দৈনিক প্রথম আলোর জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক রোজিনা ইসলামকে সচিবালয়ে হেনস্তার পর মামলা এবং গ্রেফতারের ঘটনায় উদ্বেগ প্রকাশ করেছে জাতিসংঘ।
মঙ্গলবার (১৮ মে) জাতিসংঘের নিয়মিত ব্রিফিংয়ে সাংবাদিক রোজিনা ইসলামকে গ্রেফতার প্রসঙ্গে একজন সাংবাদিকের করা প্রশ্নের জবাবে সংস্থাটির মহাসচিব আন্তোনিও গুতারেসের মুখপাত্র স্টিফেন ডুজারিক এ উদ্বেগ জানান।
তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশে একজন সাংবাদিককে গ্রেফতারের খবর বিভিন্ন গণমাধ্যমে প্রকাশিত হয়েছে। বিষয়টি আমাদের নজরে এসেছে। এটি স্পষ্টভাবেই উদ্বেগজনক। আমরা তাকে গ্রেফতার ও পরবর্তী পদক্ষেপগুলো পর্যবেক্ষণ করছি।’
জাতিসংঘ মহাসচিবের মুখপাত্র বলেন, ‘সাংবাদিককে হেনস্তা ও গ্রেফতারের বিষয়টিতে আমাদের অবস্থান খুবই স্পষ্ট। সাংবাদিকদের কোনোভাবেই হয়রানি বা শারীরিক নির্যাতন করা যাবে না। তাদের জন্য মুক্ত ও স্বাধীনভাবে কাজের পরিবেশ নিশ্চিত করতে হবে। সেটা হোক বাংলাদেশে কিংবা পৃথিবীর অন্য যেকোনো জায়গায়।’
স্টিফেন ডুজারিক আরও বলেন, ‘বৈশ্বিক মহামারি করোনাভাইরাসের সময়ে বিশ্বজুড়ে সাংবাদিকরা যে ভূমিকা রাখছেন, তা আমরা সবাই পর্যবেক্ষণ করেছি। গণমাধ্যমকর্মীরা যেখানে, যে অবস্থায় কাজ করুক না কেন, তাদের কাজের ক্ষেত্র হতে হবে বাধাহীন।’
জানা গেছে, সোমবার (১৭ মে) বিকেল ৩টার দিকে রোজিনা ইসলাম পেশাগত দায়িত্ব পালনের জন্য সচিবালয়ে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ে যান। স্বাস্থ্য সচিব লোকমান হোসেন মিয়ার একান্ত সচিবের কক্ষে ফাইল থেকে নথি সরানোর অভিযোগে তাকে সেখানে আটকে রাখা হয় এবং তার মোবাইল ফোন কেড়ে নেয়া হয়। নিজের ওপর নির্যাতনেরও অভিযোগ তোলেন রোজিনা।
একপর্যায়ে সেখানে তিনি অসুস্থ হয়ে পড়েন। সাড়ে পাঁচ ঘণ্টা পর তাকে শাহবাগ পুলিশের কাছে হস্তান্তর করা হয়। এর মধ্যে ওই কক্ষে এক নারীর রোজিনার গলা চেপে ধরার ছবি ও ভিডিও ফুটেজ ভাইরাল হয়ে যায়। পুরো ঘটনায় সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে আলোচনার ঝড় তোলে।
রাতে রোজিনার বিরুদ্ধে শাহবাগ থানায় চুরি ও অফিসিয়াল সিক্রেটস আইনে মামলা করা হয়। সকালে রোজিনাকে আদালতে তুলে পাঁচদিনের রিমান্ড চায় পুলিশ। অন্যদিকে জামিন চান তার আইনজীবী। আদালত জামিন ও রিমান্ড নামঞ্জুর করে তাকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন।
নদী বন্দর / এমকে