ভোলায় দু’মাসের নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে মেঘনা ও তেঁতুলিয়া নদীতে অবাধে চলছে ইলিশ শিকার। এদের মধ্যে ভোলার সদর, দৌলতখান, তজুমদ্দিন ও মনপুরা উপজেলার মেঘনা ও তেঁতুলিয়া নদীতে চলছে ইলিশ শিকার।
প্রশাসনের চোখ ফাঁকি দিয়ে শিকার করা ওই ইলিশ বাজারেও প্রকাশ্যে বিক্রি হচ্ছে। সচেতন জেলেরা বলছেন প্রশাসন দ্রুত কঠোর পদক্ষেপ না নিলে ইলিশের অভয়াশ্রম রক্ষা সম্পূর্ণ ব্যর্থ হবে।
আর মাছ শিকারকারী জেলেরা বলছেন, সরকারি চাল না পেয়ে ও বিভিন্ন এনজিওর কিস্তির টাকা পরিশোধের চাপে বাধ্য হয়ে তারা নদীতে মাছ শিকার করছেন।
ভোলা সদর উপজেলার ধনিয়া ইউনিয়নের তুলাতুলি গ্রামের সচেতন জেলে মো. ফিরোজ, মো. কবির মাঝিসহ একাধিকরা বলেন, আমরা সরকারের নিষেধাজ্ঞা মেনে নদী থেকে নৌকা, ট্রলার, জালসহ মাছ শিকারের সকল সরঞ্জাম উঠিয়ে নিয়েছি। সরকারের ২ মাসের নিষেধাজ্ঞা সঠিকভাবে মেনে চলব।
তারা আরও জানান, কিছু অসাধু জেলে রয়েছে যারা প্রশাসনের চোখ ফাঁকি দিয়ে দিন ও রাতে অবাধে ইলিশ শিকার করছেন। আর শিকার করা ওই ইলিশ আবার বাজারে বিক্রি করছেন।
মৎস্য বিভাগ, কোস্টগার্ড, নৌপুলিশ ও পুলিশের অভিযান কঠোরভাবে পরিচালনা না করলে ২ মাসের জন্য সরকারের দেয়া নিষেধাজ্ঞা ব্যর্থ হবে। এজন্য মৎস্য বিভাগ ও প্রশাসনের কাছে কঠোর অভিযানের দাবিও জানান তারা।
অপরদিকে মাছ শিকার করা জেলেরা বলছেন, সরকারের নিষেধাজ্ঞা মেনে গত ১৫/২০ দিন নদীতে মাছ শিকারে যাইনি। আমাদের মা-বাবা, ভাই-বোন, স্ত্রী ও সন্তান রয়েছে। ঘরে চাল নেই, সরকারি বরাদ্দকৃত চালও পাইনি। এনজিও থেকে ঋণ নিয়ে নৌকা, ট্রলার ও জাল কিনেছি। আয় ইনকাম নেই। কিস্তির টাকা পরিশোধে চাপ দিচ্ছেন এনজিও কর্মীরা। তাই নিরুপায় হয়ে নদীতে মাছ শিকার করে এনজিওর কিস্তি দিচ্ছি ও খাবার কিনছি।
ভোলা জেলা মৎস্য কর্মকর্তা এসএম আজহারুল ইসলাম জানান, নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে নদীতে ইলিশ শিকারের দায়ে এ পর্যন্ত ভোলার সাত উপজেলায় ১২৫ জন জেলেকে বিভিন্ন মেয়াদে কারাদণ্ড ও ১৯৩ জেলেকে জরিমানা করা হয়েছে। আগামীতে আমাদের অভিযান আরও কঠোর করা হবে।
তিনি আরও জানান, এনজিওর কিস্তি বন্ধের ক্ষমতা আমাদের নেই, তবে আমরা বিষয়টি কর্তৃপক্ষকে জানাব। এছাড়া ভোলার সাত উপজেলায় ১ লাখ ৩৯ হাজার জেলের মধ্যে এবার ৭৮ হাজার জেলেকে ৪০ কেজি করে ৪ মাস চাল বরাদ্দ দেয়া হবে। এটি দ্রুত বিতরণের কাজ শেষ হবে।
ভোলা মৎস্য বিভাগ অফিস সূত্রে জানা গেছে, ১ মার্চ থেকে ৩০ এপ্রিল ভোলার ১৯০ কিলোমিটার নদীতে সব ধরনের মাছ শিকারের নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে সরকার। এ সময় মাছ শিকারের পাশাপাশি বিক্রি, বাজারজাত, মজুত ও পরিবহনের ওপরও নিষেধাজ্ঞা রয়েছে।
নদী বন্দর / জিকে