নন্দিত লেখক, চলচ্চিত্রকার ও নাট্যকার হুমায়ূন আহমেদের পঞ্চম মৃত্যুবার্ষিকী আজ। ক্যান্সারে আক্রান্ত হয়ে ২০১২ সালের এই দিনে যুক্তরাষ্ট্রের একটি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান নন্দিত কথা সাহিত্যিক হুমায়ূন আহমেদ।
দিবসটি উপলক্ষে তার পরিবারের পক্ষ থেকে গাজীপুরের নুহাশপল্লীতে বিভিন্ন অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়েছে। এ ছাড়াও প্রকাশক, ভক্ত, সুহূদ ও শুভাকাঙ্ক্ষীরা নুহাশপল্লীতে কথাশিল্পীকে শ্রদ্ধা জানাবেন।
হুমায়ূন ভক্তদের গড়া হিমু পরিবহন নামের সংগঠনের পক্ষ থেকে লেখকের মৃত্যুবার্ষিকীতে নেওয়া হয়েছে নানা কর্মসূচি। আজ সন্ধ্যায় রাজধানীর শিল্পকলা একাডেমির স্টুডিও থিয়েটার হলে হুমায়ূন আহমেদ রচিত নাটক ‘নদ্দিউ নতিম’ মঞ্চায়ন করবে ম্যাড থেটার।
বাংলা সাহিত্যের এই প্রবাদ পুরুষের জন্ম ১৯৪৮ সালের ১৩ নভেম্বর নেত্রকোনা জেলার কুতুবপুর গ্রামে। বাবার চাকরি সূত্রে তার শৈশব কেটেছে বাংলাদেশের বিভিন্ন জেলায়। দেখেছেন বহু মানুষ এবং তাদের জীবনানুভূতি। এর ফলেই হুমায়ূন আহমেদের লেখায় উঠে এসেছে বাঙালি মধ্যবিত্তের নানা সংকট, বিচিত্র জীবনযাপন আর হৃদয়ের টানাপড়েন।
২০১১ সালে তাঁর অন্ত্রে ক্যানসার ধরা পড়লে পরের বছরের মাঝামাঝি সময় যুক্তরাষ্ট্রের একটি হাসপাতালে অস্ত্রোপচার করা হয়। কিন্তু চিকিৎসকদের সর্বোচ্চ চেষ্টা সত্ত্বেও তিনি আর ফেরেননি। ২০১২ সালের ১৯ জুলাই শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন তিনি। যুক্তরাষ্ট্র থেকে মরদেহ ঢাকায় আনার পর ২৪ জুলাই গাজীপুরের পিরুজালী গ্রামে তার প্রিয় নুহাশপল্লীর লিচুতলায় চিরনিদ্রায় শায়িত করা হয় তাকে।
হুমায়ূন একাধারে ঔপন্যাসিক, ছোটগল্পকার, নাট্যকার ও চলচ্চিত্রকার। তার প্রকাশিত গ্রন্থের সংখ্যা প্রায় তিন শতাধিক। তার অন্যতম উপন্যাসগুলো হচ্ছে— নন্দিত নরকে, মেঘ বলেছে যাব যাব, আগুনের পরশমণি, আমরা কেউ বাসায় নেই, মধ্যাহ্ন, জোছনা ও জননীর গল্প, মাতাল হাওয়া ইত্যাদি। তার নির্মিত উল্লেখযোগ্য চলচ্চিত্রগুলো হচ্ছে-দুই দুয়ারী, শ্রাবণ মেঘের দিন, ঘেটুপুত্র কমলা ইত্যাদি। তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রসায়ন বিভাগের অধ্যাপক হিসেবে দীর্ঘকাল কর্মরত ছিলেন। পরে লেখালেখি এবং চলচ্চিত্র নির্মাণের ব্যস্ততায় তিনি অধ্যাপনা ছেড়ে দেন।
কোটি হৃদয়ের ভালোবাসায় সিক্ত হুমায়ূন আহমেদ পেয়েছেন বাংলা একাডেমি পুরস্কার, একুশে পদক, জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার, শিশু একাডেমি পুরস্কার, লেখক শিবির পুরস্কার ও মাইকেল মধুসূদন পদক।