কৃষ্ণচূড়া ফুলকে দেখলে মনে হয় যেন আগুনের একটি জ্বলন্ত শিখা জ্বলছে। বৈশাখ-জ্যৈষ্ঠ মাসে চারপাশে যখন প্রচণ্ড গরম তখনই কৃষ্ণচূড়ার ডাল থোকা থোকা লাল ফুলে ভরে ওঠে।
শুধু বসন্ত আর গ্রীষ্মেই নয়, বর্ষায়ও কৃষ্ণচূড়ার ডালে ডালে ফুল ফোটে। ফুলের জগতে কৃষ্ণচূড়ার মতো এমন উজ্জ্বল ফুল বেশ দুর্লভই বলা চলে।
জানা যায়, কৃষ্ণচূড়ার আদি নিবাস মাদাগাসকারে। ক্যারিবিয়ান অঞ্চল, আফ্রিকা, হংকং, তাইওয়ান, দক্ষিণ চীন, বাংলাদেশ, ভারতসহ বিশ্বের অনেক দেশে এটি জন্মে।
কৃষ্ণচূড়ার নানা প্রজাতি রয়েছে। প্রজাতি ভেদে এদের ফুলের রঙ হয় ভিন্ন। হলুদ, সিঁদুর লাল, কমলা ইত্যাদি রঙের ফুল বিশিষ্ট কৃষ্ণচূড়া গাছ দেখা যায়।
হলুদ ফুলের গাছকে আমাদের দেশে রাধাচূড়াও বলা হয়ে থাকে। এ প্রজাতি অনেক দেশেই বিলুপ্তির পথে। আমাদের দেশে কৃষ্ণচূড়ার ফুল ফোটার সময়কাল এপ্রিল থেকে জুন মাস।
সাধারণত বীজের মাধ্যমে এর বংশবিস্তার হয়ে থাকে। আবার অঙ্গজ প্রজননের মাধ্যমেও এর বংশবিস্তার করানো যায়। কিন্তু এক্ষেত্রে এর বৃদ্ধি অপেক্ষাকৃত ধীর হয়।
একটি কৃষ্ণচূড়া গাছ উচ্চতায় সর্বোচ্চ ১২ মিটার। কৃষ্ণচূড়ার পাপড়িগুলো প্রায় আট সেন্টিমিটারের মতো লম্বা হতে পারে। কৃষ্ণচূড়া সাধারণত শোভাবর্ধনকারী বৃক্ষ হিসেবে লাগানো হয়ে থাকে। তবে এর কিছু বিশেষ গুণাগুণও রয়েছে।
বায়ু থেকে নাইট্রোজেন সংবন্ধনে ও জমির উর্বরতা বৃদ্ধিতে এর ভূমিকা আছে। এছাড়া এটি ছায়া প্রদানকারী গাছ হিসেবেও ভূমিকা পালন করে। এর চারদিক প্রসারিত বিস্তৃত ডালপালা ও বিশেষভাবে ভাঁজ করা ফুলের পাপড়ি পরিপূর্ণ ছায়া দিয়ে আমাদের ক্লান্তি দূর করে থাকে।
ঝালকাঠি বন কর্মকর্তা জিয়া বাকলাই জানান, কৃষ্ণচূড়া গাছ যেমন প্রকৃতির শোভা, তেমনি পরিবেশেরও অন্যতম বন্ধু। এ গাছের যেমন রয়েছে সৌন্দর্য, তেমনি জ্বালানি কাঠসহ বিভিন্ন কাঠ সামগ্রী ব্যবহারের সুবিধা।
নদী বন্দর / জিকে