অধিক ফলন, ভালো বাজার মূল্য, সেচ সুবিধাসহ আবাদির জমির ভিতরের খাল, ডোবা, নালা, কুয়ায় মিষ্টি পানির সংরক্ষণ বাড়ায় এবার পটুয়াখালীর কলাপাড়ায় বেড়েছে বোরোর আবাদ। লবণ সহিষ্ণু জাত, উন্নত বীজ, সার, সেচ, কৃষি উপকরণসহ প্রণোদনা পাওয়ায় প্রান্তিক কৃষকরা উৎসাহিত হচ্ছে বোরো চাষে।
অনুকূল আবহাওয়ায় কৃষকের নিবিড় পরিচর্যায় আবাদি জমিতে এখন সবুজের সমারোহ। লবণাক্ততার মাঝেও বোরোর আবাদে। বাম্পার ফলনের আশাও করছেন কৃষকেরা।
কৃষি বিভাগ জানায়, চলতি মৌসুমে জেলার ১১হাজার ৯৭৭ হেক্টর জমিতে বোরোর চাষ হচ্ছে। বিগত বছর ৩ হাজার ২২৮ হেক্টর জমিতে বোরো চাষ হয়েছে। অপরদিকে কলাপাড়া উপজেলায় ৪ হাজার হেক্টর জমিতে হয়েছে বোরো আবাদ। বিগত বছর ছিল ৮৭০ হেক্টর।
কৃষি বিভাগ আরো জানায়, আবহাওয়া পুরোপুরি অনুকূলে রয়েছে। কৃষকদের উন্নত জাতের বীজ এবং সার সরবরাহ করা হয়েছে। প্রান্তিক চাষিদের দেয়া হয়েছে প্রণোদনা। মাঠ পর্যায়ে চলছে নিবিড় তদারকি। ফলে বিগত বছরের তুলনায় প্রায় চার গুণ জমিতে হচ্ছে বোরোর আবাদ।
মোস্তফাপুর গ্রামের বোরো চাষি সজল জানান, গত বছর ৫ বিঘা জমিতে বোরো চাষ করেছিলেন। এ বছর ৩০ বিঘা জমিতে আবাদ করেছেন। চলতি মৌসুমে আমন ধানের ভালো দাম পাওয়ায় তিনি ৬ গুণ বেশি জমিতে বোরোর চাষ করছেন।
নিশানবাড়ীয়া গ্রামের কৃষক আলমাস গাজী বলেন, কুয়াশা বেশি না হওয়ায় এবার বীজতলার কোনো ক্ষতি হয়নি।
এবারের বর্ষায় পর্যাপ্ত বৃষ্টিপাতের ফলে খাল, নালা, ডোবায় পর্যাপ্ত পানিও রয়েছে। পানির লবণাক্ততা রয়েছে সহনশীল পর্যায়ে। এসব কারণে এবার বোরোর বাম্পার ফলন আশা করছি।
হাজীপুর গ্রামের কৃষক কামাল জানান, প্রভাবশালীদের নিয়ন্ত্রণ থেকে আবাদি জমির অভ্যান্তরীণ খালের দখল উদ্বার করে মিষ্টি পানি সংরক্ষণ আরো বাড়ানো হলে শতভাগ জমি বোরো চাষের আওতায় আনা যেত।
কলাপাড়া উপজেলা কৃষি অফিসার কৃষিবিদ আবদুল মন্নান বলেন, লবণাক্ত জমিতে বোরো চাষ খুবই চ্যলেঞ্জিং। লবণ সহিষ্ণু জাতের বীজ, চাষের উপকরণসহ প্রণোদনা এবং পরামর্শ সহযোগিতা দিয়ে প্রান্তিক কৃষকদের উৎসাহিত করা হচ্ছে বোরো চাষে। ফলে কৃষকদের বোরো চাষে আগ্রহ বেড়েছে। খেতও ভালো অবস্থায় রয়েছে। আশা করছি কৃষক বাম্পার ফলন পাবে। প্রত্যাশা করি ভালো বাজার মূল্যও পাবে।
পটুয়াখালী কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতর উপ-পরিচালক কৃষিবিদ একেএম মহিউদ্দিন বলেন, বোরোর উৎপাদন বাড়াতে মাঠ পর্যায়ে কৃষি বিভাগের সবাই কাজ করছে। আশা করছি আগামী দিনগুলোতে বোরোর চাষ আরো বাড়বে।
নদী বন্দর / এমকে