সরকারের করোনা সংক্রমণ রোধে লকডাউন ঘোষণায় দেশে গণপরিবহন, শিক্ষাসহ বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান আগামী ৭ দিন বন্ধ থাকলেও স্বাভাবিক রয়েছে বেনাপোল বন্দরের আমদানি- রপ্তানি বাণিজ্য। দুই দেশের মধ্যে শর্তসাপেক্ষে পাসপোর্টযাত্রী যাতায়াত স্বাভাবিক রয়েছে।
তবে বেনাপোল থেকে দুর পাল্লার যাত্রীবাহি বাস চলাচল বন্ধ থাকায় শতশত পাসপোর্ট যাত্রী আটকা পড়েছে বিভিন্ন পরিবহন অফিসে। অনেকে আবার রাতে ভ্যান রিকশা যোগে বিভিন্ন আত্মীয় সজনদের বাড়িতে আশ্রয়ের জন্য চলে গেছে।
বেনাপোল বন্দরের উপপরিচালক আব্দুল জলিল বলেন, লকডাউনের মধ্যে স্বাভাবিক নিয়মে বন্দরে বাণিজ্যিক কার্যক্রম চলেছে। এছাড়া ট্রাকচালকরা আমদানি পণ্য নিয়ে দেশের বিভিন্ন গন্তব্যে গেছেন। পাসপোর্টযাত্রী যাতায়াতও স্বাভাবিক ছিল বলে জানান তিনি।
হঠাৎ করে দেশে করোনা সংক্রমণ ও মৃত্যুহার বেড়ে যাওয়ায় প্রতিরোধে সরকার ১৮টি প্রস্তাবনা জারি করে। কিন্তু জনসাধারণের সচেতনতার অভাবে লাফিয়ে লাফিয়ে বাড়তে থাকে করোনায় আক্রান্ত ও মৃত্যুহার। অবশেষে বাধ্য হয়ে সরকার ৭ দিনের লকডাউন ঘোষণা করে। এতে গণপরিবহন, শিক্ষাসহ বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান বন্ধের মধ্যে পড়ে।
তবে দেশের শিল্প কলকারখানায় উৎপাদন ও সরবরাহ সচল রাখতে আমদানি-রপ্তানি বাণিজ্য, পণ্য পরিবহন লকডাউনের আওতামুক্ত রাখা হয়।
এদিকে বন্দরের কার্যক্রমের পাশাপাশি বেনাপোল কাস্টমসের কার্যক্রমও স্বাভাবিক রয়েছে বলে জানিয়েছেন বেনাপোল কাস্টমস হাউসের ডেপুটি কমিশনার মুস্তাফিজুর রহমান। বেনাপোল ট্রাক ট্রান্সপোর্ট মালিক সমিতির সভাপতি আতিকুজ্জামান সনি জানান, লকডাউনের মধ্যে বন্দর থেকে পণ্য সরবরাহ স্বাভাবিক রাখতে অনান্য সময়ের মতো চালকরা মালামাল বহন করেছেন। বন্দরে চলাফেরার সময় চালকদের বিশেষ করে মাস্ক ও ডিপো ব্যবহারের পরামর্শ দেয়া হয়েছে।
বেনাপোল বন্দর শ্রমিক ইউনিয়নের সভাপতি কলিমউদ্দীন বলেন, সব সংকট মুহূর্তে বন্দর সচল রাখতে শ্রমিকরা ঝুঁকি নিয়ে পণ্য খালাসের কাজ করে আসছেন। লকডাউনের মধ্যেও শ্রমিকরা সংক্রমণ প্রতিরোধ ব্যবস্থা নিয়ে পণ্য খালাসের কাজ করছেন।
বেনাপোল বন্দরের আমদানি-রপ্তানি কারক সমিতির সাধারন সম্পাদক আলী হোসেন জানান, গত বছরে করোনার সময় আমদানি-রপ্তানি বাণিজ্য বন্ধ হয়ে পড়ায় ব্যবসায়ীরা বড় ধরনের লোকশানের মুখে পড়েছিলেন। প্রয়োজনীয় কাঁচামালের অভাবে শিল্পকলকারখানা বন্ধ হওয়ার উপক্রম হয়েছিল। তবে এবার লকডাউনের মধ্যে বন্দর ও কাস্টমসের কার্যক্রম সচল রয়েছে।
বেনাপোল ইমিগ্রেশন ওসি আহসান হাবিব জানান, লকডাউনের মধ্যে এপথে শর্তসাপেক্ষে দুই দেশের মধ্যে পাসপোর্টধারীযাত্রী যাতায়াত স্বাভাবিক আছে। তবে গণপরিবহন বন্ধ থাকায় যাত্রীর সংখ্যা অন্যান্য দিনের তুলনায় কম। বর্তমানে মেডিকেল, বিজনেস ও কূটনৈতিক ভিসায় যাতায়াত করছেন যাত্রীরা। ট্যুরিস্ট ভিসা এখন পর্যন্ত বন্ধ। বর্তমান করোনা পরিস্থিতির মধ্য দিয়ে ভারত ভ্রমণে প্রয়োজন হচ্ছে ৭২ ঘণ্টার মধ্যে কোভিড-১৯ নেগেটিভ সার্টিফিকেট।
নদী বন্দর / পিকে