চৈত্রের খরতাপ চলছে। বৃষ্টিরও দেখা নেই। অথচ বর্ষাকালের রূপ নিয়েছে তিস্তা নদীর পানিপ্রবাহ। নীলফামারীর ডিমলা উপজেলার পশ্চিম ছাতনাই ইউনিয়নের কালিগঞ্জ জিরো পয়েন্ট দিয়ে উজানের স্রোতধারায় পানি প্রবেশ করছে হু হু করে, যা দ্রুত তিস্তা ব্যারাজ অতিক্রম করে চলে যাচ্ছে ভাটির দিকে।
গত কয়েক দিন আগেও নদীর বুকে যে ধু-ধু বালুচর দেখা গিয়েছিল, তা যেন নিমিষেই নদীর পানিতে চাপা পড়ে গেছে। সেচ ক্যানেলগুলো পানিতে টইটম্বুর হয়ে পড়েছে। ভরা তিস্তায় জেলেদের জালে ধরা পড়ছে বৈরালি মাছ। গত দুই বছর থেকে জেলেদের জালে বৈরালি মাছ না থাকায় চরম বিপাকে পড়েছিলেন তিস্তা পাড়ের জেলেরা।
চলতি বোরো আবাদে তিস্তা ব্যারাজ কমান্ড এলাকার নীলফামারী, রংপুর, দিনাজপুর জেলার ১১ উপজেলায় ৬৫ হাজার হেক্টরে সেচ চলমান রয়েছে। তিস্তার সেচ ক্যানেলগুলো এখন পানিতে টইটম্বুর। সরজমিনে দেখা যায়, উজান থেকে পানিপ্রবাহ নদী জুড়ে বয়ে চলছে। ডালিয়ার তিস্তা নদীর পানি পরিমাপক অফিস বলছে, উজানের ঢলে তিস্তায় এখন প্রায় ১৫ হাজার কিউসেকের মতো পানিপ্রবাহ চলছে।
এর আগে পানিপ্রবাহ ছিল মাত্র ১ হাজার ৮০০ কিউসেক। তিস্তা পাড়ের বাইশপুকুর চরের জেলে রমজান আলী জানান, নদীর পানি কমে যাওয়ায় মাছও ঠিকমতো পাওয়া যাচ্ছিল না। উজানের জোয়ারে নদী এখন পানিতে ভরে গেছে। মাছও পাওয়া যাচ্ছে প্রচুর।
পানি উন্নয়ন বোর্ডের প্রধান প্রকৌশলী (উত্তরাঞ্চল) জ্যোতি প্রসাদ ঘোষ বলেন, তিস্তায় হঠাত্ পানি বৃদ্ধি পেয়েছে, যা ভালোর দিক বলে মনে করছি আমরা। তিনি আরো জানান, তিস্তা সেচ প্রকল্প কৃষি ক্ষেত্রে বৈপ্লবিক পরিবর্তন সাধন করেছে।
প্রকল্পের কমান্ড এরিয়ার ১ লাখ ১৬ হাজার হেক্টর জমির তৃণমূল পর্যায়ে সেচের পানি পৌঁছে দিতে ৭৫০ কিলোমিটার দীর্ঘ সেকেন্ডারি আর টারসিয়ারি সেচ ক্যানেল নির্মাণে একটি বিশেষ প্রকল্প হাতে নিয়েছে পানি উন্নয়ন বোর্ড। এতে ব্যয় ধরা হয়েছে ১ হাজার ৪৭৫ কোটি টাকা।
তিনি আরও জানান, প্রকল্পটি একনেকে পাস হলেই সেকেন্ডারি সেচ ক্যানেলগুলোতে করা হবে সিসি লাইনিং আর টারসিয়ারি ক্যানেলগুলোতে দেওয়া হবে আরসিসি ঢালাই। এতে পানির অপচয় ছাড়াই দ্রুত পানি পৌঁছে যাবে জমিতে।
নদী বন্দর / জিকে