নরসিংদীর রায়পুরার চরাঞ্চলে আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে দুই পক্ষের মধ্যে দফায় দফায় সংঘর্ষে তিনজন নিহত হয়েছেন। এছাড়া সংঘর্ষের ঘটনায় এ পর্যন্ত দুপক্ষের অন্তত অর্ধশত আহত হয়েছেন।
সোমবার (১৭ মে) সন্ধ্যা থেকে রায়পুরা উপজেলার পাড়াতলী ইউনিয়নের কাচারিকান্দী গ্রামে এ সংঘর্ষ শুরু হয়ে মঙ্গলবার (১৮ মে) দুপুর পর্যন্ত চলে।
আহতদের নরসিংদী সদর ও রায়পুরা হাসপাতালসহ বিভিন্ন বেসরকারি হাসপাতালে চিকিৎসা দেয়া হচ্ছে। সংঘর্ষের সময় বেশকিছু সংখ্যক বাড়িঘরে অগ্নিসংযোগ ও লুটপাটের ঘটনা ঘটেছে।
নিহতরা হলেন- কাচারিকান্দী গ্রামের হাবিবুর রহমান হবির ছেলে ইয়াসিন মিয়া (১৩), আশাব উদ্দিনের ছেলে শহীদ মিয়া (৩০) ও নূরু মিয়ার ছেলে শফিকুল ইসলাম (২৫)।
পুলিশ ও স্থানীয়রা জানান, দীর্ঘদিন ধরে আধিপত্য বিস্তার নিয়ে পাড়াতলী ইউপি সদস্য শাহ আলম ও সাবেক সদস্য ফজলুল হকের ছেলে শাহ আলমের বিরোধ চলছিল। এই জেরে সোমবার সন্ধ্যায় বৃষ্টি উপেক্ষা করে দুই পক্ষের সমর্থকেরা টেঁটা, বল্লম ও আগ্নেয়াস্ত্র নিয়ে সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়েন।
এতে গুলিবিদ্ধ হয়ে ইয়াসিন নামে এক কিশোরের মৃত্যু হয়। এ সময় কয়েকজন গুলিবিদ্ধসহ উভয় পক্ষের কমপক্ষে ২০ জন আহত হন। এতে রাতেই এলাকায় লুটপাট, বাড়িঘরে অগ্নিসংযোগ ও সংঘর্ষ ছড়িয়ে পড়ে দুই পক্ষ।
মঙ্গলবার (১৮ মে) সকালে আবারও দুই পক্ষের সংঘর্ষে শহীদ মিয়া ও শফিকুল ইসলাম নামে আরও দুইজন আহত হলে তাদের ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নবীনগর হাসপাতালে নেয়ার পথে মৃত্যু হয়। এসময় আহত হয়েছেন আরও ৩০ জন।
আহতদের নরসিংদী সদর ও রায়পুরা উপজেলা হাসপাতালসহ বিভিন্ন বেসরকারি হাসপাতালে চিকিৎসা দেয়া হচ্ছে। গ্রেপ্তার এড়াতে আহতদের বেশিরভাগ গোপনে বেসরকারি হাসপাতালে চিকিৎসা নিচ্ছেন বলে জানিয়েছেন স্থানীয়রা।
দুইদিনে চলমান সংঘর্ষের ঘটনায় তিনজন নিহত এবং অন্তত অর্ধশত আহত হলেও পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে হিমশিম খেতে হচ্ছে পুলিশকে। দুই পক্ষই দেশিয় অস্ত্রের পাশাপাশি আগ্নেয়াস্ত্র নিয়ে সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ছে এবং বাড়িঘরে আগুন দিচ্ছে। এতে এলাকার সাধারণ মানুষের মধ্যে আতংক ছড়িয়ে পড়েছে।
নরসিংদীর সহকারী পুলিশ সুপার (রায়পুরা সার্কেল) সত্যজিৎ কুমার ঘোষ ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, সংঘর্ষের ঘটনায় এ পর্যন্ত তিনজন নিহত হয়েছেন। মরদেহগুলো উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য নরসিংদী সদর হাসপাতাল মর্গে পাঠানো হচ্ছে।
এলাকায় অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে এবং বর্তমানে পরিস্থিতি পুলিশের নিয়ন্ত্রণে রয়েছে। এ পর্যন্ত ৬ জনকে আটক করা হয়েছে এবং অস্ত্র উদ্ধার করা হচ্ছে।
নদী বন্দর / পিকে