টাঙ্গাইলের ভূঞাপুরে অবৈধ বালুর ঘাটে অভিযান চালিয়ে বালু উত্তোলন ও বিক্রির সময় আটক ১১ জনের প্রত্যেককে ২০ দিন করে বিনাশ্রম কারাদণ্ড দিয়েছেন ভ্রাম্যমাণ আদালত। এসময় বালুর ঘাট থেকে চারটি ভেকু (বালু তোলার যন্ত্র),পাঁচটি ট্রাক ও নগদ ৪৪ হাজার ৭৬২ টাকা জব্দ করা হয়।
বুধবার (২১ এপ্রিল) দুপুরে উপজেলার জগৎপুরা এলাকায় পুলিশ ও র্যাবের সহায়তায় অভিযান পরিচালনা করেন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মোছা. ইশরাত জাহান।
দণ্ডপ্রাপ্তরা হলেন-উপজেলার ছাব্বিশা গ্রামের আরশেদের ছেলে এনামুল, তাহাছানের ছেলে ছানা, জগৎপুরা গ্রামের পাঠান আলীর ছেলে ওয়াসিম খান, রসুনা গ্রামের খোকনের ছেলে ইমতিয়াজ, নলিন গ্রামের জরানের ছেলে নুরুল ইসলাম, কুঠিবয়ড়া গ্রামের আকাব্বরের ছেলে ছালাম সরকার, বাগবাড়ি গ্রামের জব্বারের ছেলে জাহাঙ্গীর আলম, ছাব্বিশা গ্রামের হায়দার আলীর ছেলে হাফিজুর, একই গ্রামের আব্দুল কাদেরের ছেলে আপেল, জড়ৎপুরা গ্রামের পাঠান আলীর ছেলে আরমান খান ও ছাব্বিশা গ্রামের বাবলু মিয়ার ছেলে বিপ্লব হোসেন।
ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনার সময় উপস্থিত ছিলেন র্যাব ১২ সিপিসি-৩ টাঙ্গাইলের কোম্পানী কমান্ডার (ভারপ্রাপ্ত) সিনিয়র সহকারী পুলিশ সুপার এরশাদুর রহমান।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, উপজেলার নিকরাইল, গোবিন্দাসী ও অজুর্না ইউনিয়নের বিভিন্ন এলাকায় যমুনা নদীতে জেগে ওঠা চর কেটে স্থানীয় প্রভাবশালীরা দীর্ঘদিন ধরে ট্রাকযোগে বিক্রি করে আসছেন। এতে বঙ্গবন্ধু সেনানিবাস সংলগ্ন থেকে ঘোষিত অর্থনৈতিক অঞ্চল এলাকার নিকরাইল ইউনিয়নের সিরাজকান্দি, পাথাইলকান্দি, পুর্নবাসন, পাটিতাপাড়া ও মাটিকাটা এবং গোবিন্দাসী ইউনিয়নের চিতুলিয়াপাড়া, ভালকুটিয়া, খানুরবাড়ি ও বাগবাড়ি এলাকা থেকে স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদ (ইউপি) চেয়ারম্যানসহ স্থানীয় আওয়ামী লীগ ও প্রভাবশালীরা অবৈধভাবে বালুর ঘাট বানিয়ে হাজার হাজার ট্রাকযোগে বালু বিক্রি করছে। গোবিন্দাসী ইউনিয়নের চরচিতুলিয়া ও গাবসারা ইউনিয়নের রামপুর এলাকার যমুনা নদীতে জেগে ওঠা চর কেটে বিক্রি করা হলেও প্রশাসন থেকে সেটি বন্ধের কোনো উদ্যোগ নেয়নি বলে স্থানীয়রা অভিযোগ করেছেন।
অপরদিকে এসব অবৈধ বালু ঘাটের পরিবহনকৃত বালুর ট্রাক সড়ক ও মহাসড়কে বেপরোয়াভাবে চলাচল করায় দুর্ঘটনার পাশাপাশি স্থানীয় সড়কগুলো নষ্ট হয়ে যাচ্ছে।
স্থানীয়রা জানান, শুষ্ক মৌসুমে যমুনা নদীতে পানি নেই। এতে নদীর বিভিন্ন এলাকায় চর জেগে উঠেছে। ফলে অসাধু বালু ব্যবসায়ীরা প্রশাসনের সহায়তায় দীর্ঘদিন ধরে নদীর চর কেটে বিক্রি করছেন। তবে প্রশাসন থেকে নামমাত্র অভিযান পরিচালিত হলেও পরবর্তীতে আবারও ঘাট চালু হয়ে যায়।
ভূঞাপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মোছা. ইশরাত জাহান বলেন, ‘উপজেলার জগৎপুরা এলাকায় যমুনা নদী থেকে অবৈধভাবে বালু উত্তোলনের দায়ে ১১ জনকে কারাদণ্ড এবং ভেকু, ট্রাক ও নগদ টাকা জব্দ করা হয়েছে। পর্যায়ক্রমে সব বালুর ঘাটে অভিযান অব্যাহত থাকবে।
নদী বন্দর / জিকে