করোনায় পর্যুদস্ত ভারতে জনগণকে টিকা নিতে আগ্রহী করে তোলার জন্য বিভিন্ন প্রচারণা চালাচ্ছে দেশটির সরকার। কিন্তু তারপরও কিছু কিছু জায়গায় মানুষকে কোনোভাবেই টিকা নিতে রাজি করানো যাচ্ছে না। এমনই এক ঘটনা ঘটেছে উত্তর প্রদেশে। টিকার ভয়ে সেখানকার এক গ্রামের বাসিন্দারা নদীতে ঝাঁপ দিয়েছে।
রোববার বিকেলে স্বাস্থ্যসেবা বিভাগের কর্মীরা বারাবাঙ্কি জেলার সিসোদা গ্রামে টিকা দিতে গেলে গ্রামের বেশ কিছু বাসিন্দা টিকা এড়াতে সরয়ু নদীতে ঝাঁপ দেন।
সেখানকার কৃষক শিশুপাল বলেন, ‘টিকা নিয়েও মানুষ মারা গেছে। আমি এমন লোকদের চিনি যাদের টিকা নিয়ে হাসপাতালে যেতে হয়েছে। মরেই যখন যাব তখন টিকা নিয়ে কী করব?’
ম্যাট্রিকুলেশন পাস করা শিশুপালের ধারণা করোনা টিকা ক্ষতিকর এবং এই ‘তথ্য’ তিনি অন্যদের মধ্যেও ছড়িয়েছেন।
এই গ্রামে আরও গুজব ছড়িয়েছে যে টিকা নিলে যৌন অক্ষমতা হবে। টিকা দিতে আসার সময় সবাই পালিয়ে যাওয়ার প্রধান কারণ এটিই।
সাব-ডিভিশনাল ম্যাজিস্ট্রেট রামনগর তেহসিল ও রাজিব কুমার শুক্লা বলেন, গ্রামের প্রায় দুইশো লোক টিকার ভয়ে পালিয়ে যায় এবং সরয়ু নদীর পাড়ে চলে আসে।
শুক্লা বলেন, তিনি গ্রামবাসীদের টিকার গুরুত্ব ও উপকারিতা বোঝানোর চেষ্টা করেন এবং টিকা নিয়ে ভুল ধারণাগুলো ভেঙ্গে দেয়ার চেষ্টা করেন। তার কথা শোনার পর মার ১৮ জন গ্রামবাসী টিকা নিয়েছেন।
গ্রামবাসীরা বলেন, তারা নদীতে ঝাঁপ দিয়েছেন কারণ কিছু লোক তাদের বলেছেন যে এটা টিকা নয়, বিষাক্ত ইনজেকশন।
নদীতে থাকা লোকদের ডাঙায় উঠিয়ে আনতে বেশ বেগ পেতে হয় ম্যাজিস্ট্রেটদের।
ওই অঞ্চলের কর্মকর্তা রাহুল ত্রিপাঠি বলেন, টিকার উপকারীতা সম্পর্কে জানাতে ও ভুল ধারণাগুলো দূর করতে তারা স্থানীয় লোকজনের মাঝে যথাসাধ্য চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন।
উত্তর প্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথ টিকার জন্য পুরস্কার ঘোষণা করেছেন। ‘আমার গ্রাম, করোনামুক্ত গ্রাম’ শিরোনামে প্রচারণা চালাচ্ছেন তিনি।
নদী বন্দর / এমকে