1. badsha.dru@gmail.com : admi2017 :
  2. nadibandar2020@gmail.com : Nadi Bandar : Nadi Bandar
নানা সমস্যার মুখে দেশসেরা আলুর হাট - Nadibandar.com
রবিবার, ২৪ নভেম্বর ২০২৪, ০৮:৫৫ অপরাহ্ন
নদী বন্দর প্রতিনিধি:
  • আপডেট টাইম : বৃহস্পতিবার, ১ এপ্রিল, ২০২১
  • ১৬৩ বার পঠিত

ধলেশ্বরী নদীর নাব্য সংকটে মুন্সিগঞ্জের ঐতিহ্যবাহী বেতকা আলুর আড়ত এখন পড়েছে সংকটের মুখে। নদীঘেঁষা দেশের সর্ববৃহত আলুর এই আড়তে বেচাকেনা হ্রাস পাচ্ছে। কমছে আড়ত সংখ্যা। 

২০০ বছরের প্রাচীন মুন্সিগঞ্জের টঙ্গীবাড়ি উপজেলার বেতকা আলুর আড়ত এখন চ্যালেঞ্জের মুখে। যেই ধলেশ্বরী নদী ঘিরে দেশসেরা আলুর হাট বসে, সেই নদী এখন খালে রূপ নিয়েছে। যেখানে লঞ্চ-স্টিমার আর মালবাহী জাহাজের ভিড় পড়ে যেতে, সেখানে এখন ট্রলার চলা দায়। নদীতে নাব্য সংকটের কারণে কৃষক উৎপাদিত আলু আড়তে উঠানো এবং পাইকারদের বিভিন্ন এলাকায় পাঠানোর খরচও বেড়ে যাচ্ছে।

আড়তদাররা বলছেন, সড়ক পথে আলু পরিবহনে দ্বিগুণ পর্যন্ত খরচ বেশি হয়। অন্যদিকে নদী পথে সেই খরচ কম ছাড়াও সহজে মালামাল পরিহন করা যায়। ঝুঁকি ঝামেলা না থাকায় পণ্যের গুণাগুণও ভালো থাকে। আর রাস্তাঘাটে যানজটের কারণে পরিবহনে সময়ও বেশি লাগছে। তাই কৃষক-আড়তদার সবাই নৌপথেই পরিবহনের প্রতি বেশি আগ্রহী। কিন্তু নৌপথ এখন বন্ধ প্রায়। এতে নৌপথের নৌযানগুলো সংশ্লিষ্টরাও বেকার সময় কাটাচ্ছে। অনেকে নৌযান বিক্রিও করে দিচ্ছে। 

বড় নদী হিসেবে ধলেশ্বরী মুন্সিগঞ্জের গজারিয়ার মেঘনার থেকে মুন্সিগঞ্জ লঞ্চঘাটের বিপরীতে শীতলক্ষ্যাকে পাশ কাটিয়ে মুক্তারপুর হয়ে সোজা মিরকাদিম বন্দর (কাঠপট্টি) দিয়ে চলে গেছে সিরাজদিখানের তালতলা। শত শত বছর ধরে এটি খরস্রোতা নদী হিসাবেই সুপরিচিত। নদীপথে যাতায়াত ছাড়াও কৃষকের উৎপাদিত পণ্য ও উপকরণ বাজারজাত এবং এই অঞ্চলের মানুষের পণ্য পরিবহন সবই ছিল নদী ঘিরে। আর আশপাশের জমিজমায় সেচ প্রধান কেন্দ্রই ছিল এই নদী। যুগ যুগ ধরে এই নদী দিয়ে তালতলা-সদরঘাট লঞ্চ যাতায়াত করেছে। 

বিআইডব্লিউটিএর প্রাচীন লঞ্চঘাট ছিল তালতলা, বেতকা ও আব্দুল্লাপুর। এই তিনটি লঞ্চঘাটই এখন বিলুপ্ত। নাব্য সংকটের কারণে লঞ্চ চলাচল বন্ধ হয়ে যাওয়ায় বিআইডব্লিউটিএ লঞ্চঘাটের পন্টুনও সরিয়ে নিয়ে গেছে কয়েক বছর আগে। এই তিন ঘাট থেকে সরকারের রাজস্বও বন্ধ হয়ে গেছে। এদিকে এই নাব্য সংকটের কারণেই জেলার সর্ববৃহৎ পাটের মিল বেতকা ব্রড বারলাব ইন্ডাস্ট্রি বন্ধ রয়েছে বেশ কিছুদিন ধরে।    

টঙ্গীবাড়ি উপজেলার বেতকা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আলম শিকদার বাচ্চু জানান, গ্রামীণ অর্থনীতির দেশে সেরা ইউনিয়ন ছিল বেতকা। জেলার সবচেয়ে বড় ইন্ডাস্ট্রিও এই বেতকাতেই ছিল। কিন্তু নদীর পানি শুকিয়ে গেছে সব ম্লান করে দিয়েছে। ব্যাংকের শাখাগুলোও এখন সরে যাচ্ছে। 

ধলেশ্বরী নদীতে নাব্য সংকটে আলুর আড়ত ছাড়াও হিমাগারগুলোতেও আলু সংরক্ষণ-বাজারজাত এবং কৃষকের কৃষি উপকরণ পরিবহনে সংকট তৈরি হয়েছে। 

বেতকা হাটের সাধারণ সম্পাদক রব খান জানান, ধলেশ্বরী নদীটি খনন করা না হলে এই অঞ্চলের অর্থনীতি আরও চ্যালেঞ্জের মুখে পড়বে। এখানে সব আড়তই হুমকির মুখে পড়ে যাবে। ঐতিহ্যবাহী বেতকা আরতে বর্তমানে নদীপথে আলু সরবরাহ হচ্ছে না। দ্রুত এই নদীর পুনঃখনন করা এখন সময়ের দাবি। তিনি জানান, দেশসেরা আলুর এই আরতে প্রতিদিন এখনও গড়ে দেড়শ’ মেট্রিক টন আলু বিক্রি হয়। ধলেশ্বরীর নাব্য সংকটে ৩২টি আড়ত হ্রাস পেয়ে এখন ১৯টি। চ্যালেঞ্জে পড়েছে আশপাশের ১৫টি হিমাগার।

মুন্সিগঞ্জের জেলা প্রশাসক মো. মনিরুজ্জামান তালুকদার জানান, এই নদীর নাব্যতা ফেরাতে জেলার গুরুত্বপূর্ণ সভায়ও আলোচনা হয়েছে। বিষয়টি সরকারের উচ্চপর্যায়ে অবহিত করা হয়েছে।

নদী বন্দর / এমকে

নিউজটি শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এ জাতীয় আরো খবর..
© All rights reserved © 2020 Nadibandar.Com
Theme Developed BY ThemesBazar.Com