মিয়ানমারে সামরিক জান্তা সরকারের বিরুদ্ধে বিক্ষোভ চলছেই। বিক্ষোভ ঠেকাতে কঠোর অবস্থান নিয়েছে নিরাপত্তা বাহিনী। গত ১ ফেব্রুয়ারি সামরিক বাহিনী দেশের পুরো ক্ষমতার নিয়ন্ত্রণ নেয়ার পর থেকেই বিক্ষোভের সূত্রপাত। খবর বিবিসির।
গত বছরের নির্বাচনে ব্যাপক কারচুপি হয়েছে এমন অভিযোগ তুলে সামরিক বাহিনী এই অভ্যুত্থান ঘটায়। বিক্ষোভকারীরা চাইছে তাদের গণতান্ত্রিকভাবে নির্বাচিত বেসামরিক সরকারকে পুনর্বহাল করা হোক। কিন্তু সেনাবাহিনী এখন ক্ষমতা হস্তান্তরে রাজি নয়।
সামরিক বাহিনীর হিসাব অনুযায়ী, বিক্ষোভে এখন পর্যন্ত ১৬৪ জনের মৃত্য হয়েছে। তবে অ্যাসিসটেন্স অ্যাসোসিয়েশন ফর পলিটিক্যাল প্রিজনার্স (এএপিপি) জানিয়েছে, এখন পর্যন্ত কমপক্ষে ২৬১ জন নিহত হয়েছে।
এদিকে সেনা অভ্যুত্থানের বিরুদ্ধে চলমান বিক্ষোভে প্রাণহানির ঘটনায় দুঃখ প্রকাশ করেছে মিয়ানমার সেনাবাহিনী। মঙ্গলবার এক সংবাদ সম্মেলনে মিয়ানমার সেনাবাহিনীর মুখপাত্র জাউ মিন তুন বলেন, ‘যারা প্রাণ হারিয়েছেন তাদের জন্য আমি আন্তরিকভাবে দুঃখ প্রকাশ করছি। তারাও আমাদের দেশের নাগরিক ছিলেন।’ বিক্ষোভে ৯ পুলিশ সদস্যও নিহত হয়েছেন বলে জানিয়েছেন তিনি।
বিক্ষোভ-প্রতিবাদে অংশ নিয়ে এখন পর্যন্ত বহু মানুষ সেনাবাহিনীর হাতে নিহত হয়েছে। এমনকি শিশুরাও রক্ষা পাচ্ছে না। সম্প্রতি নিরাপত্তা বাহিনী সাত বছর বয়সী এক শিশুকে গুলি করে হত্যা করেছে। সামরিক অভ্যুত্থানের পর এখন পর্যন্ত সেনাবাহিনীর হাতে এটাই সবচেয়ে কম বয়সী কারও মৃত্যুর ঘটনা বলে জানিয়েছেন স্থানীয় বাসিন্দারা।
ওই শিশুটির পরিবারের সদস্যরা জানিয়েছেন, মানদালায় শহরে নিজের বাসায় থাকা অবস্থায় শিশুটিতে হত্যা করা হয়েছে। মানবাধিকার সংগঠন সেভ দ্য চিলড্রেন জানিয়েছে, এখন পর্যন্ত ২০ জনের বেশি শিশু বিভিন্ন ঘটনায় মারা গেছে।
মান্দালা শহরে অন্ত্যেষ্টিক্রিয়ার কাজে নিয়োজিত এমন একটি সংস্থার এক কর্মী রয়টার্সকে বলেন, চান মিয়া থাজি পৌরসভায় বুলেটের আঘাতে ৭ বছর বয়সী ওই শিশুর মৃত্যু হয়েছে।
স্থানীয় গণমাধ্যমের খবরে বলা হয়েছে সেনাবাহিনী তার বাবার দিকে গুলি চালিয়েছিল কিন্তু বুলেট এসে শিশুটির দেহে বিদ্ধ হয়। শিশুটির নাম খিন মিয়ো চিট বলে উল্লেখ করা হয়েছে।
একটি উদ্ধারকারী দল শিশুটিকে চিকিৎসা সেবা দেয়ার জন্য দ্রুত ঘটনাস্থলে পৌঁছালেও তারা শিশুটিতে বাঁচাতে পারেনি। শিশুটির পরিবারের সদস্যরা জানিয়েছেন, তার ১৯ বছর বয়সী ভাইকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ।
নদী বন্দর / পিকে