চলনবিল অধ্যুষিত নাটোরের সিংড়া উপজেলায় আশীর্বাদরূপে ধরা দিয়েছে রোববারের (৪ এপ্রিল) কালবৈশাখী ঝড়। তীব্র বৃষ্টিপাত না হওয়ায় কিছুটা নুইয়ে পড়া ছাড়া তেমন কোনো ক্ষতি হয়নি মৌসুমের বড় আবাদ বোরো ধানের। বরং পরিমিত বৃষ্টিতে কৃষকের দীর্ঘদিনের সেচ সমস্যা কিছুটা লাঘব হয়েছে। পাট, তিল, করলাসহ বিভিন্ন ফসলের জন্য পরিমিত বৃষ্টিপাত দরকার ছিলে বলে মনে করছেন কৃষকরা।
জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের তথ্য মতে, সিংড়া উপজেলায় চলতি বোরো মৌসুমে ৩৬ হাজার ৬০০ হেক্টর জমিতে বোরো ধানের আবাদ হয়েছে। এর মধ্যে রোববার বিকেলের কালবৈশাখী ঝড়ে ৮০০ হেক্টর জমির বোরো ধান নুইয়ে পড়েছে।
সোমবার (৫ এপ্রিল) উপজেলার ছাতারদিঘী ও রামানন্দ খাজুরা ইউনিয়ন ঘুরে দেখা যায়, বিস্তীর্ণ বোরো ক্ষেতের ওপর দিয়ে কালবৈশাখী ও দমকা হাওয়া বয়ে যাওয়ায় ধানের শীষ নুইয়ে পড়ে। কৃষকরা জানান, বৃষ্টি কম হওয়ায় ক্ষেতে জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হয়নি।
অন্যদিকে চলনবিলে পানির স্তর নিচে নেমে যাওয়ায় প্রকট পানি সঙ্কটে ভুগছিলেন কৃষকরা। পানির অভাবে সেচকাজ বেশ দুরূহ ও ব্যয়বহুল হয়ে পড়েছিলে। সামান্য বৃষ্টি কিছুটা সেচের কাজ করেছে।
ইটালি ইউনিয়নের পাট চাষি আদম আলী বলেন, ‘পাটের জন্য বৃষ্টি উপকারে এসেছে। এক বিঘা জমিতে একবার সেচ দিতে ৮০০ থেকে ৯০০ টাকা গুনতে হয়। এখন অন্তত কয়েকটা সেচ দিতে হবে না।’
কলম ইউনিয়নের তিল চাষী রফিকুল ইসলাম বলেন, ‘গত কয়েক বছর ধরেই চৈত্রের কালবৈশাখী ফসল নষ্ট করে। এবার মৌসুমের প্রথম বৃষ্টি তিলসহ বেশকিছু শাকসবজি আবাদে পানির অভাব দূর করেছে।’
সিংড়া উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা সেলিম রেজা বলেন, ‘রোববারের কালবৈশাখীর গতিবেগ এতেটাই বেশি ছিলে যে বৃষ্টিপাত কম হয়েছে। আমরা আজ দুপুর পর্যন্ত বিভিন্ন ইউনিয়ন থেকে ক্ষয়ক্ষতির তথ্য সংগ্রহ করেছি। ৮০০ হেক্টর জমির ধান নুইয়ে পড়া ছাড়া ফসলের তেমন কোনো ক্ষতি হয়নি। দু-একদিন রোদ পেলে ধানের শীষগুলো আবারও দাঁড়িয়ে যাবে।’
নদী বন্দর / জিকে