1. badsha.dru@gmail.com : admi2017 :
  2. nadibandar2020@gmail.com : Nadi Bandar : Nadi Bandar
বাগেরহাটে নির্মাণের পরেই অকেজো ‘পানি বিশুদ্ধকরণ ইউনিট’ - Nadibandar.com
সোমবার, ২৫ নভেম্বর ২০২৪, ০৩:১৪ পূর্বাহ্ন
নদী বন্দর প্রতিনিধি:
  • আপডেট টাইম : সোমবার, ২৯ মার্চ, ২০২১
  • ১৩৬ বার পঠিত

বাগেরহাটের উপকূলীয় দুটি উপজেলা রামপাল ও মোংলায় জলবায়ু পরিবর্তন ট্রাস্ট ফান্ডের অর্থায়নে নির্মিত ‘স্বয়ংক্রিয় সৌরচালিত পানি বিশুদ্ধকরণ ইউনিট’ এখন স্থানীয় জনগনের চোখের কাটায় পরিণত হয়েছে। লবণাক্ত এই অঞ্চলের দুঃস্থ ও হতদরিদ্র মানুষের সুপেয় পানি পাওয়ার আশার গুড়ে বালি পড়েছে। নির্মাণের পরেই অকেজো হয়ে পড়েছে অধিকাংশ পানি বিশুদ্ধকরণ ইউনিট। এতে স্থানীয়দের মাঝে চরম ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে। স্থানীয় জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তর, প্রশাসন ও জনপ্রতিনিধিরা এ বিষয়ে মুখ খুলতে নারাজ।

পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, জলবায়ু পরিবর্তন ট্রাস্ট ফান্ডের অর্থায়নে ‘জলবায়ু পরিবর্তনজনিত প্রভাব মোকাবেলার জন্য বাগেরহাট জেলার দুঃস্থ ও হতদরিদ্র জনগোষ্ঠীর জন্য সুপেয় পানি সরবরাহ প্রকল্পের আওতায় ৮ কোটি টাকা ব্যয়ে ২০২টি ‘স্বয়ংক্রিয় সৌরচালিত পানি বিশুদ্ধকরণ ইউনিট’ নির্মাণের অনুমোদন দেয়া হয়। ২০১৯ সালের সেপ্টেম্বর মাস থেকে শুরু হওয়া প্রকল্পের মেয়াদ শেষ হয়েছে ২০২০ সালের ডিসেম্বরে।

২০২০ সালের জুলাই মাসের দিকে মোংলা উপজেলার বুড়িরডাঙ্গা ইউনিয়নে প্রথম এই পানি বিশুদ্ধকরণ ইউনিটের নির্মাণ কাজ শুরু হয়। স্থানীয় জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তর, প্রশাসন ও জনপ্রতিনিধিদের না জানিয়েই ১৫টি ইউনিট নির্মাণ করা হয়। উপকারভোগীদের কাছ থেকে সুবিধা নেয়া এবং নিম্নমান সামগ্রী দিয়ে দায়সারা ভাবে প্রকল্পের কাজ শুরু করার অভিযোগ উঠলে এই আসনের সংসদ সদস্য ও পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়ের উপ-মন্ত্রী হাবিবুন নাহারকে স্থানীয় প্রশাসন ও সংশ্লিষ্টদের বিষয়টি দেখার নির্দেশ দেন। এরপর সেই ১৫টি ইউনিট ভেঙ্গে আবার নির্মাণ করা হয়।

পরবর্তীতে প্রকল্প মেয়াদ (২০২০ সালের ডিসেম্বর) পর্যন্ত মোংলায় ১৩৫টির মধ্যে ৪৪টি এবং রামপালে ৬৭টির মধ্যে ২৬টি ইউনিট নির্মাণ করা হয়েছে। কিন্ত নির্মাণের পর পরই এর বেশির ভাগ ইউনিট ব্যবহার অনুপযোগী হয়ে পড়ে আছে।

পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়ের জলবায়ু পরিবর্তন-২ শাখার পত্রে প্রকল্প কার্যক্রম বাস্তবায়ন এলাকায় বাংলাদেশ জলবায়ু পরিবর্তন ট্রাস্ট ফান্ডের অর্থায়নে অনুমোদিত প্রকল্পের সংশ্লিষ্ট তথ্য সম্বলিত দৃশ্যমান সাইনবোর্ড স্থাপন করার নির্দেশনা থাকলেও বাস্তবে তা দেখা যায়নি। প্রকল্পের নির্মাণ কাজ দেখভালের দায়িত্বে এলাকায় তেমন কাউকে দেখা মেলেনি বলে স্থানীয়রা জানান।

সরেজমিনে গিয়ে দেখা গেছে, স্থানীয় পুকুর দিয়ে পানি এনে বড় পানির ট্যাকিংতে রাখতে হবে। সোলারে প্লেটে বিদ্যুৎ তৈরি হয়ে তা দিয়ে পানি উঠে প্যানেলে যাবে। সূর্যের আলোতে বাষ্প হয়ে সেই পানি ৫টি প্যানেল ঘুরে আবার ছোট পানির ট্যাংকিংতে এসে জমা হবে। সেখান থেকে জনসাধারণ সুপেয় পানি নিবে। প্রতিটা ইউনিটের ব্যয় ধরা হয়েছে, ৩ লাখ ৯২ হাজার ২শ টাকা।

কিন্তু এই বড় পানির ট্যাংকিংতে পানি তোলার কোন ব্যবস্থা রাখা হয়নি। আর বেশির ভাগ ইউনিটে পানি দেয়া থাকলেও সুপেয় পানি উৎপাদন হচ্ছে না।

মোংলা উপজেলার মাকড়ডন গ্রামের ফজলুর রহমান বলেন, পানির প্লান্ট নির্মাণ করতে দেখে মনে করেছিলাম আমাদের পানির কষ্ট বুঝি কিছুটা কমবে। কিন্তু নির্মাণের ১০দিন পর থেকে এই প্লান্ট থেকে কেউ একফোঁটা পানিও নিতে পারছে না। কোথায় কি সমস্যা হয়েছে তা দেখারও কেউ নেই।

স্থানীয়দের অভিযোগ, পানির প্লান্ট তৈরি করার পরপরই নষ্ট হয়ে গেছে। কোন ভাবে রেখেই সবাই কেটে পড়েছে। তাছাড়া আমরা ঝড়-বন্যা কবলিত এলাকার মানুষ। কোন রকমে দায়সারা ভাবে যে পানির প্লান্ট নির্মাণ করা হয়েছে তা সামান্য ঝড় এলেই আকাশে উড়বে।এটা সরকারী অর্থ লুটপাট ছাড়া আর কিছু না।

এই বিষয়ে মোংলা জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তরের উপজেলা প্রকৌশলী, উপজেলা প্রশাসন ও উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান পানি বিশুদ্ধকরণ ইউনিট নির্মাণে অনিয়ম ও নির্মিত ইউনিটগুলো ব্যবহার অনুপযোগী হয়ে পড়ার কথা স্বীকার করলেও অজ্ঞাত তারা কারণে আনুষ্ঠানিক বক্তব্য দিতে রাজি হননি।

এবিষয়ে জানতে চাইলে জলবায়ু পরিবর্তনজনিত প্রভাব মোকাবেলার জন্য বাগেরহাট জেলার দুঃস্থ ও হতদরিদ্র জনগোষ্ঠীর জন্য সুপেয় পানি সরবরাহ” প্রকল্পের প্রকল্প পরিচালক ও জলবায়ু পরিবর্তন ট্রাস্টের সচিব ( উপ-সচিব) শুভাশীষ সাহা জানান, করোনার কারণে প্রকল্পের কাজ শুরু হতে কিছুটা দেরি হয়েছে। তিনি দুইবার প্রকল্প এলাকা পরিদর্শন করেছেন। পদাধিকার বলে প্রকল্প পরিচালক হয়েছেন দাবী করে তিনি বলেন, মূলত: উপ-প্রকল্প পরিচালকই সবকিছু ভাল জানেন।

এই প্রকল্পের উপ-প্রকল্প পরিচালক ও জলবায়ু পরিবর্তন ট্রাস্টের সহকারী পরিচালক (অভিযোজন) মোঃ ইসকান্দার হোসেন বলেন, কিছু কিছু অভিযোগ আমরা পেয়েছি। প্রকল্পের মেয়াদ শেষ হয়েছে। মেয়াদ বৃদ্ধি পাওয়ার পর সমাধান করা হবে।

এবিষয়ে জলবায়ু পরিবর্তন ট্রাস্টের ব্যবস্থাপনা পরিচালক (অতিরিক্ত সচিব) মাসুদ আহম্মদ বলেন, আমাদের আট শতাধিক প্রকল্প চলমান রয়েছে। প্রতিটা প্রকল্পের প্রকল্প পরিচালক বিষয়টি দেখে থাকেন।

নদী বন্দর / পিকে

নিউজটি শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এ জাতীয় আরো খবর..
© All rights reserved © 2020 Nadibandar.Com
Theme Developed BY ThemesBazar.Com