ইন্টারনেট সেবাদানকারী প্রতিষ্ঠানগুলোকে সুবিধা দিতে গিয়ে ইউরোপীয় ইউনিয়নের শিশু সুরক্ষা আইন হুমকির মুখে পড়ছে বলে সতর্ক করছেন বিশেষজ্ঞরা। ইন্টারনেট সরবরাহকারী প্রতিষ্ঠানগুলো শিশুদের হয়রানিমূলক ছবি শনাক্তের স্বয়ংক্রিয় ব্যবস্থা থেকে নিস্তার পেতে যাচ্ছে। আর এ কারণেই শিশুদের যৌন হয়রানির সাথে জড়িতরা আরও সুবিধা পাবে বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা।
বিবিসি জানায়, যুক্তরাজ্যসহ ইউরোপের অন্যান্য দেশে ইন্টারনেট সেবাদানকারী প্রতিষ্ঠানগুলোকে পুলিশকে স্বেচ্ছায় সহায়তা করতে হয়। আইন করে বিষয়টি নিশ্চিত করা হয়েছে। কিন্তু তাদেরকে এ থেকে নিস্তার দিতে আলোচনা চলছে। নতুন আইন পাস হলে এই কাজ থেকে নিস্তার পাবে তারা।
ইউরোপীয় পার্লামেন্টে বেসরকারি ইন্টারনেট সেবাদানকারী প্রতিষ্ঠানগুলোকে বৈশ্বিক ইন্টারনেট কোম্পানিগুলোর পর্যব্ক্ষেণ থেকে সুরক্ষা দেয়ার আইন তৈরি নিয়ে আলোচনা চলছে। এই আলোচনা যদি কোনো কার্যকর সমাধান ছাড়া শেষ হয় তাহলে এই আইন হয়রানির সাথে জড়িতদের কাজকে আরও সহজ করবে বলে বিশেষজ্ঞদের আশঙ্কা।
এছাড়া যারা সফটওয়্যারের মাধ্যমে স্বয়ংক্রয়িভাবে শিশুদের যৌন হয়রানিমূলক উপাদান শনাক্ত করে, নতুন আইনে সেসব প্রতিষ্ঠানও সুবিধা পাবে। আসন্ন সুরক্ষা আইনে ইন্টারনেট কোম্পানিগুলোকে কীভাবে সুবিধা দেয়া যায় তা নিয়ে সদস্যদেশগুলোর প্রতিনিধিরা বৃহস্পতিবার আলোচনা করবেন বলে জানা গেছে।
এদিকে এই আইন নিয়ে শঙ্কা প্রকাশ করেছেন ইউকে চিলড্রেন চ্যারিটিজ কোয়ালিশন অন ইন্টারনেট সেফটির সেক্রেটারি জন কার। তিনি শতর্ক করে বলেন, ‘ক্ষতিকর বিষয় শনাক্তে যেসব কাজ চলমান ছিল, তা হুমকিতে পড়ছে। ব্রাসেলসে যদি কার্যকর আইন না হয় কিংবা কোনো সমাধান ছাড়া আলোচনা স্থগিত থাকে, তাহলে যৌন হয়রানি চালানো দানবরা সহজে শিশুদের কাছে পৌঁছে যাবে। ধর্ষণের শিকার শিশুদের ভিডিও আরো বেশি বেশি পাওয়া যাবে।’
তিনি বলেন, ‘শুধু তাই নয়, এসব ভিডিও ভবিষ্যতেও শিশুদের ওপর প্রভাব ফেলবে। এছাড়া বিশ্বব্যাপী শিশু ধর্ষণের মতো ঘটনাকে আরো উৎসাহ যোগাবে।’
বিশষেজ্ঞরা ধারণা করছেন, সুরক্ষার বিতর্কিত বিষয়গুলো যদি আইন করা হয় তাহলে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে ইন্টারনেট সেবাদানকারী সংস্থাগুলোর প্রতিবেদন দেয়া ৭০ শতাংশ কমে যাবে।
তবে, বিশেষজ্ঞরা এ নিয়ে শঙ্কা প্রকাশ করলেও এ বিষয়ে যুক্তরাজ্যের জাতীয় অপরাধ সংস্থা কোনো মন্তব্য করেনি।
নদী বন্দর / পিকে