করোনায় সৃষ্ট সংকট কাটিয়ে উঠছে দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের সবচেয়ে বড় চিংড়ি পোনার হাট বাগেরহাটের ফয়লাহাট। কক্সবাজার, নোয়াখালী, ফেনী ও চট্টগ্রামের বিভিন্ন হ্যাচারি থেকে আনা হয় বাগদা ও গলদা পোনা। নদী থেকে পাওয়া চিংড়ির পোনাও পাওয়া যায় এ হাটে। সকাল থেকে বিকাল পর্যন্ত চলে বেচাকেনা। দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের সিংহভাগ চাষীই এ হাটের পোনার ওপর নির্ভর করেন।
তবে করোনা মহামারীতে এ হাটে বেচাকেনা বন্ধ হয়ে যায়। ফলে কমে যায় চিংড়ি উৎপাদনও। তবে ধীরে ধীরে সংকট কাটিয়ে উঠছে এ হাট। এ মৌসুমে হাটে বেচাকেনা জমে উঠেছে।
ফয়লাহাট বাজার মৎস্য সমিতি জানিয়েছে, বছরে ছয় মাস থাকে গলদা ও বাগদা পোনা বিক্রির মৌসুম। এ মৌসুমে প্রায় ১৫০ কোটি টাকার পোনা বিক্রি হয়েছে এ হাটে। তবে সম্ভাবনাময় এ হাটের নানা সংকটের কথাও জানান সমিতির নেতারা।
বাগেরহাট জেলার রামপাল উপজেলার ফয়লা নামক স্থানে প্রতিদিন ভোর থেকে পোনার হাট বসে। বাগেরহাটসহ বিভিন্ন এলাকা থেকে চিংড়িচাষীরা ছুটে আসেন এ চিংড়ি পোনার আড়তে। হ্যাচারির পোনার পাশাপাশিও প্রাকৃতিক উৎস থেকে আহরণকৃত পোনাও বিক্রি হয় এ হাটে। তবে হ্যাচারির চেয়ে গুণগত মান ভালো হওয়ায় নদী থেকে পাওয়া পোনার চাহিদা বেশি। তাই দামও দ্বিগুণ। প্রতি হাজার হ্যাচারি পোনা বিক্রি হয় ৩৫০-৪০০ টাকা দরে। নদীর পোনা বিক্রি হয় ৮০০-৯০০ টাকা পর্যন্ত। চিংড়ি পোনা গণনার জন্য রয়েছে হাজারেরও বেশি মানুষ। শুধু গণনা করেই দিনে ৫০০ টাকা পর্যন্ত আয় করেন তারা।
পোনা ব্যবসায়ী শেখ মনিরুজ্জামান বলেন, ভোরবেলা থেকে এখানে পোনা বিক্রি শুরু হয়। বিভিন্ন দামে পোনা ক্রয় করেন চাষীরা। সারাদিন কয়েকশ মানুষ এখানে এ বেচাকেনার সঙ্গে জড়িত থাকেন।
ফয়লাহাট বাজার মৎস্য সমিতির সভাপতি গাজী রাশেদুল ইসলাম ডালিম বলেন, করোনাপরবর্তী সময়ে বাজার এখন জমজমাট। বাগেরহাটসহ আশপাশের এলাকার হাজার হাজার চাষী এ হাট থেকে পোনা ক্রয় করেন। ফয়লাহাটে প্রায় দুই শতাধিক মাছের পোনার আড়ৎ (দোকান) রয়েছে। পোনা পরিবহন, পোনা গোনাসহ বিভিন্ন কাজের সঙ্গে সহস্রাধিক মানুষ যুক্ত রয়েছে। এ হাট থেকে প্রতি বছর ৩৫০ কোটি পোনা বিক্রি হয়। কিন্তু অনেক সময় প্রশাসনের লোকজন হাটের ক্রেতা ও ব্যবসায়ীদের অহেতুক হয়রানি করে, যা মোটেই কাম্য নয়। আমরা মৎস্য বিভাগ ও বাগেরহাট জেলা প্রশাসকের কাছে এ হয়রানি বন্ধের দাবি জানাই।
বাগেরহাট জেলা মৎস্য কর্মকর্তা এসএম রাসেল বলেন, বাগেরহাটের সবচেয়ে বড় পোনার হাট ফয়লাহাট। এখানের পোনার ওপর চাষীরা অনেকটাই নির্ভর করেন। কোনোভাবে এ হাট ও হাটের ওপর নির্ভরশীল চাষীদের ক্ষতি হয় এমনকিছু করা যাবে না।
নদী বন্দর / জিকে