চাঁদপুরের পদ্মা-মেঘনার অভয়াশ্রমে দেদারছে চলছে ইলিশ নিধন। স্থানীয় জেলেরা বলছে, বহিরাগত জেলেরা এসে নিধন করছে জাটকা। তবে প্রশাসনের দাবি, ইলিশ রক্ষায় অভিযান অব্যাহত রয়েছে।
ইলিশ রক্ষায় প্রতি বছরের মার্চ-এপ্রিল এই দু‘মাস পদ্মা-মেঘনায় সকল প্রকার মাছ ধরায় থাকে নিষেধাজ্ঞা। মতলব উত্তর ষাটনল থেকে লক্ষীপুর জেলার চর আলেকজান্ডার পর্যন্ত ১‘শ কিলোমিটার এলাকা এই নিষেধাজ্ঞার আওতায় রয়েছে। স্থানীয় জেলেরা নদীতে না নামলেও বিভিন্ন অঞ্চলের জেলেরা চাঁদপুরের নদীতে মাছ ধরছে প্রতিদিন।
এ বিষয়ে স্থানীয় জেলেরা বলেন, ছোট ছোট জাটকা ধরে নিয়ে যাচ্ছে। আর আমরা এই যে লাখ লাখ টাকা দামের জাল কিনে বসে আছি, আমাদের তো ব্যাপক ক্ষতি হচ্ছে। সরকার দুই মাস নিষেধাজ্ঞা দিছে, আমরা তা মেনেই কাজকাম বন্ধ রাখছি। কিন্তু আমাদের দেখার কেউই নাই। সরকার চাল দিচ্ছে কিন্তু তারা তা পাচ্ছেন না বলেও অভিযোগ করেন কেউ কেউ।
এই নিষেধাজ্ঞার সময়ে নানা সমস্যার কথা তুলে ধরেন স্থানীয় জেলেরা। তারা বলেন, এই সময়ে কোনও কাজ নাই, আমরা তো শিক্ষিতও না, তাই চাকরি-বাকরিও নাই। এখন জান বাঁচাইতে হইলে তো কিছু করে খেতে হবে! কিন্তু কি করবো? ঘরে চাল-ডাল নাই, খেয়ে না খেয়েই দিন কাটছে।
এদিকে, মৎস্য অফিস ও নৌ-পুলিশের সহায়তায় পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনার কথা বলছে প্রশাসন। চাঁদপুর জেলা নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট সেলিনা আক্তার বলেন, অভিযান চালিয়ে আইনি প্রক্রিয়ার মাধ্যমে বিভিন্ন জনকে বিভিন্ন মাত্রায় জেল ও জরিমানা করা হয়। জাটকা ইলিশ রক্ষায় আমাদের এ অভিযান অব্যাহত থাকবে।
অন্যদিকে অভয়াশ্রমে মাছ ধরা বন্ধে প্রচার এবং শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সাথে সমন্বিত প্রচেষ্টা চালানোর কথা জানান জেলা মৎস্য কর্মকর্তা আসাদুল বাকী। তিনি বলেন, তাদেরকে মোটিভেশন, জনসভা, মাইকিং করে প্রচারণার সঙ্গে সঙ্গে তাদেরকে নিষেধাজ্ঞার ব্যাপারে উদ্বুদ্ধ করা হয়। একইসঙ্গে আমরা আইনগত ব্যবস্থাও নিচ্ছি, যাতে করে আমাদের এ জাতীয় মাছের উৎপাদন বৃদ্ধিকে কোনওভাবেই ব্যাহত করতে না পারে।
জেলা মৎস্য অফিসের তথ্যানুযায়ী, নিষেধাজ্ঞা অমান্য করায় এ পর্যন্ত ১’শ ৭১ জনকে বিভিন্ন মেয়াদে সাজা দেয়া হয়েছে। জব্দ করা হয়েছে সাড়ে ১২’শ টন জাটকা ও সাড়ে ৫৩ লক্ষ্য মিটার কারেন্ট জাল।
নদী বন্দর / জিকে