ নদীর সীমা আদালতের রায় অনুযায়ী করা হয়নি।
নদীর সীমানা বিষয়ে নৌ-পরিবহণ প্রতিমন্ত্রী খালিদ মাহমুদ চৌধুরী বলেন, আগে যেখানে দেয়া হয়েছিল সেখান থেকে তুলে নতুন জায়গায় বসানো হয়েছে। এবার স্থায়ীভাবে এই পিলারগুলো থাকবে।
এছাড়া নদীর সীমানা খুঁটির স্থান নির্ধারণে নতুন করে ভাবার পরামর্শ নদী বিশেষজ্ঞদের।
নদী বন্দর / এমকে