মৌসুমী ফল তরমুজ চাষের অন্যতম সুপরচিতি এলাকা হিসেবে পরিচিত বরগুনার বেতাগী উপজেলা। ফলন ভালো হওয়ার পাশাপাশি চাহদিা থাকায় এ অঞ্চলের মানুষের প্রধান অর্থকরী ফসল তরমুজ। কিন্তু এক সপ্তাহ আগে পূর্ণিমার জোয়ারের পানিতে তরমুজ ভেসে গাছ নষ্ট হয়ে যাওয়ায় চাষিদের এখন মাথায় হাত।
জানা গেছে, উপজেলার সদর ইউনিয়নের রানীপুর গ্রামের আব্দুর রাজ্জাক ও সহিদুর রহমান পুটিয়াখালী গ্রামের বিষখালী নদী তীরবর্তী এলাকার প্রায় ৪০ একর জমিতে তরমুজ ও ফুটির চাষ করেন। ফলনও মোটামোটি ভালো হয়েছিল। আর দুই-তিন সপ্তাহ পরেই তরমুজ বিক্রি করার উপযুক্ত সময় হত।
কিন্তু গত ২৮ মার্চ পূর্ণিমায় জোয়ারে তরমুজ খেতে পানি ঢুকে পড়ে। এর ৪-৫ দিন পর ওই তরমুজ গাছ শুকিয়ে যায় এবং পাতা ঝরে যায়। সমস্ত মাঠজুড়ে পড়ে থাকে অপরিপক্ক তরমুজ। ওই তরমুজ পরিপক্ক না হওয়ায় পঁচে গেছে।
এলাকার তরমুজচাষি আব্দুর রাজ্জাক ও সহিদুর রহমান ধারদেনা করে এবং বিভিন্ন বেসরকারি সংস্থা থেকে ঋণ নিয়ে চাষ করায় বিপাকে পড়েছেন। নিঃস্ব হয়ে পথে বসেছেন এই দুই কৃষক। এত কষ্টের ফসল পানিতে নষ্ট হওয়ায় কর্মহীন হয়ে পড়েছেন ওই দুই কৃষকের সাথে কাজ করা ৫০ জন শ্রমিক।
বেতাগী পৌর শহরের তরমুজ বিক্রেতা সেলিম মিয়া জানান, এ বছর তরমুজের ফলন ভালো হয়েছে। বড় সাইজের তরমুজ ১শ থেকে দেড়শ টাকা, মাঝারি সাইজের তরমুজ ৭০ থেকে ৮০টা এবং ছোট সাইজের তরমুজ গড়ে ৩০ টাকা থেকে ৫০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।
কৃষক আব্দুর রজ্জাক জানান, ধারদেনা করে এবং স্থানীয় কয়েকটা এনজিও থেকে ঋণ নিয়ে তরমুজ চাষ করি। প্রতি একর জমিতে বীজ, সার, সেচ, ওষুধ ও শ্রমিকসহ খরচ হয়েছে প্রায় ৫০ হাজার টাকারও বেশি। ফসল ভালো হওয়ায় একর প্রতি উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছিল লক্ষাধিক টাকা। ফসলের শুরুটা খুব ভালো হওয়ায় তারা ভেবেছিলেন করোনায় কর্ম না থাকলেও স্থানীয় বাজারে ফসল বিক্রি করে কষ্টের দিনগুলোতে দু’মুঠো আহারের ব্যবস্থা হবে।
এ ব্যাপারে বেতাগী উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মো. ইকবাল হোসেন মজুমদার বলেন, এ বছর তরমুজের ভালো ফলন হয়েছে এবং দামও ভালো পেত। তবে পুটিয়াখালী গ্রামের নদীর তীর এলাকার ফুটি-তরমুজের মাঠ পরিদর্শন করে ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকদের উপজেলা কৃষি বিভাগের পক্ষ থেকে পরবর্তী ধানচাষের জন্য সাধ্যমতো বীজ ও সার দিয়ে সহায়তা করা হবে।
নদী বন্দর / জিকে