পদ্মা নদী বিধৌত জেলা রাজবাড়ী। এ জেলার ৮৫ কিলোমিটার অংশ জুড়ে রয়েছে পদ্মা। প্রতি বছর পদ্মার ভাঙনে ছোট হয়ে আসছে জেলার মানচিত্র এবং ভিটেমাটি হারিয়ে নিঃস্ব হয়ে পড়ছে হাজার হাজার পরিবার।
এ ভাঙন রোধে রাজবাড়ী শহর রক্ষা বাঁধের দ্বিতীয় পর্যায়ের কাজ ২০১৮ সালের জুন ও ২০১৯ সালের জুলাইতে প্রথম সংশোধিত প্রকল্পের সাত কিলোমিটার অংশে পদ্মা নদীর ডান তীরে প্রতিরক্ষার কাজ শুরু করে পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবো)। চলতি বছরের মে মাসে প্রকল্পের মেয়াদ শেষ হওয়ার কথা থাকলেও এখনও বাকি রয়েছে কাজ।
রাজবাড়ীর শহর রক্ষা বাঁধের ডান তীর প্রতিরক্ষার কাজের দ্বিতীয় পর্যায়ের প্রকল্পের আওতায় রাজবাড়ী সদর উপজেলার বরাটে তিন ও মিজানপুরে দেড় কিলোমিটারসহ সাড়ে চার কিলোমিটার এবং প্রথম সংশোধিত শহর রক্ষা বাঁধের গোদার বাজার অংশের আড়াই কিলোমিটারসহ মোট সাত কিলোমিটার এলাকায় ৪৫২ কোটি টাকা ব্যয়ে কাজ শুরু হয়। এতে দ্বিতীয় পর্যায়ের সাড়ে চার কিলোমিটারে ৩৭৬ কোটি ও প্রথম সংশোধিততে এক হাজার ৫২৭ মিটারে ৭৬ কোটি টাকা ব্যয় ধরা হয়েছে।
প্রকল্পের জন্য আট দশমিক তিন কিলোমিটার অংশে ৪৯ লাখ ঘনমিটার ড্রেজিং করা এবং সাত কিলোমিটার বাঁধ এলাকায় ১৪ লাখ ৪৬ হাজার ৪৫৭ বস্তার মধ্যে এখন পর্যন্ত ডাম্পিং করা হয়েছে ১৩ লাখ ২৭ হাজার ৫৫৪ বস্তা।
এদিকে ১৮ লাখ ৯১ হাজার ১৭৮টি সিসি ব্লকের মধ্যে বানানো হইছে ১৬ লাখ ১০ হাজার ব্লক। বর্তমানে ডাম্পিং ও পিচিংয়ের কাজ চলছে।
এছাড়া বাঁধের স্লোপিং করার স্থানে আগের ডাম্পিং করা জিও ব্যাগ এস্কেভেটর দিয়ে ফেলতে গিয়ে বেশির ভাগই ছিঁড়ে গেছে। যা নিয়ে যাচ্ছে স্থানীয়রা।
নদী তীরবর্তী বাসিন্দারা জানান, সামনে বর্ষা মৌসুম। দ্রুত কাজ শেষ নাহলে আবার ভাঙনের কবলে পড়বেন তারা। এখনও অনেক স্থানে কাজ শুরু হয়নি। বার বার পাউবোর লোকজনকে বলেও কাজ হচ্ছে না। নদীতে পানি বাড়তে শুরু করেছে। কয়েকদিন পর আর কাজ করা যাবে না।
ব্যবসায়ী আল-আমিন মোস্তফা বলেন, বাঁধের কাজ খুব ধীর গতিতে হচ্ছে। এছাড়া পানির গভীরতা অনুযায়ী ব্লক বসানোর কাজ হয়নি। ফলে বাঁধ স্থায়ী হওয়া নিয়ে শঙ্কা রয়েছে।
তিনি আরো বলেন, দুই বছর ধরে চলা বাঁধের কাজ এখনও শেষ হয়নি। এখানে একটি ইটভাটা আছে। সেখানে কয়েকশ শ্রমিক কাজ করেন। কাজ দ্রুত শেষ করতে না পারলে হুমকিতে পড়বে শহর রক্ষা বাঁধ, নদী তীরবর্তী ফসলি জমি, বসতবাড়ি, মসজিদ, স্কুল, ইটভাটা ও ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান।
রাজবাড়ী সদর উপজেলা পাউবো উপ-সহকারী প্রকৌশলী মো. হাফিজুর রহমান বলেন, প্রকল্পের মেয়াদ শেষ হওয়ার আগেই কাজ শেষ হবে। ইতোমধ্যে ডিপিএম প্যাকেজের প্রায় ৯০ ও ওটিএম প্যাকেজের প্রায় ৮০ ভাগ কাজ শেষ হয়েছে। পিচিং একসাইড থেকে করা হচ্ছে এবং অন্য সাইডে গিয়ে শেষ হবে। এছাড়া কাজের গুণগত মানও ভালো হচ্ছে।
নদী বন্দর / এমকে