কয়েক বছর আগেই সারা বছর পানিতে টইটম্বুর ছিল ধলাই নদী। নদীর বুকে পাল তুলে চলত ছোট বড় হাজারও নৌকা। ব্যবসায়ীরা স্বল্প খরছে নৌযান দিয়ে মামামাল পরিবহন করতেন। দু-পাড়ের কৃষকরা হাজার হাজার একর ফসলি জমিতে সেচ দিতেন এই নদী থেকে। এক সময়ের খরস্রোতা এই নদীতে এখন আর পানি প্রবাহিত হয় না। তার বদলে নদীর বুক জোড়ে তৈরি হয়েছে ফসলের মাঠ।
নেত্রকোনার মদন উপজেলার মগড়া নদী থেকে ফতেপুর ইউনিয়নের ফতেপুর গ্রামের পেছন ও নায়েকপুর ইউনিয়নের চন্দ্রতলা গ্রামের সামনে দিয়ে প্রায় ২০ কিলোমিটার প্রবাহিত হয়ে পাশের উপজেলা কেন্দুয়ার সাইডুলি নদীর সঙ্গে মিলিত হয়েছে। এ ছাড়া ধলাই নদী থেকে ছত্রকোনার পিছনের অংশ প্রায় ৪ কিলোমিটার প্রবাহিত হয়ে তিয়শ্রী ইউনিয়নের সাহিতপুর গ্রামের পিছনের মগড়া নদীতে মিলিত হয়েছে।
এলাকার কতিপয় প্রভাবশালী মহল ছত্রকোনার পেছনের অংশসহ বিভিন্ন অংশ যে যার মতো দখলে নিয়ে পানি শুকিয়ে মাছ ধরে ধান চাষ করেছে। এ ব্যাপারে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ অদৃশ্য কারণে নীরব থাকায় জনগণ নদীর উপকারীতা থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন। এ ছাড়া সরকার বিপুল পরিমাণের রাজস্ব হারাচ্ছে বলে মনে করছেন সচেতনমহল।
নদীর দু-পাড়ের কৃষকরা জানান, এই নদীর পানি দিয়ে সারা বছর নিত্য প্রয়োজনীয় কাজ করা যেত। বোরো ফসলের মাঠে সেচ দেওয়ার কোনো চিন্তা করতে হতো না। এখন আর জমিতে সেচ দেয়ার মতো পানি নেই। তারা আরো জানান, এলাকার জেলেরা নদী থেকে মাছ ধরে জীবিকা নির্বাহ করতো।
কিন্তু প্রভাবশালী মহলের দখলে থাকায় মাছ ধরা থেকে বঞ্চিত হয়েছে জেলেসহ সাধারণ জনগণ। দুই তীরে যাদের জমি আছে তারাই নদী দখলে নিচ্ছে। যাদের জমি নেই তারাও ধান লাগানোর ছলনায় নদী দখল করছে। কেউ কেউ সুবিধা অনুযায়ী বালি উত্তোলন করে অন্যত্র বিক্রি করে দিচ্ছে।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা বুলবুল আহমেদ বলেন, নদী থেকে অবৈধ দখলদার উচ্ছেদ করা হবে। নদী খননের জন্য প্রস্তাব প্রেরণ করা হবে।
নদী বন্দর / জিকে